উচ্ছেদ বলে নির্বিচারে ঘরবাড়ি ভাঙচুর-লুটপাট!
বরগুনা সদর উপজেলার খেজুরতলা গ্রামের সোনালী পাড়া এলাকায় আদালতের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে নির্বিচারে ঘর বাড়িতে ভাঙচুর ও লুটপাটের অভিযোগ উঠেছে। মঙ্গলবার (১৪ মার্চ) দুপুরে এর প্রতিবাদ ও ক্ষতিপূরণ দাবি করে বরগুনা পৌর সুপার মার্কেটের সামনে ঘণ্টাব্যাপী মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করছে ক্ষতিগ্রস্ত বাসিন্দারা।
বিবাদী রহিমা বেগম বলেন, সাড়ে আট শতাংশ জমির উপর মাত্র ৬টি ঘর উচ্ছেদে আদালতের আদেশ থাকলেও নাজির ফারুক আহাম্মেদের নেতৃত্বে পুলিশ ও দুই শতাধিক দুর্বৃত্ত নির্বিচারে অর্ধশত ঘর ভেঙে ফেলে। দুপুরে স্টে অর্ডার হয় এবং নাজির ফারুক পুলিশ নিয়ে ফিরে গেলেও দুর্বৃত্তরা সন্ধ্যা পর্যন্ত তাণ্ডব চালিয়ে শতাধিক বসত ঘর ভেঙে মাটির সাথে মিশিয়ে দেয়।
তারা বলেন, ইমারতগুলোর পিলারগুলো এমন ভাবে ভেঙেছে যে সেগুলো সম্পূর্ণ ভেঙে ফেলতে হবে। শুধু তাই নয় টাকা পয়সা, স্বর্ণালংকার ও মূল্যবান বিভিন্ন জিনিসপত্র লুট করে নিয়ে গেছে তারা। পাশাপাশি লাঞ্ছিত করেছে বৃদ্ধ ও শিশুদের। মায়ের কোল থেকে টেনে নিয়ে শিশুকে পর্যন্ত ছুঁড়ে মেরেছে।
বিবাদী রহিমা বেগম আরও বলেন, আমরা সব হারিয়ে এখন দিশেহারা। আমাদের এখন মাথা গোঁজার ঠাঁই পর্যন্ত নেই। আমরা আদালতের শরণাপন্ন হয়েছি। ১২ জন আসামির মধ্যে ১ জনকে পুলিশ ইতোমধ্যে গ্রেপ্তার করেছে। বাকীদেরকেও গ্রেপ্তার করে বিচারের আওতায় আনার দাবি জানাচ্ছি।
এর আগে গত ৭ মার্চ বরগুনা সদর উপজেলার গৌরীচন্না ইউনিয়নের সোনালিপাড়া এলাকার ঘটনা ঘটে। ৯ মার্চ ওই এলাকার বাসিন্দা গোলাম মোস্তফা বাদী হয়ে চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটে আদালতে ১২ জন আসামি করে মামলা করে। গ্রেফতার হওয়া সোহাগ মামলার ১নং আসামি।
মামলায় উল্লেখ করা হয়, খেজুরতলা গ্রামে ক্রয়কৃত জমিতে শতাধিক ঘরবাড়ি তৈরি করে বসবাস করে আসছিল তিন শতাধিক পরিবার। কিন্তু আবু জাফর গং কতৃক করা একটি দেওয়ানী মামলায় রহিমা বেগম গংদের বিরুদ্ধে একতরফা রায় হয়।
আদালতের রায়ের প্রেক্ষিতে দখল বুঝিয়ে দিতে উচ্ছেদ অভিযানের নির্দেশ দেয় বরগুনার সহকারি জজ আদালত। আদালতের নির্দেশে বরগুনা জেলা ও দায়রা জজ আদালতের নাজির ফারুক আহম্মেদের নেতৃত্বে পুলিশ ও মামলার বাদী পক্ষের শতাধিক উচ্ছেদকর্মী উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করে।
তবে উচ্ছেদ অভিযান চলাকালেই ক্ষতিগ্রস্তদের আবেদনের প্রেক্ষিতে বিজ্ঞ আদালত বেলা ২ টায় উচ্ছেদ অভিযান স্থগিত করার আদেশ দেন। আদালতের নির্দেশ পেয়ে নাজির ফারুক আহম্মেদ কার্যক্রম বন্ধ ঘোষণা করে চলে এলেও বাদী পক্ষ দুর্বৃত্তদের সহযোগিতায় সন্ধ্যা পর্যন্ত ব্যাপক ভাঙচুর করার পাশাপাশি স্বর্ণালংকার, টাকা ও মূল্যবান জিনিসপত্র লুটে নেয়।
এএজেড