শীতে বিপজ্জনক হতে পারে ঢাকা-বরিশাল মহাসড়ক
পদ্মা সেতু চালুর পরপরই ঢাকা-বরিশাল-কুয়াকাটা মহাসড়কে যানবাহন চলাচল বেড়েই চলছে। তবে যানবাহন বাড়লেও সেই অনুযায়ী সড়ক প্রশস্ত বা ফোর-লেন করার কোনো কার্যক্রম চোখে পড়েনি। এদিকে চলতি মাস থেকেই শীত পড়তে শুরু করেছে। এ সময় মহাসড়কটি ফোর-লেন এবং প্রশস্ত না হওয়ায় কুয়াশায় বিপজ্জনক হতে পারে বলে মনে করছেন পণ্যবাহী, যাত্রীবাহী পরিবহনগুলোর ড্রাইভার ও যাত্রীরা। তাই মহাসড়ক নিরাপদ করতে ছোট যানবাহন চলাচল বন্ধ ও সড়ক প্রশস্ত করার দাবি জানান তারা। অন্যদিকে ছোট যানবাহন চালকদের দাবি, তাদের জন্য আলাদা সড়ক নির্মাণ করে দেওয়া হোক।
এই মহাসড়কটি ভাঙা হয়ে গ্রামীণ জনপদের মধ্যে দিয়ে যাওয়ায় বিপদ বেশি হতে পারে বলে আশঙ্কা রয়েছে। কারণ শীতের তীব্রতা বাড়ার পাশাপাশি কুয়াশার তীব্রতায় ঝাপসা হয়ে পড়ে রাস্তাঘাট। ভোর গড়িয়ে বেলা ১১টা বাজলেও কুয়াশা কাটে না। তাই ঘন কুয়াশায় দেশের দক্ষিণাঞ্চলের এই ব্যস্ততম ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কে দুর্ঘটনা দ্বিগুণ বাড়তে পারে বলে মনে করেন যাত্রীরা।
গ্রিন লাইন পরিবহনের চালক মো. হাবিব ঢাকাপ্রকাশ-কে বলেন, ‘ঢাকা-বরিশাল রোডটা সিঙ্গেল। সামনে যেহেতু শীত এই সময় কুয়াশা পড়লে ১০ হাত দূরেই দেখতে পাওয়া যায় না। গাড়ি ঝুঁকি নিয়া চালাইতে হয়। সড়কগুলা ফোরলেন করা দরকার। তাহলে এই অঞ্চলের মানুষের মধ্যে স্বস্তি ফিরে আসবে। আমরা অনায়াসে নিরাপদে গাড়ি চালাইতে পারব। দুর্ঘটনাও কমবে।’
ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা চাকলাদার পরিবহনের চালক মো. আবদুল গফুর ঢাকাপ্রকাশ-কে বলেন, ‘শীতকালে কুয়াশা পড়লে গাড়ি চালানো মুশকিল হইয়া পরে। ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কের দুইপাশে আরো বাড়ানোর জন্য দাবি জানাই। না লে দুর্ঘটনা আরো বাড়বেই।’
ট্রাকচালক মো. সবুজ জানান, শীতকালে কুয়াশা পরলে রাতে হেড লাইট জ্বালিয়েও ১০-১৫ হাত দূরের কিছু দেখা যায় না। মহাসড়কের ফাঁকা জায়গায় কুয়াশা বেশি থাকে। এসময় আবার পেছন থেকে অন্য গাড়ি ধাক্কা দেওয়ার ভয় থাকে। এই মহাসড়ক আরো বড় করার দাবী জানান তিনি। তাহলে গাড়ি চালাতে সুবিধা হবে। সাধারণ মানুষেরও ভালো হবে। দুর্ঘটনা কমবে এবং সবার যাত্রা হইবে নিরাপদ বলে মনে করেন তিনি।
এদিকে ব্যাটারি চালিত অটোচালক মো. আবদুল কুদ্দুস অভিযোগ করে ঢাকাপ্রকাশ-কে বলেন, ‘আমরা শহরেও চালাইতে পারি না। আর মহাসড়কেও না। আমাগো একটা পরিবার আছে। গাড়ি চালাইয়া আয় করি। আমাগো একটা উপায় কইরা দেউক। আলাদা রাস্তা বানাইয়া দিলে ভালো হয়। আমাগো হাইওয়েতে চালাইতে ভয় লাগে। কহন কোন গাড়ি চাপাইয়া দিল-কে জানে? আমাগো হগল জায়গায় বিপদ।’
এ ব্যাপারে গৌরনদী হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ বেল্লাল হোসেন ঢাকাপ্রকাশ-কে বলেন, শীতকালে সন্ধ্যার পর থেকে পরদিন সকাল ৯টা পর্যন্ত বেশ ঝুঁকি থাকে ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কে। কারণ এ সময় কুয়াশা পড়তে শুরু করে। তাই দুর্ঘটনারোধে ফগ লাইট, হেড লাইট জ্বালিয়ে যাত্রীবাহী বাস, পণ্যবাহী ট্রাকসহ সব ধরনের যানবাহন গুলোকে ধীর গতিতে চলাচল করতে হবে। এ ছাড়াও সড়কের বিভিন্ন স্থানে যে চিহ্ন এবং সিগন্যাল দেওয়া আছে সেগুলো ড্রাইভারদের মেনে চলতে হবে। তবে ভোর বেলায় সড়ক থেকে সাধারণ মানুষ কাজের জন্য বের হয়। তারাও যেন রাস্তা পারাপারের সময় সাবধানতা অবলম্বন করেন। তবে সড়কে দুর্ঘটনা কম হবে এমনটাই মনে করেন তিনি।
এসআইএইচ