বিয়ের পূর্বে পাত্রী দেখে টাকা দেওয়া জায়েজ কী?
ছবি সংগৃহিত
বিয়ে মহান আল্লাহর এক বিশেষ নেয়ামত ও রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর গুরুত্বপূর্ণ একটি সুন্নত। ঈমানের পূর্ণতার সহায়ক। যুবক-যুবতীর চরিত্র গঠনের অন্যতম উপাদান এবং তা অনেক সাওয়াবেরও বটে। ইসলামি শরিয়তে বিয়ের গুরুত্ব অপরিসীম।
পবিত্র এই বন্ধনের প্রথম সূত্র হলো পাত্র-পাত্রী পরস্পরকে দেখা। হজরত জাবের ইবনে আব্দুল্লাহ (রা.) রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘যদি কেউ কোনো মহিলাকে বিয়ের প্রস্তাব দিতে চায়, তাহলে সে যেন যথাসম্ভব ওই মহিলাকে দেখে নেয়।’ (সুনানে আবু দাউদ: ২০৮২)
আমাদের দেশে একটি প্রচলিত ব্যাপার হলো পাত্র কিংবা পাত্রী দেখতে গিয়ে নগদ অর্থ হাদিয়া হিসেবে দেয়া। এই ব্যাপারে শরিয়তের বিধান হলো- পাত্র-পাত্রী পরস্পরের দেখাদেখির পর পাত্রের পক্ষ থেকে পাত্রীকে কিংবা পাত্রীর পক্ষ থেকে পাত্রকে হাদিয়া দেয়া জায়েজ আছে। (কিতাবুন নাওয়াজেল: ৮/২৮)
এটি এক ধরণের সামাজিকতাও বটে। যদি কোনো অঞ্চলে পাত্রীকে টাকা দেয়ার প্রচলন থাকে, তাহলে টাকা দেয়া যায়। আবার কারো মধ্যে বইপত্রের প্রতি আগ্রহ থাকে, তখন তাকে বইপত্র বিশেষ করে ইসলামি বইপত্র উপহার হিসেবে দেয়া যায়। তদ্রূপ কারো বাড়িতে যাওয়ার সময় মিষ্টিজাতীয় কিছু নিয়ে গেলেন বা অন্য উপহারসামগ্রী নিয়ে গেলেন-এতে হারামের কিছু নেই, বরং এসবকিছু উপহার হিসেবে ধর্তব্য হবে। আর উপহার-উপঢৌকন ইসলামে একটি পছন্দের বিষয়।
হজরত আবু হুরায়রা (রা.) হতে বর্ণিত, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেছেন- تَهَادُوا تَحَابُّوا ‘তোমরা উপহার বিনিময় করো, পারস্পরিক সম্প্রীতি লাভ করবে।’ (বুখারি, আল-আদাবুল মুফরাদ: ৫৯৪, আবু ইয়ালা: ৬১৪৮, সহিহুল জামে: ৩০০৪)
উল্লেখ্য, ইসলামে বিয়ের আগে পাত্রীকে গাইরে মাহরামদের মধ্যে শুধু পাত্রই দেখতে পারবে। পাত্রের বাব-ভাই, চাচা-মামা, দুলাভাই কিংবা বন্ধু কেউ সঙ্গে থাকতে পারবে না। পাত্রীর শুধু কবজি পর্যন্ত হাত, টাখনু পর্যন্ত পা ও মুখমণ্ডল দেখাই পাত্রের জন্য বৈধ। এছাড়া অন্যকোনো অঙ্গ আবরণ ছাড়া দেখতে পারবে না। এছাড়াও নির্জনে পাত্র-পাত্রীর একত্র হওয়া বৈধ নয়। তবে, পাত্রের বাড়ির মহিলারা পাত্রীকে দেখতে পারবে। (আল-মাওসুআতুল ফিকহিয়্যাহ: ২২/১৭; সুরা নিসা: ২৩, তাফসিরে মাজহারি: ২/২৫৪)