শীত থেকে বাঁচতে টাখনুর নিচে কাপড় পরা যাবে?
ছবি সংগৃহিত
পোশাক পরার ক্ষেত্রে অনেকে প্যান্ট, পায়জামা লুঙ্গি টাখনুর নিচে পরে থাকেন, যা ইসলামের দৃষ্টিতে নাজায়েয। এ বিষয়ে কঠোর হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম। হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (স.) বলেছেন, ‘লুঙ্গির যে অংশ টাখনুর নিচে থাকবে তা জাহান্নামে যাবে।’ (বুখারি, হাদিস, ৫৭৮৭) জাহান্নামে গেলে শরীরের কোনো অংশবিশেষ যাবে না; বরং সমগ্র দেহই যাবে।
টাখনুর নিচে কাপড় পরার বিষয়ে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আরো বলেছেন, “যে ব্যক্তি অহংকার বশে তার লুঙ্গি মাটির সাথে টেনে নিয়ে বেড়াবে, কেয়ামত দিবসে আল্লাহ তায়ালা তার প্রতি দৃষ্টি দিবেন না।’ (সহীহ বুখারী, হাদীস, ৩৬৬৫)
আমাদের অনেকের মনে প্রশ্ন জাগতে পারে, আমরা টাখনুর নিচে কাপড় পরলে ধর্মের কী অসুবিধা? তার সরল উত্তর হলো, অসুবিধা ধর্মের নয়, অসুবিধা আমাদের নিজেদের। কারণ দুনিয়াতেও টাখনুর নিচে কাপড় পরার অপকারিতা কম নয়। পুরুষের পায়ের টাখনুতে থাকে টেস্টোস্টেরন নামক যৌন হরমোন, যা সঠিকভাবে কাজ করার জন্য প্রাকৃতিক আলো-বাতাসের প্রয়োজন। টাখনুকে ঢেকে রাখলে টেস্টোস্টেরন হরমোন শুকিয়ে যায়। যার প্রভাবে শরীরে অনেক রকম সমস্যা দেখা দেয়। শুক্রাণু কমে যায়। ফলে সহজে বাচ্চা হয় না। এ সমস্যাটি আমাদের সমাজে মহামারি আকার ধারণ করছে। তা ছাড়া টেস্টোস্টেরনের অভাব মস্তিষ্ক ‘ঘোলাটে’ করে দেয়। এতে মনোযোগ নষ্ট হয়। স্মৃতিশক্তিও কমে আসে ধীরে ধীরে।
অনেকে ইসলামের বিধান মেনে টাখনুর নিচে কাপড় পড়া থেকে বিরত থাকেন। তবে শীতের সময় ঠাণ্ডা থেকে বাঁচতে টাখনুর নিচে কাপড় পরতে চান। এবিষয়ে আলেমদের মতামত হলো- শীতের কারণেও টাখনুর নিচে কাপড় পরা যাবে না। কারণ এর সমাধান জায়েজ পদ্ধতিতে করা সম্ভব। সেটি হল, মোটা মোজা বা চামড়ার মোজা পরিধান করা। যেহেতু ঠাণ্ডা থেকে বাঁচার বিকল্প ব্যবস্থা আছে, সেখানে নিষিদ্ধ কাজ করার কোন প্রয়োজন নেই।
তবে যদি কোথাও বিকল্প ব্যবস্থা না থাকে, আর ঠান্ডার কারণে পা জমে যাওয়া বা মারাত্মক অসুস্থ্য হয়ে যাওয়ার ভয় থাকে, তাহলে টাখনুর নিচে জামা পরিধান জায়েজ হবে ইসলামি শরীয়তের এই মূলনীতির ভিত্তিতে, যেখানে বলা হয়েছ, তীব্র প্রয়োজন নিষিদ্ধ বস্তু হালাল করে দেয়। তবে যখনি তীব্র প্রয়োজন দূর হয়ে যাবে, সঙ্গেসঙ্গে আবার তা হারাম হয়ে যাবে এবং আবারও কাপড় টাখনুর ওপর উঠাতে হবে। (শরহু কাওয়ায়িদিল ফিক্বহিয়্যাহ লিজযারক্বা, কায়দা নং-২০)