আম বয়ানের মধ্য দিয়ে প্রথম পর্বের ইজতেমা শুরু
ধর্মীয় ভাবগম্ভীর পরিবেশে আম বয়ানের মধ্য দিয়ে টঙ্গীর তুরাগ নদের তীরে শুরু হয়েছে তাবলীগ জামাতের তিন দিনব্যাপী বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্ব।
শুক্রবার (১৩ জানুয়ারি) ইজতেমার মাঠে বয়ান করবেন ফজরের পর মাওলানা জিয়াউল হক রায়বেন্ড, মুআল্লিমিনদের সঙ্গে মোজাকারা মাওলানা জিয়াউল হক, বাদ জুমা বয়ান করবেন মাওলানা ইসমাইল গুদরাহ, বাদ আসর বয়ান দেবেন মাওলানা যুবাইর আহমদ, বাদ মাগরিব বয়ান দেবেন মাওলানা আহমদ লাট, বাংলা অনুবাদ করবেন মাওলানা ওমর ফারুক।
বিশ্ব ইজতেমাকে ঘিরে টঙ্গী ও আশপাশের এলাকায় ধর্মীয় উৎসবের আমেজ বিরাজ করছে। শুক্রবার বাদ ফজর থেকে আম বয়ানের মধ্য দিয়ে শুরু হচ্ছে ইজতেমার প্রথম পর্ব। এরই মধ্যে টঙ্গীর তুরাগ তীরে মুসল্লিদের ঢল নেমেছে। রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশ থেকে মুসল্লিরা আসছেন বিশ্ব ইজতেমা মাঠে। বিদেশিরাও এসেছেন। শীত উপেক্ষা করে চটের ছাউনির নিচে অবস্থান নিয়েছেন তারা।এবার ইজতেমার মাঠকে ৯১টি খিত্তায় ভাগ করা হয়েছে। বিভিন্ন জেলার মুসল্লিরা তাদের নিজ নিজ জেলার খিত্তায় অবস্থান নিচ্ছেন। ১৬০ একর খোলা ময়দানে বাঁশের খুঁটির উপর পাটের চট দিয়ে টানানো হয়েছে বিশাল প্যান্ডেল। তবে বিদেশি মেহমানদের জন্য টিন দিয়ে করা হয়েছে আবাসস্থল।
দেশ-বিদেশের শত শত মুসল্লি ইতোমধ্যে ইজতেমা ময়দানে অবস্থান নিয়েছেন। বিশ্বব্যাপী করোনা মহামারির কারণে গত দুই বছর বিশ্ব ইজতেমা অনুষ্ঠিত হয়নি। বিশ্ব ইজতেমায় আগত ধর্মপ্রাণ মুসল্লিদের শুভেচ্ছা এবং ইজতেমার সাফল্য কামনা করে রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণী দিয়েছেন।
রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ বাণীতে মুসল্লিদের স্বাগত জানিয়ে বলেন, ইজতেমা ইসলামের সুমহান আদর্শ জানা, বুঝা ও আমলের পথ সুগম করবে। ইসলাম শান্তি ও মানবতার ধর্ম। ইসলামের সুমহান আদর্শ ও আকিদাকে অনুসরণের পাশাপাশি এর প্রচার ও প্রসারের লক্ষ্যে বিশ্ব ইজতেমায় বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে মুসল্লিদের অংশগ্রহণ এক মহতী উদ্যোগ।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার বাণীতে বলেন, ইজতেমা বিশ্বের নানা প্রান্তের মুসলমানদের মধ্যে পারস্পরিক ঐক্য, সম্প্রীতি, সৌহার্দ্যের এক অপূর্ব মিলনক্ষেত্র, যা ইসলামী সমাজ, শৃঙ্খলা, ভ্রাতৃত্ব ও মহানুভবতার এক অতুলনীয় দৃষ্টান্ত।
তিনি বলেন, ‘আবহমানকাল ধরে আমাদের লালিত অসাম্প্রদায়িক চেতনা, অকৃত্রিম সরলতা ও অতিথি পরায়ণতা এবং সহিষ্ণুতার আলোকবার্তা ইজতেমায় আগত বিদেশি মেহমানদের মাধ্যমে বিশ্ব দরবারে পৌঁছে যাবে।’
১৯৬৭ সাল থেকে প্রতি বছর রাজধানী ঢাকার উপকণ্ঠে টঙ্গীর তুরাগ নদীর তীরে মুসলমানদের অন্যতম বৃহৎ ধর্মীয় সমাবেশ ইসলামের মর্মবাণী প্রচার ও প্রসারের ক্ষেত্রে তাৎপর্যপূর্ণ অবদান রেখে চলেছে। এ মহান ধর্মীয় সমাবেশ বিশ্ব শান্তি প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে অনন্য ভূমিকা রাখবে। বাংলাদেশ ও বিশ্বের সর্বস্তরের মানুষ ও মুসলিম উম্মাহর ঐক্য, সংহতি ও ভ্রাতৃত্বের বন্ধনকে আরও সুদৃঢ় করবে। আগামী ১৫ জানুয়ারি প্রথম প্রহরে আখেরি মুনাজাতের মধ্য দিয়ে প্রথম পর্বের বিশ্ব ইজতেমা শেষ হবে। চার দিন বিরতির পর আগামী ২০ জানুয়ারি দ্বিতীয় পর্বের বিশ্ব ইজতেমা শুরু হবে। আগামী ২২ জানুয়ারি প্রথম প্রহরে আখেরি মুনাজাতের মধ্য দিয়ে দ্বিতীয় পর্বের বিশ্ব ইজতেমার সমাপ্তি হবে।
এসএন