সোমবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৫ | ১৫ বৈশাখ ১৪৩২
Dhaka Prokash

মুফতী শাঈখ মুহাম্মাদ উছমান গনী

জুমার দিনের ফজিলত ও আমল

জুমা শব্দটি আরবি জমা শব্দ থেকে উৎপক্তি। জমা অর্থ হলো একত্রিত হওয়া বা একত্র করা। জমা শব্দের আরেক অর্থ হলো বহু জুমুআহ মানে হলো একত্রিত হওয়ার স্থান বা সময়। ইসলামে শুক্রবারকে ইয়াওমুল জুমুআহ বা জুমা দিবস বলা হয়। জুমার দিনে মুসলিমরা নির্দিষ্ট মসজিদে একত্রিত হন। শুক্রবারে জুমা অনুষ্ঠিত হয় বলে শুক্রবারকে জুমাবার বলা হয়। যেই মসজিদে জুমা অনুষ্ঠিত হয় তাকে মসজিদুল জামে তথা জামে মসজিদ বা জুমা মসজিদ বলা হয়। যে সকল মসজিদে জুমা অনুষ্ঠিত হয় না, সেগুলোকে পাঞ্জেগানা মসজিদ বা ওয়াক্তিয়া মসজিদ বলা হয়। জুমা শব্দটির সাথে জমাআহ বা জমাআত শব্দের স্পর্ক রয়েছে; কারণ জমাআত ছাড়া জুমা হয় না।


কুরআন মজিদে সূরা জুমা নামে একটি সূরা বা অধ্যায় রয়েছে। এতে বলা হয়েছে: “হে মুমিনগণ! জুমুআর দিনে যখন নামাজের জন্য আজান দেয়া হয়, তখন তোমরা আল্লাহর স্মরণ পানে ত্বরা করো (দ্রুত দৌড়াও) এবং বেচাকেনা বন্ধ করো। এটা তোমাদের জন্যে উত্তম যদি তোমরা বুঝো। অতঃপর নামাজ সমাপ্ত হলে তোমরা পৃথিবীতে ছড়িয়ে পড় এবং আল্লাহর অনুগ্রহ তালাশ করো ও আল্লাহকে অধিক স্মরণ করো, যাতে তোমরা সফলকাম হও।” (সূরা৬২ জুমুআহ, আয়াত: ৯-১)।

জুমার দিনের তাৎপর্য:

তাফসীরবিদগণ বলেন, সূরা জুমার পূর্বের সূরার নাম হলো সূরা ‘সফ’। সফ অর্থ কাতার বা সারি। জুমার নামাজ সারিবদ্ধভাবে আদায় করা হয় এবং এতে ঐক্য ও শৃঙ্খলা সৃষ্টি হয় এতে এই ইঙ্গিত রয়েছে। সূরা জুমার পরের সূরা হলো সূরা ‘মুনাফিক‚ন’। এতে এই ইঙ্গিত বিদ্যমান যে, জুমার তরক করা মুনাফিকের লক্ষণ। জুমার নামাজে প্রথম রাকআতে সূরা জুমা ও দ্বিতীয় রাকআতে সূরা মুনাফিক‚ন পড়া সুন্নাত।

হজরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) বর্ণনা করেন, নবী কারীম সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন: ‘যে ব্যক্তি বিনা কারণে জুমা পরিত্যাগ করলো, তাকে মুনাফি হিসেবে তালিকাভুক্ত ও লিপিবদ্ধ করা হয়।’ (ইমাম শাফিয়ী, মিশকাত: ১২১, ফয়জুল কালাম: ৪৬৮, পৃষ্ঠা: ৩৩৩)।

হজরত উমর (রা.) ও হজরত আবু হুরায়রা (রা.) বর্ণনা করেন, আমরা শুনেছি রসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন মিম্বরে দাঁড়িয়ে বলেছেন: ‘যারা কয়েকটি জুমা ধারাবাহিবভাবে পরিত্যাগ করবে, আল্লাহ তাদের তাদের অন্তরে সীল মোহর করে দিবেন; অতঃপর তারা গাফিলদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে যাবে। (মুসলিম শরীফ)। হজরত আবু জাআদ (রা.) বর্ণনা করেন, রসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন: যে ব্যক্তি অবজ্ঞা বা অবহেলা করে তিন জুমুআহ পরিত্যাগ করলো, আল্লাহ তার অন্তরে সীল মোহর করে দিবেন। (তিরমিযী, নাসায়ী, আবু দাউদ ও ইবনে মাজাহ)।

মসজিদে নিরবতা প্রসঙ্গ:

হজরত মুআজ ইবনে আনাস জুহানী (র.) বর্ণনা করেন, রসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন: ‘যে ব্যক্তি জুমুআর দিনে মানুষের ঘাঁড়ের উপর দিয়ে সামনে যাওয়ার চেষ্টা করলো, কিয়ামতের দিন তাকে জাহান্নামের পুল বানানো হবে। (তিরমিযী, মিশকাত: ১২২, ফয়জুল কালাম: ৪৭৩, পৃষ্ঠা: ৩৩৬)। হজরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) বর্ণনা করেন, রসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন: ‘জুমুআর দিনে ইমামের খুৎবাহ প্রদানের সময় যে কথা বললো, সে যেন গাধার মতো যে বোঝা উঠায়। যে তাকে বললো চুপ করো, তারও জুমুআহ নেই।’ (মুসনাদে আহমাদ, মিশকাত: ১২৩, ফয়জুল কালাম: ১৭৪, পৃষ্ঠা: ৩৩৬-৩৩৭)। হজরত আবু হুরায়রা (রা.) বর্ণনা করেন, রসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন: ‘জুমুআর দিনে ইমাম খুৎবাহ দেওয়ার সময় যখন তুমি তোমার ভাইকে বললে, চুপ করো; তখন তুমিও বেহুদা কথা বললে।’ (বুখারী ও মুসলিম, মিশকাত: ১২২/ ফয়জুল কালাম: ৪৭১, পৃষ্ঠা: ৩৩৫)।

জুমার নামাজের গুরুত্ব ও ফজিলত:

‘হজরত তারেক ইবনে শিহাব (রা.) বর্ণনা করেন, রসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন: ‘জুমা জমাতের সাথে আদায় করা প্রত্যেক মুসলমানের ফরজ কর্তব্য; চার প্রকার লোক ছাড়া। কৃতদাস, নারী, শিশু ও অসুস্থ ব্যক্তি।’ (আবু দাউদ)। হজরত সালমান (রা.) বর্ণনা করেন, রসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন: ‘জুমার দিনে যে গোসল করলো, সাধ্য মতো পবিত্রতা অর্জন করলো, তেল ব্যবহার করলো, সুগন্ধি ব্যবহার কলো এবং মজিদে গিয়ে কাউকে না ডিঙ্গিয়ে বসলো, নিরবে ইমামের খুৎবাহ শুনলো, অতঃপর নির্ধারিত নামাজ আদায় করলো; আল্লাহ তাআলা তার দুই জুমুআর মধ্যবর্তী গুনাহসমূহ মাফ করে দিবেন।’ (বুখারী শরীফ)। হজরত আবু হুরায়রা (রা.) বর্ণনা করেন, রসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন: ‘যে ব্যক্তি জুমুআর দিনে ভালোভাবে অজু করলো, অতঃপর জুমায় আসলো, মনযোগ দিয়ে খুৎবাহ শুনলো ও চুপচাপ থাকলো, তার এক জুমুআহ থেকে আরেক জুমাহ পর্যন্ত
গুনাহসমূহ ক্ষমা করা হবে, অধিকন্তু আরো তিন দিনের। আর যে খুৎকার সময় অকারণ নড়াচড়া করলো, সেও কথা বললো। (মুসলিম, মিশকাত: ১২২, ফয়জুল কালাম: ৪৭২, পৃষ্ঠা: ৩৩৬)।

জুমার দিনে প্রতি কদমে এক বছরের নামাজ ও রোজার সওয়াব:

হজরত আউস ইবনে আউস (রা.) বর্ণনা করেন, রসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন: যে ব্যক্তি জুমার দিন জামা কাপড় ধূয়ে গোসল করে, সকাল সকাল মসজিদে গেলো, পায়ে হেঁটে মসজিদে গমনাগমন করলোবাহনে আরোহন করলো না, ইমামের নিকটে বসলো, মনযোগ দিয়ে খুৎবাহ শুনলো, অযথা কাজ করলো না, তার প্রতিটি পদক্ষেপে এক বছরের রোজা ও এক বছরের নামাজের সওয়াব প্রাপ্ত হবে।’ (তিরমিযী, নাসায়ী, আবূ দাঊদ, ইবনে মাজাহ; মিশকাত: ১২২/ ফয়ুল কালাম: ১৭০, পৃষ্ঠা: ৩৩৪-৩৩৫)।

জুমাহ ও খুৎবাহ:

জুমার অন্যতম প্রধান বিষয় হলো খুৎবাহ বা ভাষণ। হাদীস শরীফে আছে, হজরত জাবির ইবনে সামুরা (রা.) বর্ণনা করেন, রসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম দুটি খুৎবাহ দিতেন, দুই খুৎবার মাঝে বসতেন; খুৎবাহ ও নামাজ উভয়ই হতো সমান। (মুসলিম শরীফ)। প্রথম যুগে জুমুআর নামাজের পরে খুৎবাহ দেওয়া হতো। একদা নবীজি (স.) খুৎবাহ দিচ্ছিলেন এমন সময় বাণিজ্য কাফেলা আসলে অনেকে উঠে চলে যান। ৭ জন মহিলাসহ ১৯ জন বসে থাকেন, এই ১৯ জনের মধ্যে আশারা মুবাশশারা বা ১০ জন বেহেশতের সুসংবাদ প্রাপ্তর ছিলেন। তখন সূরা জুমুআহ এর শেষ আয়াত নাজিল হয়। “তারা যখন কোন ব্যবসায়ের সুযোগ অথবা ক্রীড়াকৌতুক দেখে তখন আপনাকে দাঁড়ানো অবস্থায় রেখে তারা সেদিকে ছুটে যায়। বলুন, আল্লাহর কাছে যা আছে, তা ক্রীড়াকৌতুক ও ব্যবসায় অপেক্ষা উৎকৃষ্ট। আল্লাহ সর্বোত্তম রিযিকদাতা।” (সূরা-৬২ জুমুআহ, রুক‚: ২, আয়াত: ১১)। এর পর থেকে নবীজি (স.) খুৎবাহ পূর্বেই প্রদান করেন। (তাফসীরে জালালাঈন ও মাআরিফুল কুরআন)।

জুমার দিনের নামাজসমূহ:

জুমার মূল নামায ২ রাকআত। জুমার দিনে জুহর ওয়াক্তে জুহরের নামাজের পরিবর্তে দুই রাকআত জুমার নামাজ আদায় করা ফরজ। এর পূর্বে ৪ রাকআত (কাবলাল জুমুআহ) ও পরে ৪ রাকআত (বাদাল জুমুআহ) পড়া সুন্নাত। হজরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) বর্ণনা করেন, রসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম জুমার পূর্বে (কাবলাল জুমুআহ) চার রাকাত নামাজ আদায় করতেন এবং জুমুআর পরে (বাদাল জুমুআহ) চার রাকআত নামাজ আদায় করতেন। (তাবরানী/আলফিয়াহ: ৪৩০)। হজরত আবু হুরায়রা (রা.) বর্ণনা করেন, রসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন: ‘তোমরা যখন জুমুআর নামাজ আদায় করবে, তার পরে (বাদাল জুমুআহ) চার রাকআত নামাজ আদায় করবে। (মুসলিম শরীফ/ আলফিয়াহ, পৃষ্ঠা: ১০০-১০২)। অজুর সাথে সম্পৃক্ত ২ রাকআত (তাহিয়্যাতুল অজু) ও মসজিদে প্রবেশের সাথে সম্পর্কিত ২ রাকআত (তাহিয়্যাতুল মসজিদ বা দুখূলুল মসজিদ) জুমুআর দিনে বেশি পড়া হয়। 
জুমার ফরজের শর্ত পূর্ণ হয়েছে কি না? এই সংশয়ে অনেকে ৪ রাকআত ওয়াক্তিয়া জুহর এবং ২ রাকআত আখেরী
জুহরও আদায় করেন। ২ রাকাত নফল পড়েন আবার শোকরিয়া নামায ২ রাকাতও পড়েন অনেকে। সলাতুত তাসবীহ ৪
রাকাতও কেউ কেউ পড়ে থাকেন শুক্রবারে।

জুমার দিনের সুন্নাত আমলসমূহ:

জুমার দিনের সুন্নাত আমলসমূহ হলো: (১) শবে জুমুআহ বা বৃহস্পতিবার দিবাগত শুক্রবার রাতে ঘুমানোর পূর্বে সুরমা ব্যবহার করা, (২) শুক্রবার খুব ভোরে ঘুম থেকে উঠা, (৩) তাহাজ্জুদ নামাজ আদায় করা, (৪) ফজরের নামাজ জমাআতের সাথে আদায় করা, (৫) কুরআন তিলাওয়াত করা, বিশেষ করে সূরা কাহাফ ও সূরা জুমুআহ তিলাওয়াত করা, (৬) যিকির আযকার বেশি করা, (৭) দুরূদ শরীফ বেশি বেশি পাঠ করা, (৮) নফল ইবাদাত বেশি করা, (৯) শারীরিক পরিস্কার পরিচ্ছন্ন হয়া ও ক্ষৌর কর্ম করা, (১০) গোঁফ কেটে ছোট করা, (১১) নখ কাটা, (১২) সকালে জুমুআর জন্য গোসল করা, (১৩) গায়ে ও মাথায় তেল ব্যবহার করা, (১৪) নতুন কাপড় বা উত্তম কাপড় পরিধান করা, (১৫) টুপি ও পাগড়ি পরিধান করা, (১৬) সুগন্ধি ব্যবহার করা, (১৭) সকাল সকাল মসজিদে যাওয়া, (১৮) যেখানে জায়গা পাওয়া যায় সেখানে বসা, (১৯) সম্ভব হলে ইমামের কাছাকাছি বসা, (২০) নিরবে খুৎবাহ শোনা, (২১) বেহুদা কথাবার্তা না বলা, (২২) অযথা নড়াচড়া না করা, (২৩) সকল মুসলমানের জন্য দোয়া করা, (২৪) দান খয়রাত করা,
(২৫) সদুপদেশ দেওয়া, (২৬) কবর যিয়ারত করা, (২৭) আত্মীয়-স্বজনের সাথে দেখা সাক্ষাৎ করা, (২৮) পাড়া
প্রতিবেশিদের খোঁজ খবর নেওয়া।

Header Ad
Header Ad

মে মাসে শেখ হাসিনার বিচার শুরু হচ্ছে: প্রধান উপদেষ্টা

ছবি: সংগৃহীত

জুলাই-আগস্ট গণঅভুত্থানে গণহত্যার মামলায় আগামী মাসের শুরুতেই সাবেক প্রধানমন্ত্রীর শেখ হাসিনার বিচার শুরু হচ্ছে-আল জাজিরাকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে এসব কথা জানিয়েছেন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

কাতারভিত্তিক সম্প্রচারমাধ্যম আলজাজিরার বৈশ্বিক নেতাদের সাক্ষাৎকারমূলক অনুষ্ঠান ‘টক টু আল–জাজিরা’য় এ কথা বলেন তিনি।
আগামী ডিসেম্বর থেকে আগামী বছর জুনের মধ্যেই নির্বাচন হবে বলে ফের জানিয়েছেন তিনি

এ সময় তিনি আরও বলেন, শুধু মানবিক সহায়তা নয়, নিরাপদ প্রত্যাবাসনই রোহিঙ্গা সংকটের স্থায়ী সমাধান।

বাংলাদেশে একটি সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ এবং উদাহরণ সৃষ্টিকারী নির্বাচন উপহার দেয়ার দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, নির্বাচনের আগে সংস্কারের তালিকা ছোট হলে ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন এবং তালিকা বড় হলে আগামী বছরের জুনের মধ্যে নির্বাচন হবে।

অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে জনপ্রত্যাশা এখনও তুঙ্গে রয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, জনগণ মনে করে অন্তর্বর্তী সরকার এখনও তাদের জন্য ভালো সমাধান।

আলজাজিরার ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা দীর্ঘ সাক্ষাৎকারে জুলাই বিপ্লব, সাবেক স্বৈরাচার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারতে পালিয়ে যাওয়া, সাবেক সরকারের দুর্নীতিসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কথা বলেন তিনি।

আলজাজিরার উপস্থাপক ড. ইউনূসকে প্রশ্ন করেন, এটা কি বলা ঠিক যে, শেখ হাসিনার পতনের পর অন্তর্বর্তী সরকারের ‘মধুচন্দ্রিমা’ এখন সম্ভবত শেষ হয়েছে? কিছু বেশ বড় চ্যালেঞ্জ রয়েছে, যেগুলোর সুনির্দিষ্ট জবাব আপনাকে দিতে হবে। কারণ, পুরোনো ক্ষমতাধরদের প্রভাব রয়েছে, অনেকে রাজনৈতিক শূন্যতাকে কাজে লাগাতে চাইতে পারে।

জবাবে ড. ইউনূস বলেন, মধুচন্দ্রিমা শেষ হোক বা না হোক, বাংলাদেশের মানুষ মনে করে অন্তর্বর্তী সরকার এখনও তাদের জন্য ভালো সমাধান। তারা অন্তর্বর্তী সরকারকে সরাসরি চলে যেতে এখনও বলছে না। বরং একটা ভালো নির্বাচন উপহার দিতে সরকারই নির্বাচন আয়োজনের দিকে যাচ্ছে। জনগণ তাড়াতাড়ি ক্ষমতা হস্তান্তরের কথা এখনও বলছে না।

লাখ লাখ রোহিঙ্গা শরণার্থীর সমাধান কি বাংলাদেশ একা করতে পারবে?

জবাবে ড. ইউনূস বলেন, আমরা আন্তর্জাতিক সংস্থা ও জাতিসংঘের সঙ্গে রোহিঙ্গা সমস্যা নিয়ে কাজ করছি। তারা যাতে নিরাপদে বাড়ি ফিরে যেতে পারে, তা নিশ্চিত করার চেষ্টা করছি। বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের মধ্যে কিছু বোঝাপড়া যাতে তৈরি হয়।

নির্বাচনে আওয়ামী লীগকে অংশগ্রহণের অনুমতি দেয়া হবে কিনা– এমন প্রশ্নের জবাবে ড. ইউনূস বলেন,
এ প্রশ্নের জবাবের একটি অংশ আওয়ামী লীগকেই নির্ধারণ করতে হবে। দলটি আগে নিজেই সিদ্ধান্ত নেবে–তারা নির্বাচনে যোগ দেবে কিনা। তারা এখনও কিছু ঘোষণা করেনি। তা ছাড়া নির্বাচনের সময় নির্বাচন কমিশন কী প্রতিক্রিয়া দেয়, সেটাসহ নানা বিষয় সামনে আসতে পারে।

তাহলে আওয়ামী লীগের নির্বাচনে অংশ নেয়ার বিষয়টি নির্বাচন কমিশনের ওপর ছেড়ে দিচ্ছেন কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, বিষয়টি তা নয়। অন্যান্য রাজনৈতিক দল আছে, যারা বলতে পারে যে, এ আইনের অধীনে আওয়ামী লীগ নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে না।

সাক্ষাৎকারে থাইল্যান্ডের ব্যাংককে ড. ইউনূসের সঙ্গে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বৈঠকের প্রসঙ্গ ওঠে। ড. ইউনূস জানান,
তিনি বিমসটেক সম্মেলনের ফাঁকে মোদির সঙ্গে বৈঠক করেছিলেন। সেখানে শেখ হাসিনাকে ‘চুপ’ রাখতে বলেছিলেন তিনি। জবাবে মোদি বলেছিলেন, এটা তার জন্য সম্ভব নয়। শেখ হাসিনা সামাজিক মাধ্যম ব্যবহার করে কিছু বললে, সেটি তিনি নিয়ন্ত্রণ করতে পারবেন না।

যুক্তরাষ্ট্র, ভারত, পাকিস্তান ও চীনের সঙ্গে সম্পর্ক নিয়ে ড. ইউনূস বলেন, একসঙ্গে কাজ করার নীতি নিয়ে এগিয়ে যেতে চাই। আমরা একসঙ্গেই পারস্পরিক সহযোগিতামূলক পদক্ষেপ নিতে চাই।

Header Ad
Header Ad

ঢাকাসহ সারাদেশে বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে

ছবি: সংগৃহীত

রাজধানী ঢাকা ও এর পার্শ্ববর্তী এলাকায় অস্থায়ীভাবে বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। এর পাশাপাশি কমতে পারে দিনের তাপমাত্রা। এছাড়া আকাশ আংশিক মেঘলা থেকে মেঘলা থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। এ সময় দক্ষিণ অথবা দক্ষিণ-পূর্ব দিক থেকে ঘণ্টায় ১০-১৫ কিলোমিটার বেগে বাতাস বইতে পারে।

সোমবার (২৮ এপ্রিল) রাজধানীসহ পার্শ্ববর্তী এলাকার সকাল ৭টা থেকে পরবর্তী ৬ ঘণ্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে এ তথ্য জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।

সোমবার সকাল ৬টায় ঢাকার তাপমাত্রা ছিল ২৮ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ৮২ শতাংশ।

সারাদেশের সকাল ৬ টা থেকে পরবর্তী ১২০ ঘণ্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, রংপুর, রাজশাহী, ঢাকা, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ বিদ্যুৎ চমকানো অথবা বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। একই সঙ্গে সারাদেশে দিনের তাপামাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে এবং রাতের তাপমাত্রা সামান্য কমতে পারে।

আরও বলা হয়েছে, লঘুচাপের বর্ধিতাংশ বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল হয়ে পশ্চিমবঙ্গ থেকে উত্তর বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে।

রোববার (২৭ এপ্রিল) সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৭ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এছাড়া গত ২৪ ঘণ্টায় রংপুরের ডিমলাতে সর্বোচ্চ ৮৬ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়।

Header Ad
Header Ad

সবাই মিলে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করাই লক্ষ্য: আলী রীয়াজ

জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহ সভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ। ছবি: সংগৃহীত

ঐকমত্য কমিশনের লক্ষ্য হচ্ছে জাতীয় সনদ তৈরি করা। সবাই মিলে একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করার অংশ হিসেবে আলোচনা চলছে বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহ সভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ।

সোমবার (২৮ এপ্রিল) জাতীয় সংসদের এলডি হলে গণঅধিকার পরিষদের সঙ্গে সংলাপের সূচনা বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।

আলী রীয়াজ বলেন, চর্চা, ঐক্যে এবং সম্মিলিতভাবে জাতীয় সনদ তৈরি করতে সবার প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখতে হবে। ঐকমত্য কমিশনের লক্ষ্য হচ্ছে জাতীয় সনদ তৈরি করা। যাতে করে ক্ষমতার বিন্যাসে পরিবর্তন ঘটে। বাংলাদেশ যাতে সমস্ত সম্ভাবনা নিয়ে জাগ্রত হতে পারে। গত ৫৩ বছর মানুষ যে গণতান্ত্রিক আকাঙ্ক্ষাকে ধারণ করছে, সেই আকাঙ্ক্ষাকে বাস্তবায়ন করা যায়, পথ উন্মুক্ত করা যায়, যেন সবাই মিলে একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করতে পারি। তারাই অংশ হিসেবে এ আলোচনা।

তিনি আরও বলেন, শুধুমাত্র সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন, মতামত ও সুপারিশই যথেষ্ট নয়। সব রাজনৈতিক ও গণতান্ত্রিক শক্তিগুলোর জনমানুষের ঐক্যের মধ্য দিয়ে আমরা বাংলাদেশকে নতুন বাংলাদেশের দিকে অগ্রসর করতে পারব। কাজে কি লিখছি তা নয়, চর্চার মধ্য দিয়ে, অঙ্গীকারের মধ্য দিয়ে, প্রতিশ্রুতির মধ্য দিয়ে আমাদের এ কাজে অগ্রসর হতে হবে। আমরা সেই প্রচেষ্টায় আছি।

ঐকমত্য কমিশনের সহ সভাপতি বলেন, বাংলাদেশের মানুষ তরুণদের নেতৃত্বে প্রাণ দিয়ে যে সম্ভাবনা তৈরি করেছে, সবাই মিলে সে সম্ভাবনাকে বাস্তবায়নের পথে অগ্রসর হতে হবে। সেই পথ ও প্রচেষ্টায় সবাই একত্রিত আছি, থাকব। একত্রিত থাকার তাগিদ জারি রাখব।

রাষ্ট্র সংস্কারের বিষয়ে স্প্রেডশিট আকারে ৩৯টি দলের কাছে মতামত চেয়েছিল জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। এর মধ্যে ৩৫টি দল মতামত জমা দিয়েছে বলে জানান আলী রীয়াজ। রোববার পর্যন্ত কমিশন ১৯টি দলের সঙ্গে সংলাপ করেছে। ২০তম দল হিসেবে গণঅধিকার পরিষদের সঙ্গে কমিশন সংলাপ করছে বলে জানান আলী রীয়াজ।

২০১৮ সালে বর্তমান গণঅধিকার পরিষদের নেতাদের নেতৃত্বে অনুষ্ঠিত কোটা সংস্কার আন্দোলনের কথা তুলে ধরে আলী রীয়াজ বলেন, তাদের অকুতোভয় সংগ্রামের মধ্য দিয়ে ফ্যাসিবাদ বিরোধী আন্দোলনের নতুন পর্যায় সূচনা হয়েছিল। যার ধারাবাহিকতায় ২০২৪ সালে কোটা সংস্কার আন্দোলন ও পরবর্তী পর্যায়ে একটি অভূতপূর্ব ও অভাবনীয় গণঅভ্যুত্থান হয়েছে।

প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দারের সঞ্চালনায় কমিশনের সদস্য সফর রাজ হোসেন, বিচারপতি এমদাদুল হক, ড. বদিউল আলম মজুমদার, ড. ইফতেখারুজ্জামান এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

মে মাসে শেখ হাসিনার বিচার শুরু হচ্ছে: প্রধান উপদেষ্টা
ঢাকাসহ সারাদেশে বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে
সবাই মিলে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করাই লক্ষ্য: আলী রীয়াজ
ইশরাককে মেয়র ঘোষণা করে গেজেট প্রকাশ
কাশ্মীর সীমান্তে ভারত-পাকিস্তানের ফের গোলাগুলি
টস হেরে ফিল্ডিংয়ে বাংলাদেশ, একাদশে ৩ পরিবর্তন
দেশে ফিরেছেন প্রধান উপদেষ্টা
টটেনহামকে উড়িয়ে প্রিমিয়ার লিগের চ্যাম্পিয়ন লিভারপুল
শেখ হাসিনাকে ‘চুপ’ রাখতে পারবেন না মোদি
রেফারির কাছে ক্ষমা চাইলেন মাদ্রিদের ডিফেন্ডার আন্তনিও রুদিগার
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নবীন শিক্ষার্থীদের শুভেচ্ছা উপহার দিলেন ছাত্রদল নেতা
দুর্নীতির অভিযোগ তুলে দুই উপদেষ্টার পদত্যাগ দাবি
নওগাঁয় গ্রাহকের আমানতের টাকা ফেরত না দেওয়ায় জাতীয় পার্টি’র নেতাকে গণধোলাই
পাকিস্তানের পাশাপাশি বাংলাদেশকেও পানি না দেওয়ার আহ্বান বিজেপি এমপির
এসআই নিয়োগের ফলাফল প্রকাশ, ৫৯৯ জনকে প্রাথমিক সুপারিশ
হাকিমপুরে গরীবের চাল ছাত্রলীগ নেতার গুদামে
চুরির অভিযোগে কুবির দুই শিক্ষার্থী বহিষ্কার
ভারত-পাকিস্তান ইস্যুতে আগবাড়িয়ে কিছু করার পক্ষে নয় ঢাকা
সাব-ইন্সপেক্টর পদে প্রাথমিক সুপারিশ পেল ৫৯৯ জন
দুই উপদেষ্টার এপিএস-পিও’র দুর্নীতির খোঁজে গোয়েন্দা কার্যক্রম শুরু