এত প্রাকৃতিক দুর্যোগ কেন
মানুষের পাপাচার বেড়ে গেলে এবং ঈমান-আমল কমে গেলে আল্লাহর পক্ষ থেকে আজাব-গজব নেমে আসে। আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘মানুষের কৃতকর্মের দরুন জলে ও স্থলে বিপর্যয় ছড়িয়ে পড়েছে। তিনি তাদের কোনো কোনো কাজের শাস্তি আস্বাদন করান, যাতে তারা ফিরে আসে।’ (সুরা রূম: ৪১)
কখনো কখনো মহান আল্লাহ এসব দুর্যোগ দিয়ে মানুষকে সতর্ক করেন। অর্থাৎ জমিনে ও সমাজে মানুষের নাফরমানির ফলে বিভিন্ন বিপর্যয় সৃষ্টি হয়। যেমন–মহামারি, অনাবৃষ্টি, অতিবৃষ্টি, বজ্রপাত, ঘূর্ণিঝড়, জলোচ্ছ্বাস, ভূমিকম্প ইত্যাদি।
হজরত নুহ (আ.)-এর সময়ের লোকজন আল্লাহর অবাধ্যতা ও পাপাচারে লিপ্ত হয়েছিল। আল্লাহ সতর্ক করার পরও তারা সতর্ক হয়নি। অবশেষে আল্লাহর আজাব নেমে আসে এবং ভয়ঙ্কর প্লাবন ও জলোচ্ছ্বাস অবাধ্য লোকদের ভাসিয়ে নিয়ে যায়। হজরত নুহ (আ.)-এর নৌকায় যারা আশ্রয় নিয়েছিল তারাই রক্ষা পেয়েছিল।
আল্লাহ বলেন, ‘আমি তার (নুহের) বংশধরদের অবশিষ্ট রেখেছি বংশপরম্পরায়।’ (সুরা সাফফাত: ৭৭)
মানুষ যখন আল্লাহর নাফরমানি থেকে ফিরে আসবে, মহান আল্লাহ তাদের ক্ষমা করে দিয়ে দুর্যোগ থেকে নিস্তার দেবেন। ঘূর্ণিঝড়, বিজলি-চমক ও বজ্রপাতের মাধ্যমে আল্লাহ মানুষকে সতর্ক করেন এবং এর মাধ্যমে যাকে ইচ্ছা শাস্তি দেন।
কোরআনে বলা হয়, ‘বজ্র তারই তাসবিহ ও হামদ জ্ঞাপন করে এবং তার ভয়ে ফেরেশতারাও (তাসবিহরত আছে)। তিনিই গর্জমান বিজলি পাঠান, তারপর যার ওপর ইচ্ছা একে বিপদরূপে পতিত করেন। আর তাদের (অর্থাৎ কাফিরদের) অবস্থা এই যে, তারা আল্লাহ সম্পর্কেই তর্ক-বিতর্ক করছে, অথচ তাঁর শক্তি অতি প্রচণ্ড।’ (সুরা রাদ: ১৩)।
আল্লাহর পাঠানো অন্যতম কঠোর আজাব হলো ঘূর্ণিঝড়, অতিবৃষ্টি ও ভূমিধস। আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘যখন তোমাদের সাগরে বিপদ স্পর্শ করে, তখন তিনি ছাড়া যাদের তোমরা ডাকো, তারা (তোমাদের মন থেকে) হারিয়ে যায়; অতঃপর তিনি যখন তোমাদের রক্ষা করে স্থলে আনেন, তখন তোমরা বিমুখ হয়ে যাও। আর মানুষ তো খুব অকৃতজ্ঞ।
‘তোমরা কি নিরাপদ হয়ে গিয়েছ যে তিনি তোমাদেরসহ স্থলের কোনো দিক ধসিয়ে দেবেন না অথবা তোমাদের ওপর শিলা বর্ষণকারী বাতাস প্রেরণ করবেন না? তারপর তোমরা তোমাদের জন্য কোনো কর্মবিধায়ক পাবে না। অথবা তোমরা কি নিরাপদ হয়ে গিয়েছ যে তিনি তোমাদের আরেকবার সমুদ্রে ফিরিয়ে নেবেন না, অতঃপর তোমাদের ওপর প্রচণ্ড বাতাস পাঠাবেন না এবং তোমাদের ডুবিয়ে দেবেন না, তোমরা কুফরি করার কারণে? তারপর তোমরা আমার বিরুদ্ধে এ বিষয়ে কোনো সাহায্যকারী পাবে না।’ (সুরা বনি ইসরাইল : ৬৭-৬৯)।
এসএ/