সোমবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৫ | ১৫ বৈশাখ ১৪৩২
Dhaka Prokash

অপরাধ দমনে মানবিক জ্ঞানবোধ জাগরণ জরুরি

অপরাধ হলো দেশ ও সমাজের শান্তি রক্ষার্থে প্রণীত আইন পরিপন্থী কর্ম। অপরাধের ফলে ব্যক্তিকে অপরাধের মাত্রাভেদে শাস্তি স্বরূপ দণ্ডবিধি আইন-১৮৬০ অনুযায়ী কারাদণ্ড, অর্থদণ্ড বা উভয়দণ্ড আবার ক্ষেত্রমত মৃত্যুদণ্ডও দেওয়া হয়। এই শাস্তিদানের উদ্দেশ্য নিয়ে নানাবিধ মতবাদ রয়েছে।

প্রতিরোধাত্মক মতবাদ: এই মতবাদ আলোকে সমাজকে শিক্ষা দান করাই শাস্তির উদ্দেশ্য। অপরাধীকে শাস্তি দেওয়া হয় কারণ শাস্তির নির্মম কঠোরতা মানুষকে অনুরূপ অপরাধ করা থেকে নিবৃত্ত করতে পারে। এই শাস্তিতত্ত্বে ভীতি থাকে, যা নৈতিকতার ভিত্তি হতে পারে না।

প্রতিশোধাত্মক মতবাদ: প্রত্যেক মানুষকে নিজস্ব ঐচ্ছিক ক্রিয়ার জন্য দায়িত্ব বহন করতে হয়। তাই প্রত্যেক অপরাধীকে তার অপরাধের দায় বহন করতে হয়। এই মতবাদে একজন অপরাধী সমাজে যতটা ক্ষতিসাধন করেছে তাকে তার সমানুপাতিক ক্ষতি স্বীকার করতে হয়। এই মতবাদে ‘খুনের বদলে খুন’ সূত্র বিদ্যমান। এই নীতিতে অপরাধ ও শাস্তির মধ্যে সমানুপাতের ঘ্রাণ পাওয়া যায়। অপরাধ প্রতিশোধাত্মক হওয়ার চেয়ে দৃষ্টান্তমূলক হওয়া যেতে পারে। প্রতিশোধ নেশা মানুষকে অন্ধ বানিয়ে দেয় কিন্তু দৃষ্টান্তমূলক শাস্তিতে পরবর্তীতে একই অপরাধ কমে যাওয়ার আভাস পাওয়া যায়। সমাজে অপরাধ কর্মের পথ বন্ধ হওয়া সত্ত্বেও অপরাধ কর্ম মাত্রা ছাড়িয়ে গেলে দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তি দেওয়া যেতে পারে। বিভিন্ন ধর্মেও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির বিধান রয়েছে।

সংশোধনাত্মক মতবাদ: সংশোধনাত্মক শাস্তিতত্ত্বে বলা হয় যে, অপরাধীকে সংশোধন করাই শাস্তিদানের উদ্দেশ্য। সমাজবিজ্ঞনীদের মতে, মানুষের মধ্যে নীতিবোধ সুপ্ত থাকে। সামাজিক, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক কারণে মানুষ নৈতিক পথ থেকে বিচ্যুত হয়। শাস্তি মানুষের সুপ্ত নৈতিকতাকে জাগ্রত করতে সহায়তা করে। তবে যার মধ্যে অশুভ ধারণা দীর্ঘদিন যাবত প্রতিষ্ঠিত থাকে তাকে সংশোধন করা অসম্ভব প্রায়। সংশোধনাত্মক শাস্তিতত্ত্ব আপাত দৃষ্টিতে অপরাধ দমন করলেও প্রকৃত অর্থে অপরাধ নির্মূলে অকেজো প্রায়।

শাস্তি নিয়ে উপরোক্ত মতবাদগুলো বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, শাস্তি তথা দণ্ডদান সাময়িকভাবে অপরাধ নিবারণ করে মাত্র। বাংলাদেশের সকল জেলায় জেলা দায়রা আদালত রয়েছে ও মহানগরীগুলোতে রয়েছে মহানগর জজ আদালত এবং এই দুই শ্রেণির আদালতের অভিভাবক হিসেবে সুপ্রিম কোর্ট রয়েছে। স্বাধীনতা-উত্তর ১৯৭২ সালে বাংলাদেশে জনসংখ্যা ছিল সাড়ে ৭ কোটি আর হাইকোর্টে মামলা ছিল ২ হাজার ৯১৯ টি। বর্তমানে জনসংখ্যা আড়াই গুণ বেড়ে প্রায় ১৮ কোটি হয়েছে আর অপরাধ বিষয়ক মামলা হাইকোর্টেই বেড়েছে শত গুণের বেশি। হাইকোর্টে বর্তমানে প্রায় ৪ লাখ মামলা জড়ো হয়েছে। ২০১৯ সালের ১৬ই সেপ্টেম্বর দৈনিক প্রথম আলো পত্রিকায় “দিনে ১২৯ ফৌজদারি মামলা “ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশিত হতে দেখা যায়। বর্তমানে মামলার সংখ্যা জ্যামিতিক হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে। মামলার বৃদ্ধি পাওয়া থেকেই অপরাধ প্রবণতা বৃদ্ধি লক্ষ্য করা যায়।

২০১৯-২০২০ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগ ও বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড অ্যান্ড সার্ভিসেস ট্রাস্টের (ব্লাস্ট) যৌথ গবেষণায় দেখা যায়, ১৯৯১ সাল থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত ৩১ বছরে হত্যা ও সন্ত্রাস বিরোধী অপরাধের মামলায় ১০১ জন আসামীর মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়। বর্তমানে বিভিন্ন কারাগারে প্রায় ১ হাজার ৬৫০ জন আসামি তার মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের অপেক্ষার প্রহর গুণছে। মৃত্যুদণ্ড প্রাপ্ত আসামীদের ৭৪ শতাংশ ব্যক্তির অপরাধের সময় বয়স ছিল ৩০ বছরে কম। তাদের মধ্যে ৮৭ শতাংশ স্কুল পার হতে পারেনি এবং ১৫ শতাংশ ব্যক্তির কোনোরূপ প্রাতিষ্ঠানিক জ্ঞান ছিল না।

আমরা দেখি, অপরাধ দমনে শাস্তিতত্ত্বের সর্বোচ্চ প্রয়োগ ঘটার পরেও অপরাধ জ্যামিতিক হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে। সুতরাং হলফ করে বলা যায়, অপরাধ নির্মূলে শাস্তি তথা দণ্ডদান একমাত্র উপায় হতে পারে না। অপরাধের পথ খোলা রেখে শাস্তি দেয়ায় কোনো ফল নেই; বরং অপরাধ যেন সংঘটিত না হয় তার জন্য প্রতিরোধ মূলক ব্যবস্থা করা জরুরি। যেমন সামাজিক দ্বন্দ্ব-কলহের অবসান ঘটলে নিশ্চয়ই খুনখারাবি রোধ হবে। সম্পদের সুষম বন্টন হলে চুরি ডাকাতি রোধ হবে। নারী পুরুষের অবাধ মেলা-মেশা ও যৌনপ্রবৃত্তি উদ্দীপক সংস্কৃতির প্রচার ও প্রসারে নিষেধাজ্ঞা জারি হলে ধর্ষণ, পরকীয়া ও ব্যভিচার রোধ হবে। তেঁতুল সামনে থাকলে যেমন জিহ্বে জল আসবেই তেমনি অপরাধের পথ খোলা থাকলে অপরাধ সংঘটন হবেই।

অপরাধ নির্মূলে ব্যক্তির মধ্যে প্রথমত মানবিক বোধ সৃষ্টি করতে হবে। অনেকেই ধর্মীয় বোধের ও ধর্ম চর্চার কথা বলে থাকেন। আমি চিরাচরিতই প্রথমত মানবিক বোধ জাগরণকেই প্রাধান্য দিব। কেননা যদি বিশেষ ধর্মের কথা বলি তাহলে ঐধর্মের লোক ব্যতিত সকল মানুষ উক্ত বক্তব্যকে এড়িয়ে চলবে। বিশেষ ধর্মের মানুষকে অপরাধ থেকে বিরত রাখলেই সমাজে অপরাধ বন্ধ হবে না। কেননা সমাজে সকল ধর্মের মানুষ বসবাস করে। মানুষে মানুষে ধর্মীয়, সামাজিক, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক বিভেদ থাকতে পারে কিন্তু মানুষ হিসেবে মানবিকতার বিভেদ থাকতে পারে না। মানবিক বোধ সম্পন্ন কোনো মানুষ সেচ্ছায়-স্বজ্ঞানে অন্যায় করতে পারে না। মানবতা হচ্ছে মানুষের ধর্ম। মানুষের জন্য ভালোবাসা, মানুষের জন্য সমবেদনা, স্নেহ-মমতার নামই মানবতা। নিঃস্বার্থভাবে কল্যাণকর কাজে অংশীদার হওয়ার নাম মানবতা। মানবতায় মানুষের ধর্ম, জাত, বর্ণের ভেদাভেদ থাকে না। মানবতা সহজ ও সাবলীল। মানবিক হতে অর্থের প্রয়োজন হয়না;প্রয়োজন নির্ভেজাল মন ও উপলদ্ধির।

রাস্তায় চলতে গিয়ে অন্ধ, বৃদ্ধ ও প্রতিবন্ধীকে হাত ধরে রাস্তা পার করে দেওয়া হলো মানবতা। বৃদ্ধ রিকশাচালকের সঙ্গে দামাদামি না করে উপযুক্ত ভাড়া ও পারলে দু’চার টাকা বাড়িয়ে দেয়ার নাম মানবতা। শত্রুর বিপদে খুশী না হওয়া মানবতা। বিধবাকে বিধবা না বলা, ডিভোর্সীকে এড়িয়ে না চলা, অন্ধকে অন্ধ না বলা, প্রতিবন্ধীকে প্রতিবন্ধী নামে না ডাকা, কাজের লোকদের সঙ্গে তুমি সম্বোধন না করাই মানবতা। ব্যক্তির মধ্যে এই মানবতাবোধ জাগ্রত করতে পারলেই কেবল অপরাধ নির্মূল হবে।

অপরাধ নির্মূলে ব্যক্তির মধ্যে দ্বিতীয়ত ধর্মীয় জ্ঞানবোধ জাগ্রত করতে হবে। মানবতা ধর্মবেষ্টিত শুদ্ধিঘর। ধর্ম থেকেই মানবতার সৃষ্টি। ধর্মীয় জ্ঞানে ও ধর্মীয় গুণে গুণান্বিত ব্যক্তি কখনো অপরাধে জড়াতে পারে না। পোপ প্রান্সিস চিরাচরিতই তার অনুসারীদের ধর্মের শিক্ষা ও ধর্ম পালনের তাগিদ দিয়ে থাকেন। ইসলাম ধর্মে ধর্মীয় জ্ঞানার্জনকে সর্বোচ্চ সম্মান দেওয়া হয়েছে। দার্শনিক কাল মার্ক্স ধর্মকে আফিম বলে মন্তব্য করেছেন। তিনি এজন্যই আফিম বলে মন্তব্য করেছেন যে, মানুষ ধর্মের জন্য যে কোনো কিছু করতে পারে। মানুষ সব বিসর্জন দিতে পারে কিন্তু ধর্ম বিসর্জন দেয় না। মানুষ ধর্মকে কেন্দ্র করে নিজেকে গড়ে তোলার চেষ্টা করে। ধর্মের প্রতি মানুষের অগাধ আস্থা ও বিশ্বাসের কারণেই কাল মার্ক্স ধর্মকে আফিম বলে মন্তব্য করেছেন। তিনি যে উদ্দেশ্য নিয়েই এই মন্তব্য করেন না কেন আমি কাল মার্ক্সের এই মন্তব্যকে শ্রদ্ধা জানাই। কেননা ধর্মপ্রাণ ব্যক্তির নিকট নিজ জীবনের চেয়েও ধর্মের মূল্য বেশি। যেহেতু মানুষের কাছে ধর্মের মূল্যমান অমূল্য সেহেতু মানুষের মধ্যে ধর্মের জ্ঞান ও ধর্মের চর্চাকে বাড়াতে হবে। পৃথিবীর কোনো ধর্মই মানুষকে অপরাধী বানায় না। ধর্মের মূলমন্ত্রই হলো মানবতা। সত্য প্রতিষ্ঠায় ধর্ম সর্বদা সোচ্চার। কোনো ধর্মই অন্যায়কে সমর্থন করে না। হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান, ইসলামসহ সকল ধর্মই শান্তির বার্তা দেয়। সকল ধর্মের বিধিবিধান ও আচার মানুষকে কল্যাণ ও সত্য সুন্দরে নির্দেশনা দেয়। শিখায় ধর্মীয় স্বাধীনতা ও সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি। ধর্মীয় জ্ঞানবোধ সম্পন্ন কোনো ব্যক্তি সচরাচর অপরাধে জড়িত হওয়ার নজির পাওয়া যায় না।

সর্বোপরি বলা যায়, শাস্তিতত্ত্বের প্রতিরোধাত্মক ও প্রতিশোধাত্মক মতবাদ কোনো ভাবেই গ্রহণযোগ্য নয় তবে সংশোধাত্মক মতবাদ গ্রহণ করা যায়। সংশোধাত্মক মতবাদ প্রয়োগের পাশাপাশি মানবিকতাবোধ ও ধর্মীয় জ্ঞানবোধ জাগরণ করলেই কেবল অপরাধ নির্মূল হবে। নচেৎ অপরাধ ক্রমবর্ধমান হারে বাড়তেই থাকবে।

মুহাম্মদ ইয়াসিন আরাফাত ত্বোহা
শিক্ষার্থী, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়

এসএ/

Header Ad
Header Ad

মে মাসে শেখ হাসিনার বিচার শুরু হচ্ছে: প্রধান উপদেষ্টা

ছবি: সংগৃহীত

জুলাই-আগস্ট গণঅভুত্থানে গণহত্যার মামলায় আগামী মাসের শুরুতেই সাবেক প্রধানমন্ত্রীর শেখ হাসিনার বিচার শুরু হচ্ছে-আল জাজিরাকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে এসব কথা জানিয়েছেন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

কাতারভিত্তিক সম্প্রচারমাধ্যম আলজাজিরার বৈশ্বিক নেতাদের সাক্ষাৎকারমূলক অনুষ্ঠান ‘টক টু আল–জাজিরা’য় এ কথা বলেন তিনি।
আগামী ডিসেম্বর থেকে আগামী বছর জুনের মধ্যেই নির্বাচন হবে বলে ফের জানিয়েছেন তিনি

এ সময় তিনি আরও বলেন, শুধু মানবিক সহায়তা নয়, নিরাপদ প্রত্যাবাসনই রোহিঙ্গা সংকটের স্থায়ী সমাধান।

বাংলাদেশে একটি সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ এবং উদাহরণ সৃষ্টিকারী নির্বাচন উপহার দেয়ার দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, নির্বাচনের আগে সংস্কারের তালিকা ছোট হলে ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন এবং তালিকা বড় হলে আগামী বছরের জুনের মধ্যে নির্বাচন হবে।

অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে জনপ্রত্যাশা এখনও তুঙ্গে রয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, জনগণ মনে করে অন্তর্বর্তী সরকার এখনও তাদের জন্য ভালো সমাধান।

আলজাজিরার ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা দীর্ঘ সাক্ষাৎকারে জুলাই বিপ্লব, সাবেক স্বৈরাচার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারতে পালিয়ে যাওয়া, সাবেক সরকারের দুর্নীতিসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কথা বলেন তিনি।

আলজাজিরার উপস্থাপক ড. ইউনূসকে প্রশ্ন করেন, এটা কি বলা ঠিক যে, শেখ হাসিনার পতনের পর অন্তর্বর্তী সরকারের ‘মধুচন্দ্রিমা’ এখন সম্ভবত শেষ হয়েছে? কিছু বেশ বড় চ্যালেঞ্জ রয়েছে, যেগুলোর সুনির্দিষ্ট জবাব আপনাকে দিতে হবে। কারণ, পুরোনো ক্ষমতাধরদের প্রভাব রয়েছে, অনেকে রাজনৈতিক শূন্যতাকে কাজে লাগাতে চাইতে পারে।

জবাবে ড. ইউনূস বলেন, মধুচন্দ্রিমা শেষ হোক বা না হোক, বাংলাদেশের মানুষ মনে করে অন্তর্বর্তী সরকার এখনও তাদের জন্য ভালো সমাধান। তারা অন্তর্বর্তী সরকারকে সরাসরি চলে যেতে এখনও বলছে না। বরং একটা ভালো নির্বাচন উপহার দিতে সরকারই নির্বাচন আয়োজনের দিকে যাচ্ছে। জনগণ তাড়াতাড়ি ক্ষমতা হস্তান্তরের কথা এখনও বলছে না।

লাখ লাখ রোহিঙ্গা শরণার্থীর সমাধান কি বাংলাদেশ একা করতে পারবে?

জবাবে ড. ইউনূস বলেন, আমরা আন্তর্জাতিক সংস্থা ও জাতিসংঘের সঙ্গে রোহিঙ্গা সমস্যা নিয়ে কাজ করছি। তারা যাতে নিরাপদে বাড়ি ফিরে যেতে পারে, তা নিশ্চিত করার চেষ্টা করছি। বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের মধ্যে কিছু বোঝাপড়া যাতে তৈরি হয়।

নির্বাচনে আওয়ামী লীগকে অংশগ্রহণের অনুমতি দেয়া হবে কিনা– এমন প্রশ্নের জবাবে ড. ইউনূস বলেন,
এ প্রশ্নের জবাবের একটি অংশ আওয়ামী লীগকেই নির্ধারণ করতে হবে। দলটি আগে নিজেই সিদ্ধান্ত নেবে–তারা নির্বাচনে যোগ দেবে কিনা। তারা এখনও কিছু ঘোষণা করেনি। তা ছাড়া নির্বাচনের সময় নির্বাচন কমিশন কী প্রতিক্রিয়া দেয়, সেটাসহ নানা বিষয় সামনে আসতে পারে।

তাহলে আওয়ামী লীগের নির্বাচনে অংশ নেয়ার বিষয়টি নির্বাচন কমিশনের ওপর ছেড়ে দিচ্ছেন কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, বিষয়টি তা নয়। অন্যান্য রাজনৈতিক দল আছে, যারা বলতে পারে যে, এ আইনের অধীনে আওয়ামী লীগ নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে না।

সাক্ষাৎকারে থাইল্যান্ডের ব্যাংককে ড. ইউনূসের সঙ্গে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বৈঠকের প্রসঙ্গ ওঠে। ড. ইউনূস জানান,
তিনি বিমসটেক সম্মেলনের ফাঁকে মোদির সঙ্গে বৈঠক করেছিলেন। সেখানে শেখ হাসিনাকে ‘চুপ’ রাখতে বলেছিলেন তিনি। জবাবে মোদি বলেছিলেন, এটা তার জন্য সম্ভব নয়। শেখ হাসিনা সামাজিক মাধ্যম ব্যবহার করে কিছু বললে, সেটি তিনি নিয়ন্ত্রণ করতে পারবেন না।

যুক্তরাষ্ট্র, ভারত, পাকিস্তান ও চীনের সঙ্গে সম্পর্ক নিয়ে ড. ইউনূস বলেন, একসঙ্গে কাজ করার নীতি নিয়ে এগিয়ে যেতে চাই। আমরা একসঙ্গেই পারস্পরিক সহযোগিতামূলক পদক্ষেপ নিতে চাই।

Header Ad
Header Ad

ঢাকাসহ সারাদেশে বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে

ছবি: সংগৃহীত

রাজধানী ঢাকা ও এর পার্শ্ববর্তী এলাকায় অস্থায়ীভাবে বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। এর পাশাপাশি কমতে পারে দিনের তাপমাত্রা। এছাড়া আকাশ আংশিক মেঘলা থেকে মেঘলা থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। এ সময় দক্ষিণ অথবা দক্ষিণ-পূর্ব দিক থেকে ঘণ্টায় ১০-১৫ কিলোমিটার বেগে বাতাস বইতে পারে।

সোমবার (২৮ এপ্রিল) রাজধানীসহ পার্শ্ববর্তী এলাকার সকাল ৭টা থেকে পরবর্তী ৬ ঘণ্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে এ তথ্য জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।

সোমবার সকাল ৬টায় ঢাকার তাপমাত্রা ছিল ২৮ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ৮২ শতাংশ।

সারাদেশের সকাল ৬ টা থেকে পরবর্তী ১২০ ঘণ্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, রংপুর, রাজশাহী, ঢাকা, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ বিদ্যুৎ চমকানো অথবা বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। একই সঙ্গে সারাদেশে দিনের তাপামাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে এবং রাতের তাপমাত্রা সামান্য কমতে পারে।

আরও বলা হয়েছে, লঘুচাপের বর্ধিতাংশ বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল হয়ে পশ্চিমবঙ্গ থেকে উত্তর বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে।

রোববার (২৭ এপ্রিল) সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৭ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এছাড়া গত ২৪ ঘণ্টায় রংপুরের ডিমলাতে সর্বোচ্চ ৮৬ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়।

Header Ad
Header Ad

সবাই মিলে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করাই লক্ষ্য: আলী রীয়াজ

জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহ সভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ। ছবি: সংগৃহীত

ঐকমত্য কমিশনের লক্ষ্য হচ্ছে জাতীয় সনদ তৈরি করা। সবাই মিলে একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করার অংশ হিসেবে আলোচনা চলছে বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহ সভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ।

সোমবার (২৮ এপ্রিল) জাতীয় সংসদের এলডি হলে গণঅধিকার পরিষদের সঙ্গে সংলাপের সূচনা বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।

আলী রীয়াজ বলেন, চর্চা, ঐক্যে এবং সম্মিলিতভাবে জাতীয় সনদ তৈরি করতে সবার প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখতে হবে। ঐকমত্য কমিশনের লক্ষ্য হচ্ছে জাতীয় সনদ তৈরি করা। যাতে করে ক্ষমতার বিন্যাসে পরিবর্তন ঘটে। বাংলাদেশ যাতে সমস্ত সম্ভাবনা নিয়ে জাগ্রত হতে পারে। গত ৫৩ বছর মানুষ যে গণতান্ত্রিক আকাঙ্ক্ষাকে ধারণ করছে, সেই আকাঙ্ক্ষাকে বাস্তবায়ন করা যায়, পথ উন্মুক্ত করা যায়, যেন সবাই মিলে একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করতে পারি। তারাই অংশ হিসেবে এ আলোচনা।

তিনি আরও বলেন, শুধুমাত্র সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন, মতামত ও সুপারিশই যথেষ্ট নয়। সব রাজনৈতিক ও গণতান্ত্রিক শক্তিগুলোর জনমানুষের ঐক্যের মধ্য দিয়ে আমরা বাংলাদেশকে নতুন বাংলাদেশের দিকে অগ্রসর করতে পারব। কাজে কি লিখছি তা নয়, চর্চার মধ্য দিয়ে, অঙ্গীকারের মধ্য দিয়ে, প্রতিশ্রুতির মধ্য দিয়ে আমাদের এ কাজে অগ্রসর হতে হবে। আমরা সেই প্রচেষ্টায় আছি।

ঐকমত্য কমিশনের সহ সভাপতি বলেন, বাংলাদেশের মানুষ তরুণদের নেতৃত্বে প্রাণ দিয়ে যে সম্ভাবনা তৈরি করেছে, সবাই মিলে সে সম্ভাবনাকে বাস্তবায়নের পথে অগ্রসর হতে হবে। সেই পথ ও প্রচেষ্টায় সবাই একত্রিত আছি, থাকব। একত্রিত থাকার তাগিদ জারি রাখব।

রাষ্ট্র সংস্কারের বিষয়ে স্প্রেডশিট আকারে ৩৯টি দলের কাছে মতামত চেয়েছিল জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। এর মধ্যে ৩৫টি দল মতামত জমা দিয়েছে বলে জানান আলী রীয়াজ। রোববার পর্যন্ত কমিশন ১৯টি দলের সঙ্গে সংলাপ করেছে। ২০তম দল হিসেবে গণঅধিকার পরিষদের সঙ্গে কমিশন সংলাপ করছে বলে জানান আলী রীয়াজ।

২০১৮ সালে বর্তমান গণঅধিকার পরিষদের নেতাদের নেতৃত্বে অনুষ্ঠিত কোটা সংস্কার আন্দোলনের কথা তুলে ধরে আলী রীয়াজ বলেন, তাদের অকুতোভয় সংগ্রামের মধ্য দিয়ে ফ্যাসিবাদ বিরোধী আন্দোলনের নতুন পর্যায় সূচনা হয়েছিল। যার ধারাবাহিকতায় ২০২৪ সালে কোটা সংস্কার আন্দোলন ও পরবর্তী পর্যায়ে একটি অভূতপূর্ব ও অভাবনীয় গণঅভ্যুত্থান হয়েছে।

প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দারের সঞ্চালনায় কমিশনের সদস্য সফর রাজ হোসেন, বিচারপতি এমদাদুল হক, ড. বদিউল আলম মজুমদার, ড. ইফতেখারুজ্জামান এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

মে মাসে শেখ হাসিনার বিচার শুরু হচ্ছে: প্রধান উপদেষ্টা
ঢাকাসহ সারাদেশে বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে
সবাই মিলে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করাই লক্ষ্য: আলী রীয়াজ
ইশরাককে মেয়র ঘোষণা করে গেজেট প্রকাশ
কাশ্মীর সীমান্তে ভারত-পাকিস্তানের ফের গোলাগুলি
টস হেরে ফিল্ডিংয়ে বাংলাদেশ, একাদশে ৩ পরিবর্তন
দেশে ফিরেছেন প্রধান উপদেষ্টা
টটেনহামকে উড়িয়ে প্রিমিয়ার লিগের চ্যাম্পিয়ন লিভারপুল
শেখ হাসিনাকে ‘চুপ’ রাখতে পারবেন না মোদি
রেফারির কাছে ক্ষমা চাইলেন মাদ্রিদের ডিফেন্ডার আন্তনিও রুদিগার
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নবীন শিক্ষার্থীদের শুভেচ্ছা উপহার দিলেন ছাত্রদল নেতা
দুর্নীতির অভিযোগ তুলে দুই উপদেষ্টার পদত্যাগ দাবি
নওগাঁয় গ্রাহকের আমানতের টাকা ফেরত না দেওয়ায় জাতীয় পার্টি’র নেতাকে গণধোলাই
পাকিস্তানের পাশাপাশি বাংলাদেশকেও পানি না দেওয়ার আহ্বান বিজেপি এমপির
এসআই নিয়োগের ফলাফল প্রকাশ, ৫৯৯ জনকে প্রাথমিক সুপারিশ
হাকিমপুরে গরীবের চাল ছাত্রলীগ নেতার গুদামে
চুরির অভিযোগে কুবির দুই শিক্ষার্থী বহিষ্কার
ভারত-পাকিস্তান ইস্যুতে আগবাড়িয়ে কিছু করার পক্ষে নয় ঢাকা
সাব-ইন্সপেক্টর পদে প্রাথমিক সুপারিশ পেল ৫৯৯ জন
দুই উপদেষ্টার এপিএস-পিও’র দুর্নীতির খোঁজে গোয়েন্দা কার্যক্রম শুরু