লিটন আব্বাস এর কবিতা সিরাপ ও ছেলেটি
একুশ শুধুই শোকের হরফে
শুধু অক্ষর ব্যথা
নাকি আরও অনেক কথা!
ফেব্রুয়ারির একুশ আসলেই অজানা কান্নার ধ্বনি শোনা যায়,
কে শুনতে পায় সেই ধ্বনিরাগ?
কে জানে তার ইতিহাস!
একুশ শুধুই শোকের হরফে
শুধু অক্ষর ব্যথা?
না, আরও অনেক কথা!
যে কথা, যে ব্যথা যায় নি বলা কোনোদিন!
যে ছেলেটা শয্যায় ফেলে আসা মায়ের ঔষধ নিতে
নীলক্ষেতের মোড়ে আজিমপুর থেকে হেঁটে এসেছিল,
দোকান থেকে কিনেও ছিল জ্বরঠান্ডার সিরাপ।
হঠাৎ নয়, বহুদিন ধরে জ্বলা আগুন আজ অন্যরকম আওয়াজ!
আমতলার আকাশে ফাগুনের রঙচটা আগুন। এ এক অন্যরকম আহবান!
আমতলা থেকে নীলক্ষেত তাকালেই গাছের ডাল দেখা যায়,
মিনিট কয়েকের হাঁটাপথ।
স্লোগান এমনই ব্যথা নিরাময়ের প্রতিষেধক হাতে থাকা
ছেলেটির সিরাপের চেয়েও বেশি;
কখন যেনো সেই ছেলেটি মিছিলে স্লোগানে সবিশেষ
গুলির সামনে লুটিয়ে গেলো!
মা, মা --কয়েকবার মৃদুলসুরে, মা ডাকতে ডাকতে
ছেলেটি সিরাপের সাথে রাস্তায় পরে থাকলো।
চারিদিক ছুটোছুটি, হাসপাতাল, জরুরী সেবা ভীষণ ব্যস্ত আহতদের শুশ্রূষায়!
তখনো পরে আছে অবিকল অভাঙা সিরাপ ও ছেলেটি।
আজিমপুর থেকে এসেছিলো সে? নাকি আরও ভেতর থেকে,
নাকি আত্মীয় বাড়ি বেড়াতে এসেছিল?
সোমত্ত টগবগে যুবকই কিনা গিয়েছিল ঔষধ কিনতে!
কোথা তার বাড়ি? কোথায় ঘর তার!
নাকি সে সবই জানতো,
মায়ের ঔষধ, তারচেয়েও
দরকারি ছিলো
সেই স্লোগান?
সেই মিছিল!
কোথায় ঘুমোই সেই ছেলেটি
কোন খবরে আজ সে---
কে রেখেছে মনে তারে?
মায়ের ছেলেরে কে রেখেছে ধরে
কোথায় আছে সে পরে!
ডিএসএস/