পাঠকের আস্থায় ঢাকাপ্রকাশ
দেখতে দেখতে ঢাকাপ্রকাশ-এর বর্ষপূর্তি হতে যাচ্ছে। ঢাকাপ্রকাশ আত্মপ্রকাশের আগের থেকেই আগ্রহ ছিল আমার। তারপর ভালোবাসা দিবস উপলক্ষে আয়োজিত গল্প প্রতিযোগিতায় আমার গল্পও প্রকাশিত হয়। বিশ্বজুড়েই গণমাধ্যমগুলো এখন নানা সমস্যায় আবর্তিত। সাংবাদিকতা পেশা এখন আগের থেকে বেশি চ্যালেঞ্জিং হয়ে উঠেছে। তবে গণমাধ্যম ধারার যে বিকাশ সাধন হয়েছে তা বেশ ইতিবাচক। প্রিন্ট পত্রিকা, টিভি মিডিয়া, অনলাইন পত্রিকা, রেডিওসহ বিভিন্ন মাধ্যম আজ সংবাদের জন্য জনপ্রিয়।
অনলাইন পত্রিকা নিয়ে অভিযোগ-অনুযোগ থাকলেও মূলধারার যেসব অনলাইন পত্রিকা রয়েছে সেগুলো যথেষ্ট জনপ্রিয় এবং গ্রহণযোগ্য। এতসব চ্যালেঞ্জ নিয়েই গত বছর পাঠকের সামনে আসে ঢাকাপ্রকাশ। অনলাইন পত্রিকাগুলোর প্ল্যাটফর্ম মজবুত হয় অন্যসব পত্রিকার মতোই সংবাদের বস্তুনিষ্ঠতা, সংবাদের গ্রহণযোগ্যতা, সংবাদের বৈচিত্র্যতা, সংবাদ উপস্থাপনা, যথার্থতা এবং পাঠকের সংশ্লিষ্টতায়।
‘সততাই শক্তি, সুসাংবাদিকতায় মুক্তি’ এই স্লোগানকে সঙ্গে নিয়ে ঢাকাপ্রকাশ এগিয়ে চলার এক বছর পার করেছে। সংবাদের পাতাগুলোর পাশাপাশি ঢাকাপ্রকাশে রয়েছে অর্থনীতি, রাজনীতি, খেলা, বিনোদন, লাইফস্টাইল, স্বাস্থ্য, সাহিত্য, শিক্ষা, মতামত, ক্যারিয়ার, ধর্ম, কৃষি, ফিচার, হৃদয়ের জানালা প্রভৃতি পাতা। বাংলার পাশাপাশি রয়েছে ইংরেজি ভার্সন।
দৈনিক প্রিন্ট পত্রিকা হোক আর অনলাইন পত্রিকা হোক বা অন্য যেকোনো গণমাধ্যম হোক প্রধান লক্ষ্য থাকে মানুষের কাছে পৌঁছানো, পাঠকের বিশ্বস্ততা অর্জন করা, পাঠকের সঙ্গে যোগসূত্র তৈরি করা। সেদিক বিবেচনায় ঢাকাপ্রকাশ এক বছরে অনেকটাই অগ্রসর হতে পেরেছে। তবে বর্তমান সময়ে গণমাধ্যমের যেমন বৈচিত্র্যতা এসেছে পাঠকেরও বৈচিত্র্যতা এসেছে। একই সংবাদ ভিন্নভাবে উপস্থাপন বা একটু আলাদা লেখনী বা চৌকস উপস্থাপনা পাঠকের নজর কেড়ে নেয়। যা এখনকার গণমাধ্যমগুলো করছে। শুধু সংবাদই অবশ্য প্রধান মাপকাঠি নয় একটি মূলধারার অনলাইন দৈনিকের। অন্যান্য পাতা যেমন মতামতের পাতাটির কথাই বলা যাক। এ সময়ের প্রিন্ট দৈনিকগুলো এবং অনেক অনলাইন গণমাধ্যম অভিজ্ঞ কলামিস্টদের সাথে সাথে উঠতি তারুণ্যকে প্রাধান্য দিচ্ছে। তারা ভালো লিখছে। নতুন নুতন বিশ্লেষণ করছে। সুতরাং তাদের মানসম্মত লেখাগুলোও প্রকাশ করতে হবে। এর ফলে এক শ্রেণির তরুণের মধ্যে ব্যাপক গ্রহণযোগ্যতা তৈরি হবে।
আবার সাহিত্যের কথাই আসি। সাহিত্যেও নতুন প্রতিভাবান লেখকদের তুলে আনার সুযোগ রয়েছে। এর পরিধি আরও বড় করতে হবে। যদিও সাহিত্যে মানের সঙ্গে কোনো আপস চলবে না। কিন্তু বিস্তৃত না হলে সেটাও শুভ হবে না। যেমন— বিভিন্ন সময় গল্প বা কবিতা বা ছড়া আহ্বান করা যেতে পারে। এর আগে ভালোবাসা দিবস উপলক্ষে ঢাকাপ্রকাশ যেমন গল্প লেখার প্রতিযোগিতার আয়োজন করেছিল সেরকম। এর মধ্য থেকেই আগামীর ভালো লেখক উঠে আসবে। তার অগ্রদূত হবে ঢাকাপ্রকাশ।
অন্যান্য বিভাগের ক্ষেত্রেও একইভাবে কাজ করার সুযোগ রয়েছে। তবে সবকিছুর ওপর সংবাদের ক্ষেত্রে গুরুত্ব দিতে হবে সবচেয়ে বেশি। বর্তমান সময় প্রতিযোগিতামূলক। একটি গুরুত্বপূর্ণ সংবাদ সবার আগে সঠিক তথ্যে প্রকাশ করার প্রতিযোগিতা থাকে। সেই প্রতিযোগিতায় টিকতে হবে। যদিও কাজটি কঠিন। কিন্তু এটা গণমাধ্যমগুলো করছে। সুতরাং এখানে কোনো ছাড় দেওয়ার সুযোগ নেই।
যাই হোক, শেষ পর্যন্ত সব বাধা অতিক্রম করে ঢাকাপ্রকাশ এগিয়ে যাক পাঠকের হৃদয় জয় করে— শুভ কামনা রইল।
লেখক: প্রাবন্ধিক ও কলামিস্ট, পাবনা
আরএ/