ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ বন্ধের আহ্বান বিএনপির

যুদ্ধরত দুই দেশের চলমান আলোচনার ধারাবাহিকতায় যুদ্ধ বন্ধ করে অবিলম্বে শান্তি ফিরিয়ে আনার জন্য সংশ্লিষ্ট সব পক্ষের প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানিয়েছে বিএনপি।
দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, বিএনপি জাতিসংঘের নেতৃত্বে গণতন্ত্র ও মানবাধিকারের পক্ষে প্রবাহমান বিশ্ব জনমত ও মূল্যায়নের পক্ষে বাংলাদেশসহ বিশ্বের সব শক্তিকে সুদৃঢ় অবস্থান গ্রহণের প্রত্যাশা ব্যক্ত করছে।
শুক্রবার (৪ মার্চ) খালেদা জিয়ার গুলশানের রাজনৈতিক কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে মির্জা ফখরুল এ কথা বলেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, বিএনপি মনে করে দেশবাসীর স্বতঃস্ফূর্ত জনমত গোটা বিশ্বের মানবাধিকারের সঙ্গে মিশে আছে। কিন্তু দেশের ক্ষমতাসীন সরকার ক্ষমতা কুক্ষিগত করে রাখতে দেশের জনগণের মতের বিপক্ষে অবস্থান নিয়ে জাতিসংঘের প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দান থেকে বিরত থেকেছে। যা বাংলাদেশের সংবিধান ও গণতন্ত্র মানবাধিকার নীতিমালার পরিপন্থী।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘গত ৭ দিন ধরে রাশিয়া ইউক্রেনের উপর অমানবিক আক্রমণ এবং তার ফলে সৃষ্ট ১০ লাখ মানুষের উদ্বাস্তু সমস্যা নিয়ে শতশত ইউক্রেনবাসীর সঙ্গে একজন বাংলাদেশি নাবিকের মৃত্যু হওয়ায় আমরা গভীর শোক ও উদ্বেগ প্রকাশ করছি।’
এই আক্রমনকে ইউক্রেনের উপর চাপিয়ে দেওয়া যুদ্ধ ও তার স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বকে সুস্পষ্ট লঙ্ঘন বলে মনে করে বিএনপি।
এই ধরনের আধিপত্যবাদের অপতৎপরতার জাতিসংঘের সনদ অনুযায়ী অপরাধ।
তিনি বলেন, ইতোমধ্যে মাত্র পাঁচটি দেশ বাদে সব দেশ জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে এই আক্রমণের বিরুদ্ধে নিন্দা প্রস্তাব গ্রহণ করেছে। মাত্র পাঁচটি দেশের বিরোধিতা কয়েকটি দেশের পক্ষ গ্রহণে বিরত অবস্থান বাদে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, কানাডা, ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ বিশ্বের প্রায় সব দেশ এ আক্রমণের নিন্দা জানিয়ে অবস্থান নিয়েছে। বাংলাদেশের জনগণ ইউক্রেনসহ যে কোনো দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বের মৌলিক অধিকার রক্ষা করে, এবং তার সীমা লঙ্ঘনকে বিরোধিতা করে। কিন্তু বাংলাদেশের জবাবদিহিতাহীন কর্তৃত্ববাদী সরকার জনগণের ভোটে নির্বাচিত নয় বলেই জনমতকে তোয়াক্কা করে না।
বিএনপি সব দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষার পক্ষে, গণতন্ত্র ও মানবাধিকার রক্ষার স্বার্থে প্রবাহমান বিশ্ব জনমতের পক্ষে।
রোহিঙ্গা ইস্যুতে মির্জা ফখরুল বলেন, মিয়ানমারের রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে জাতিগতভাবে নির্মূল করা এবং মানবাধিকার লংঘন করে জাতিসংঘের নিন্দা প্রস্তাবের ক্ষেত্রেও সরকার দেশবাসীর আশা-আকাঙ্ক্ষার বিপরীত ভূমিকা নিয়েছে। রোহিঙ্গা ইস্যুতে বাংলাদেশ সরকার কার্যকর পদক্ষেপ নিতে ব্যর্থ হয়েছে। বাংলাদেশ সরকারের কর্মকাণ্ডে এটাই প্রতীয়মান হয় যে বাংলাদেশ সরকার নতজানু পররাষ্ট্র নীতি অনুসরণ করছে, যা বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বকে হুমকির মুখে ফেলেছে।
সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের জবাবে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ইউক্রেনে অবস্থানরত বাংলাদেশি নাগরিকদের বিষয়ে সার্বিক দায়িত্ব বাংলাদেশ সরকারের, কিন্তু সরকার যে অবস্থান নিয়েছে তাদের যে নৈতিক অবস্থান দেখতে পাচ্ছি তাতে করে মনে হয় না তাদের বিবেচনায় এই বিষয়গুলো আছে।
এমএইচ/আরএ/
