‘সুষ্ঠু-নিরপেক্ষ নির্বাচন হলে রাষ্ট্র পরিচলানায় আসবে বিএনপি’
ফাইল ফটো
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেছেন, এদেশে নির্দলীয় সরকারের অধীনে সুষ্ঠু-নিরপেক্ষ নির্বাচন হলে বিএনপি ৯১ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারির নির্বাচনের মতো রাষ্ট্র পরিচলায় আসবে, জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠিত হবে। তাই আওয়ামী লীগ নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন দিতে চায় না।
রবিবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) বিকালে ‘২৭ ফেব্রুয়ারি ১৯৯১ সালে তত্ত্বাবধায়কের অধীনে গ্রহণযোগ্য নির্বাচন একটি রোলমডেল’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন। সভাটির আয়োজন করে বিএনপির স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন কমিটি।
খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, আমরা বিশ্বাস করি শেখ হাসিনা ও ফ্যাসিবাদের অধীনে আর কোনো নির্বাচন হতে পারে না। সুষ্ঠু নির্বাচনের তো প্রশ্নই উঠে না।
তিনি বলেন, ‘দেশে এরশাদ সরকার যেমন ৯ বছর স্বৈরাচার হিসেবে সরকার পরিচালনা করেছিল। সেই স্বৈরাচারী সরকারকে আন্দোলন সংগ্রামের মাধ্যমে পতন ঘটানো হয়েছিল। একই রাজনৈতিক পরিস্থিতি দেশে বিরাজমান। আজকে বিনাভোটের নির্বাচন বয়কটের সরকার ও ভোট ডাকাতির সরকার হয়ে আওয়ামী লীগ দেশ পরিচালনা করছে। যাদের আন্তর্জাতিকভাবে এখন গণতান্ত্রিক সরকার বলা হয় না। গণতান্ত্রিক দেশ বলা হয় না, এটাকে হাইব্রিড দেশ বলা হচ্ছে। যা অত্যন্ত দুঃখজনক, লজ্জাজনক। তাই আজকে আবারো ৯০ সালের ছাত্র আন্দোলনের সেই প্রেক্ষাপট সৃষ্টি হয়েছে।’
সভাপতির বক্তব্যে খন্দকার মোশাররফ বলেন, ‘স্বৈরাচার এরশাদকে বিদায় করার যে আন্দোলন এখন সেই আন্দোলনের বিকল্প নেই। এর জন্য দলের সব পর্যায়ের নেতাকর্মীকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। কারণ বার বার আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসে গণতন্ত্রকে হত্যা করেছে। ৭৪ সালে দুর্ভিক্ষ হয়েছে আজকেও বাংলাদেশে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির যে অবস্থা আবার সেই ঘটনার পুনরাবৃত্তি হতে পারে। সে জন্য বিএনপির পবিত্র দায়িত্ব অনির্বাচিত সরকারের হাত থেকে দেশ ও দেশের মানুষকে রক্ষা করা। তাই আসুন আন্দোলন সংগ্রামে অবতীর্ণ হই, স্বৈরাচার সরকারকে হঠাই, দেশে একটি নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকার প্রতিষ্ঠা করে তার অধীনে নির্বাচন করে একটি জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করি।’
আলোচনা সভায় স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেন, ‘শেখ হাসিনা ও তার দল আওয়ামী লীগ মানুক আর না মানুক দেশে আগামী দিনে নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকার ছাড়া কোনো নির্বাচন হবে না, নির্বাচন হতে পারবে না।’
স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘বাংলাদেশে এখন কোনো সরকার নেই। যারা সরকারে আছে তারা অনির্বাচিত তাই তাদের ইচ্ছে মতো দেশ চলছে। ক্ষমতা ধরে রাখতে তারা দেশে তাদের বিরোধী কোনো রাজনৈতিক দল থাকুক সেটাও বিশ্বাস করতে চায় না।’
স্থায়ী কমিটির সদস্য সেলিমা হোসেন বলেন, ‘বেঁচে থাকার নিরাপত্তা নাই কারণ রক্তচোষা দানবীয় সরকার প্রতিনিয়ত দেশের জনগণের রক্ত চুষে খাচ্ছে। দেশের মানুষের সব অধিকার কেড়ে নিয়েছে।’
স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু বলেন, ‘হতাশ হবেন না, হতাশার কিছু নেই। বিএনপি রাজপথে আছে রাজপথেই থাকবে। নির্দলীয় সরকার ব্যবস্থা আদায় করার আগে ঘরে ফিরবে না। তাই এইসব চুলকানি দেওয়া নির্বাচন কমিশন দিয়ে কিছু হবে না।’
ভাইস চেয়ারম্যান আহমেদ আযম বলেন, ‘বর্তমান নির্বাচন কমিশন থাকবে না। এদের অধীনে দেশে কোনো নির্বাচন হবে না। দলীয় সরকারের অধীনে বিএনপি নির্বাচনে যাবে না। নির্দলীয় সরকারের অধীনে দেশে নির্বাচন হবে, জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠিত হবে।’
ভাইস চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার শাহজাহান ওমর বলেন, ‘নির্বাচন কমিশন ভালো হোক কিংবা মন্দ হোক, তাতে কিছু যায় আসে না। নির্বাচনের জন্য রাষ্ট্রযন্ত্রকে নিরপেক্ষ থাকতে হবে। সে জন্য নির্দলীয় সরকার ব্যবস্থা ছাড়া নির্বাচনের কোনো বিকল্প নেই।’
আলোচনা সভায় বক্তব্যে রাখেন—বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, ভাইস চেয়ারম্যান শওকত মাহমুদ, ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন শ্যামল প্রমুখ।
এমএইচ/আরএ/