বিডিআর বিদ্রোহে জড়িতদের সঙ্গে একাত্ম হয়েছে সরকার: মির্জা ফখরুল
একটা অদৃশ্য শক্তি যারা বাংলাদেশকে নতজানু করে রাখার জন্য নতুন নতুন কলাকৌশল অবলম্বন করে চলেছে, পিলখানায় বিডিআর বিদ্রোহের নারকীয় হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে, তাদের সঙ্গে একাত্ম হয়ে, তাদের লক্ষ্যগুলোকে চরিতার্থ করার জন্য কাজ করছে সরকার; বলেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
শনিবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি মিলনায়তনে পিলখানায় বিডিআর বিদ্রোহে নিহত শহিদদের স্মরণে আয়োজিত আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন তিনি।
ফখরুল বলেন, বাংলাদেশের নিরাপত্তা ধ্বংস করতেই বিডিআর বিদ্রোহের ঘটনা ঘটেছে। সেনাবাহিনীর মনোবল ধ্বংস করে দেওয়াই ছিলো বিডিআর বিদ্রোহের গভীর ষড়যন্ত্র। আজকে বাংলাদেশের সমস্ত প্রতিষ্ঠানগুলোকে ধ্বংস করে দিয়েছে, এরা বাংলাদেশের গণতন্ত্র, দেশের নিরাপত্তা ব্যবস্থা, নির্বাচন ব্যবস্থা, বিচার ব্যবস্থা, সমাজব্যবস্থাটা কে ধ্বংস করে দিয়েছে। লক্ষ্য একটাই বাংলাদেশকে একটি পরনির্ভরশীল নতজানু দেশ হিসেবে চিহ্নিত করে রাখা যাতে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে না পারে।
এসময় মির্জা ফখরুল প্রশ্ন করেন, বিডিআর হত্যাকাণ্ডের তদন্ত প্রতিবেদন, যেটা সেনাবাহিনী করেছিল তার আংশিক প্রকাশ করা হয়েছিল, তার মূল অংশ প্রকাশ করা হয়নি, এবং বেসরকারিভাবে যে তদন্ত প্রতিবেদন করা হয়েছিল সেটাও প্রকাশ করা হয়নি, কিন্তু কেন? কার স্বার্থে?
বিডিআর বিদ্রোহের মধ্য দিয়ে দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব বিপন্ন হয়েছে দাবি করে মির্জা ফখরুল বলেন, শুধুমাত্র রাজনৈতিক নির্দেশে সেদিন সেনাবাহিনীকে বিডিআর বিদ্রোহ নিয়ন্ত্রণ করার জন্য পাঠানো হয়নি। এটা প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব ছিল ঘটনার সঙ্গে সঙ্গে বিডিআর বিদ্রোহ নিয়ন্ত্রণে সেনাবাহিনীকে পাঠানো। তিনি সেটা করেননি, উপরন্তু বিদ্রোহীদের সঙ্গে বসে আলাপ আলোচনা করে সমাধানের চেষ্টা করেছেন।
গণহত্যার সঙ্গে সরকার জড়িত দাবি করে মির্জা ফখরুল বলেন, আজকে যে ভয়াবহ ফ্যাসিস্ট শক্তি, যারা দেশের উপর চেপে বসে মানুষের সমস্ত অধিকার গুলো কে হরণ করে নিচ্ছে, ভোটের অধিকার বাঁচার অধিকার কথা বলার অধিকার কেড়ে নিয়েছে, নিরাপদে চলাচলের অধিকার কেড়ে নিয়েছে, এমনকি বিশ্বের কাছে আজকে আমাদেরকে লজ্জিত হতে হচ্ছে, চিহ্নিত হতে হচ্ছে যে এখানে গণহত্যার সঙ্গে সরকার জড়িত। মানবাধিকার লঙ্ঘনের দায়ে একটি প্রতিষ্ঠানকে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। এটা আমাদের জন্য অত্যন্ত লজ্জার।
সরকারের বিরুদ্ধে ইস্পাত কঠিন ঐক্য গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়ে বিএনপির মহাসচিব বলেন, সমস্ত রাজনৈতিক শক্তিগুলোকে ঐক্যবদ্ধ করে, সমস্ত দেশপ্রেমিক ব্যক্তিদেরকে ঐক্যবদ্ধ করে ভয়াবহ এই ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে হবে। তাদেরকে পরাজিত করতে হবে এবং সত্যিকার অর্থে একটি নিরপেক্ষ সরকার প্রতিষ্ঠা করে একটি নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন গঠনের মাধ্যমে তাদের অধীনে নিরপেক্ষ নির্বাচন দিয়ে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে।
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সভাপতিত্বে সভায় অন্যদের মধ্যে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, নজরুল ইসলাম খান, ভাইস-চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার শাহজাহান ওমর, আলতাফ হোসেন চৌধুরী প্রমুখ বক্তৃতা করেন।
এমএইচ/কেএফ/