তত্ত্বাবধায়ক সরকার-ব্যালট পেপারে ভোট চাই: আমির খসরু
তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে ও ব্যালট পেপারের মাধ্যমে ভোটগ্রহণের দাবি জানিয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী।
তিনি বলেন, ‘আমাদের এবারের স্লোগান ‘হাসিনার বদলে কেয়ারটেকার, ইভিএমের বদলে ব্যালট পেপার।’
শুক্রবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর সেগুনবাগিচায় স্বাধীনতা হলে বাংলাদেশ ইয়ুথ ফোরামের উদ্যোগে অনুষ্ঠিত ‘নির্বাচন কমিশন গঠনের তামাশা এবং নিরপেক্ষ নির্বাচনের বাস্তবতা’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন।
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকারকে ভোট চোর আখ্যা দিয়ে আমির খসরু বলেন, পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে নতুন নতুন আইন হচ্ছে। সেখানে দুর্নীতিবাজ, মানবাধিকার লঙ্ঘনই শুধু নয়, ভোট চোর ও তাদের সহযোগী এবং ভোট চুরি দেখেও না দেখার ভান যারা করছেন, তাদের সবার বিরুদ্ধেও আইন হচ্ছে। বাংলাদেশেও এটির কাজ হবে।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, নির্বাচন কমিশন নিয়ে কোনো কথা বলতে চাই না। নির্বাচন কমিশন কোনো ফ্যাক্টর না। এদের নিয়ে কথা বলে সময় নষ্ট করে কোনো লাভ হবে না। নির্বাচন কমিশন হচ্ছে ভোট চোর আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠন। সহযোগী সংগঠন নিয়ে মাথা ঘামিয়ে লাভ নাই। আপনাকে আগে চোরকে ধরতে হবে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশে যারা ভোট চুরি করে ক্ষমতায় বসে আছে, তারা হচ্ছে প্রধান চোর। সময় এসে গেছে, এই চোরদের ধরতে হবে। প্রধান চোরকে ধরতে পারলে সহযোগী চোররা এমনিতেই ধরা পড়বে। নির্বাচন কমিশন নিয়ে মাথা না ঘামিয়ে আগামী নির্বাচনে নিরপেক্ষ সরকারের ওপর বাংলাদেশের জনগণকে জোর দেওয়া উচিত।
বিএনপির এই নেতা বলেন, দেশে দু’টি জিনিস পরিবর্তন করতে হবে। হাসিনার বদলে কেয়ারটেকার সরকার, ইভিএমের বদলে ব্যালট পেপার। এটাই এখন স্লোগান। কারণ এই দুটোই পরিবর্তন করতে পারলে সব কিছু সমাধান হবে।
দেশের সব গণতান্ত্রিক ও আইনের শাসনে বিশ্বাসী রাজনৈতিক দল ও ব্যক্তিদের উদ্দেশে আমির খসরু বলেন, যারা ভোট চুরি করে ক্ষমতায় বসে আছে, আপনারা যদি তাদের সহযোগী হয়ে যান তাহলে পরবর্তীকালে দেশের জনগণের চোখে শত্রু হয়ে যাবেন। দেশের জনগণের জানমালের দায়িত্বে যারা আছেন, তারা এই ভোট চোরের সহযোগী হবেন না। চোরের সহযোগী হলে বাংলাদেশের মানুষের কাছে শত্রু হয়ে যাবেন। আর একবার শত্রু হয়ে গেলে জনগণের কাছে আপনাদের কোনো গ্রহণযোগ্যতা থাকবে না।
রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর উদ্দেশে তিনি বলেন, ইতোমধ্যে বাইরের দেশ থেকে নিষেধাজ্ঞা এসেছে। নিষেধাজ্ঞা আসার অর্থ হচ্ছে চোর ও চোরের সহযোগীদের বিদেশিরা চিহ্নিত করেছে।
ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) পদ্ধতিতে ভোট গ্রহণের বিরোধীতা করে উপস্থিত নেতাকর্মীদের উদ্দেশে নেতা বলেন, চোর যদি সরিয়ে দেন, আবার দরজা জানালা যদি বন্ধ করতে না পারেন, সে তো আবার ঢুকবে। চোরও সরাতে হবে, বাড়ি সুরক্ষার জন্য দরজা জানালাও সুরক্ষা করতে হবে। আপনি চোর সরিয়ে ইভিএম রাখলেন তাহলে হবে না। এক সঙ্গে দুইটা করতে হবে। চোরকে ধরতে হবে, চোরের সরাঞ্জমও ইভিএম বাজেয়াপ্ত করতে হবে।
উন্নয়ন উন্নয়ন করে মানুষকে ধোকা দেওয়া যাবে না বলে মন্তব্য করেন আমির খসরু। তিনি বলেন, একদিকে ভোট চুরি, অন্যদিকে উন্নয়নের নামে বড় চুরি করছে। চুরির মাধ্যমে সরকার বাংলাদেশের তহবিল খালি করে ফেলেছে। এই চুরির কারণে বিদ্যুৎ, গ্যাস,পানির বিলসহ নানা প্রক্রিয়ায় মানুষের পকেট কাটা হচ্ছে। এতে ভোট চোর ও তাদের সহযোগীদের উন্নতি হচ্ছে।
আলোচনা সভায় সংগঠনের উপদেষ্টা সাঈদ আহমেদ আসলামের সভাপতিত্বে ও সভাপতি মুহাম্মদ সাইদুর রহমানের পরিচালনায় আরও বক্তব্য রাখেন- বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য আবু নাসের মোহাম্মদ রহমতুল্লাহ, ওলামা দলের সভাপতি অধ্যক্ষ মাওলানা শাহ নেসারুল হক ও তাতীঁ দলের যুগ্ম আহ্বায়ক ড. কাজী মনিরুজ্জামান মনির, কৃষকদলের সহসাধারণ সম্পাদক এম জাহাঙ্গীর প্রমুখ।
এমএইচ/আরএ/