দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির প্রতিবাদে বিএনপির ১১ দিনের কর্মসূচি
দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির প্রতিবাদে এবং উপজেলা পর্যায়ে ন্যায্যমূল্যে পর্যাপ্ত দ্রব্যসামগ্রির বিক্রির দাবিতে সারাদেশে বিক্ষোভ সমাবেশের ১১ দিনের কর্মসূচি ঘোষণা করেছে বিএনপি।
বৃহস্পতিবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) বিকালে এক সংবাদ সম্মেলনে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এ কর্মসূচি ঘোষণা করেন। গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এই সংবাদ সম্মেলন হয়।
কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে বিএনপির উদ্যোগে ২৬ ফেব্রুয়ারি রাজধানীতে (মহানগর উত্তর-দক্ষিণের উদ্যোগে), ২৮ ফেব্রুয়ারি জেলা পর্যায়ে এবং ২ মার্চ উপজেলা পর্যায়ে বিক্ষোভ সমাবেশ হবে। ৬ মার্চ ছাত্রদল, ৮ মার্চ যুবদল, ৯ মার্চ স্বেচ্ছাসেবক দল, ১০ মার্চ কৃষক দল, ১৪ মার্চ মহিলা দল ও ১৫ মার্চ তাঁতী দলের উদ্যোগে সমাবেশ হবে।
এছাড়া ১২ মার্চ বিএনপির উদ্যোগে সারাদেশে ইউনিয়ন এবং ওয়ার্ড পর্য়ায়ে হাট-বাজারে হাটসভা-পথসভা ও লিফলেট বিতরণ করা হবে।
কর্মসূচি ঘোষণা করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘প্রকৃতপক্ষে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্য চাল-ডাল-তেলসহ পানি, বিদ্যুৎ ও গ্যাসের মূল্য লাগামহীনভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে। এতে বাংলাদেশের মানুষ আক্রান্ত হচ্ছেন আর্থিক দিক থেকে এবং তাদের প্রকৃত আয় অনেক কমে গেছে। বেশির ভাগ মানুষের একটা অংশ বলতে পারে না যে, তারা মধ্যবিত্ত থেকে নিম্নবিত্তে চলে গেছে এবং কিছু মানুষ মধ্যবিত্তে চলে আসছে। এটাই বাস্তবতা।’
‘এজন্য আমরা দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির প্রতিবাদে ও উপজেলা পর্যায়ে ন্যায্যমূল্যে পণ্য বিক্রির দাবিতে কর্মসূচি পালনের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এসব কর্মসূচিতে দলের সিনিয়র নেতরা অংশ নেবেন।’
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘আমরা মাঠ পর্যায়ে এসব কর্মসূচি নিয়ে যাওয়ার মাধ্যমে দেশবাসীকে সম্পৃক্ত করতে যাচ্ছি। আমরা এই সংবাদ সম্মেলনে মাধ্যমে দেশবাসীকে আহ্বান জানাচ্ছি তাদের প্রয়োজনে এসব কর্মসূচিতে যেন যোগ দেন।’
তিনি বলেন, ‘এই সরকারের কোথাও কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই। তাদের যেমন বাজারের ওপর নিয়ন্ত্রণ নেই। একইভাবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষার ক্ষেত্রে নিয়ন্ত্রণ নেই, উৎপাদনের ক্ষেত্রে নিয়ন্ত্রণ নেই। দুর্নীতির কারণে এমন একটা পর্যায় চলে গেছে যে, প্রতিটি ক্ষেত্রে ২০-২৮ শতাংশের জিনিসপত্রের দাম বেড়ে যাচ্ছে।’
‘বাজারের ক্ষেত্রে সিন্ডিকেটগুলো তৈরি করা হয়েছে তারা কৃত্রিমভাবে জিনিসপত্রের দাম বাড়িয়ে দিচ্ছে। এই সরকারের আমলে কোথাও কোনো জবাবদিহিতা নেই। সরকার চরম দুর্নীতির যে অ্যাফেক্ট, তার প্রভাব বাজারে পড়ছে এবং জনগণকে তার মাসুল দিতে হচ্ছে।’
গত ২২ ফেব্রুয়ারি দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সভাপতিত্বে দলের স্থায়ী কমিটির বৈঠকে এই কর্মসূচি চূড়ান্ত করা হয় বলে জানান মির্জা ফখরুল।
ওমিক্রনের বিস্তারের কারণে গত ১৪ জানুয়ারি খালেদা জিয়ার মুক্তি ও উন্নত চিকিৎসায় বিদেশ পাঠানোর দাবিতে জেলা পর্যায়ে বিএনপির যে চলমান সভা-সমাবেশের কর্মসূচি চলছিল তা স্থগিত করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিতি ছিলেন— দলের সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, সহ দফতর সম্পাদক বেলাল আহমেদ, চেয়ারপারসনের কার্যালয়ের শায়রুল কবির খান ও শামসুদ্দিন দিদার।
এমএইচ/আরএ/