বিএনপিকে দমিয়ে রাখা যাবে না: মোশাররফ
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেছেন, আওয়ামী লীগ সরকার জনবিচ্ছিন্ন হয়ে জোর করে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় টিকে থাকতে চায়। সেজন্য বিরোধী কণ্ঠকে স্তব্ধ করতে নির্যাতনের চরম পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। তবে গুম-খুন-মামলা-হামলা-নির্যাতন করে বিএনপিকে দমিয়ে রাখা যাবে না, সরকারেরও শেষ রক্ষা হবে না।
শনিবার (১০ সেপ্টেম্বর) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে (ডিআরইউ) বিএনপির ৪৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে জাতীয়তাবাদী সাংস্কৃতিক দলের উদ্যোগে ‘রাজনৈতিক সংকট উত্তরণের পথ’শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন তিনি।
খন্দকার মোশাররফ বলেন, আজকে দেশে গণতন্ত্র নেই, মানুষের ভোটাধিকার নেই, কথা বলার অধিকার নেই। জ্বালানি তেলসহ নিত্যপণ্যের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধিতে মানুষ দিশেহারা। ১৪ বছর ধরে গায়ের জোরে এই সরকার ক্ষমতায় রয়েছে। বিরোধী কণ্ঠকে স্তব্ধ করতে নির্যাতনের চরম পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে সরকার। গুম-বিচারবহির্ভূত হত্যা-মামলা-হামলা-নির্যাতন চালাচ্ছে। বিএনপির ৩৫ লাখের অধিক নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা দিয়েছে। মিথ্যা মামলায় খালেদা জিয়া ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে সাজা দেওয়া হয়েছে। কিন্তু মামলা-হামলা-নির্যাতন করে বিএনপিকে দমিয়ে রাখা যাবে না।
তিনি বলেন, ক্ষমতাসীনরা বলেন— তারা গণতন্ত্রের চেয়ে উন্নয়নকে গুরুত্ব দিচ্ছেন। কোথায় উন্নয়ন? দেশে উন্নয়নের নামে লুটপাট চলছে। মেগা প্রজেক্টের নামে দুর্নীতির মহোৎসব চলছে। ১০ হাজার কোটি টাকার পদ্মা সেতুতে এখন পর্যন্ত ৩৪ হাজার কোটি টাকা খরচ হয়েছে। এত টাকা দেশে রেখে কীভাবে সামলাবে, তাই বিদেশে পাচার করছে।
বিএনপির এই নেতা বলেন, বিদ্যমান সব সংকট থেকে দেশ ও দেশের মানুষকে বাঁচাতে হলে বিনা ভোটের এই সরকারকে ক্ষমতা থেকে বিদায় করে দেশে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এজন্য সব গণতান্ত্রিক শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে আন্দোলনের মাধ্যমে এদেরকে বিদায় করতে হবে। এর কোনো বিকল্প নেই।
বিএনপি ভাইস-চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু বলেন, ক্ষমতাসীনরা বলছেন— বিএনপি নাকি আগুন-রক্ত নিয়ে খেলছে। অতীতে রাজপথে রক্ত ঝরানো ছাড়া কোনো গণতান্ত্রিক আন্দোলনই সফল হয়নি। ৫২, ৬২, ৬৯, ৭১ এবং নব্বইয়ে আমরা তা দেখেছি। গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের চলমান আন্দোলনেও রাজপথে রক্ত ঝরছে। এই রক্ত বৃথা যাবে না। তীব্র আন্দোলনে এই সরকারকে বিদায় করে দেশে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করা হবে।
তিনি বলেন, একটি ভালো বাংলাদেশ গড়তে যা যা করা দরকার জনগণের দল হিসেবে বিএনপি তা করবে বলে আমি বিশ্বাস করি।
জাতীয়তাবাদী সাংস্কৃতিক দলের সভাপতি হুমায়ুন কবির বেপারীর সভাপতিত্বে এবং সহ-সভাপতি আবু ইউনুসের সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন— বিএনপির যুগ্ম-মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, নির্বাহী কমিটির সদস্য আবু নাসের মুহাম্মদ রহমাতুল্লাহ, ডেমোক্রেটিক লীগের সাধারণ সম্পাদক সাইফুদ্দিন আহমেদ মনি, সিনিয়র সাংবাদিক মোস্তফা কামাল মজুমদার, জাতীয়তাবাদী তাঁতী দলের যুগ্ম-আহ্বায়ক কাজী মনিরুজ্জামান মনির, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব মোশাররফ হোসেন ঠাকুর, জাতীয়তাবাদী সাংস্কৃতিক দলের শহীদুল ইসলাম সরকার, ডা. মজিবুর রহমান, এম কাদের নোমান প্রমুখ ।
এমএইচ/আরএ/