বাসায় চিকিৎসকদের নিবিড় পর্যবেক্ষনে থাকবেন খালেদা
দুই দিন এভারকেয়ার হাসপাতালে স্বাস্থ্য পরীক্ষা শেষে বাসায় ফিরেছেন খালেদা জিয়া। আপাতত বাসায় চিকিৎসকদের নিবিড় পর্যবেক্ষনে থাকবেন বিএনপি চেয়ারপারসন।
বুধবার (৩১ আগস্ট) সন্ধ্যা ৭টায় বিএনপি চেয়ারপারসন গুলশানের বাসা ‘ফিরোজা‘য় ফেরেন।
গত ২৮ আগস্ট মেডিকেল বোর্ডের সুপারিশে কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য বসুন্ধরার এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি হন।
খালেদা জিয়া বাসায় পৌঁছানোর পর তার ব্যক্তিগত চিকিৎসক অধ্যাপক এজেডএম জাহিদ হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, 'ম্যাডাম বাসায় ফিরেছেন। আপাতত তার চিকিৎসা বাসায় হবে। মেডিকেল বোর্ডের বিশেষজ্ঞদের সার্বিক তত্ত্বাবধায়নে তিনি থাকবেন।'
'উনি আপনাদের মাধ্যমে দেশবাসীর কাছে দোয়া করার অনুরোধ জানিয়েছেন।'
তিনি বলেন, 'হাসপাতালে কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে মেডিকেল বোর্ড উনার (ম্যাডাম) চিকিৎসায় কিছু পরিবর্তন করেছেন। আপাতত উনার কিছু উন্নতি দেখা যাওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে মেডিকেল বোর্ড উনাকে বাসায় যেতে ছুটি দিয়েছেন।'
হাসপাতালের ছাড়পত্রে বলা হয়েছে যে, উনার যে চিকিৎসা চলছে, সেই চিকিৎসা উনাকে সার্বক্ষনিকভাবে মেডিকেল বোর্ডের সদস্যদের সার্বিক তত্ত্বাবধায়নে থাকতে হবে। আলহামদুলিল্লাহ উনি আজকে একটু বেটার ফিল করার কারণেই আপাতত উনাকে হাসপাতাল থেকে রিলিজ দেয়া হয়েছে।'
সংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময়ে বিএনপির আমান উল্লাহ আমান, আবদুস সালাম, নাজিম উদ্দিন আলম, কামরুজ্জামান রতন, সুলতান সালাহউদ্দিন টুকু, আবদুল কাদির ভুঁইয়া জুয়েল ও ডা. আল মামুন উপস্থিত ছিলেন।
এভারকেয়ার হাসপাতালের বিশেষজ্ঞ চিকিতসক অধ্যাপক শাহাবুদ্দিন তালুকদারের নেতৃত্বে একটি মেডিকেল বোর্ডের তত্ত্বাবধায়নে খালেদা জিয়া চিকিৎসা নিচ্ছেন।
সবশেষ গেল ১১ জুন এভারকেয়ার হাসপাতালে খালেদা জিয়ার হৃদপিণ্ডের ব্লক অপসারণ করে একটি ‘স্টেন্ট’ বসানো হয়েছিল।
৭৮ বছর বয়সী খালেদা জিয়া বহু বছর ধরে হৃৎপিণ্ডের রক্তনালীতে ব্লক, আর্থ্রাইটিস, ডায়াবেটিস, কিডনি, ফুসফুস, চোখের সমস্যাসহ নানা জটিলতায় ভুগছেন।
২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় সাজা হলে কারাগারে যেতে হয় সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে। পরে জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলাতেও তার সাজার রায় আসে।
দেশে করোনাভাইরাস মহামারী শুরুর পর খালেদা জিয়ার পরিবারের আবেদনে ২০২০ সালে ২৫ মার্চ তাকে নির্বাহী আদেশে সাময়িক মুক্তি দেয় সরকার। শর্ত দেওয়া হয়, তাকে দেশেই থাকতে হবে।
কারাগার থেকে বেরিয়ে খালেদা জিয়া গুলশানের বাসা ফিরোজায় ওঠেন, এখন সেখানেই তিনি থাকছেন। ২০২১ সালে এপ্রিলে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার পর অসুস্থতার কারণে খালেদা জিয়াকে ছয় দফায় ঢাকার বসুন্ধরায় এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিতে হয়েছে।
গত বছর এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পর তার ‘পরিপাকতন্ত্রে’ রক্তক্ষরণ এবং লিভার সিরোসিসে আক্রান্ত হওয়ার কথাও জানান চিকিৎসকরা।
নানা জটিলতার উন্নত চিকিৎসার দাবি করে বিএনপি চেয়ারপারসনকে বিদেশে পাঠানোর জন্য কয়েক দফা আবেদন করেছিলেন তার ভাই শামীম এস্কান্দার। কিন্তু সাময়িক মুক্তির শর্তে কথা উল্লেখ করে প্রতিবারই তা নাকচ করেছে সরকার।
এমএইচ/এএস