ত্যাগ স্বীকারের প্রকৃষ্ট উদাহরণ বঙ্গবন্ধু: কে এম খালিদ
সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ বলেছেন, একটি মানুষ কত বেশি ত্যাগ স্বীকার করতে পারেন, তার প্রকৃষ্ট উদাহরণ বঙ্গবন্ধু।
তিনি বলেন, ‘ভারতবর্ষে বঙ্গবন্ধুর মতো এমন কোনো রাজনীতিক বা নেতা নেই যিনি দেশের জন্য নিজের জীবনকে বিসর্জন দিয়েছেন, এত ত্যাগ-তিতিক্ষা স্বীকার করেছেন।’
বুধবার (১৭ আগস্ট) রাজধানীতে জাতীয় গ্রন্থকেন্দ্র মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৭তম শাহাদতবার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস-২০২২ উপলক্ষে জাতীয় গ্রন্থকেন্দ্র আয়োজিত বিশেষ পাঠ-কার্যক্রমে অংশগ্রহণকারী সেরা পাঠক-শিক্ষার্থীদের মাঝে সনদপত্র ও পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন প্রতিমন্ত্রী।
বক্তব্যে তিনি বলেন, ‘১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট সপরিবারে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যায় জড়িত ষড়যন্ত্রকারীদের খুঁজতে কমিশন গঠন করা হচ্ছে। এর মাধ্যমে বঙ্গবন্ধু হত্যার কুশীলবদের খুঁজে বের করা হবে, এর নেপথ্যে কারা ছিল সেসব ষড়যন্ত্রকারীদের খুঁজে বের করা হবে।’
কমিশন গঠনের উদ্দেশ্য ব্যাখ্যা করে প্রতিমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের ভবিষ্যৎকে বদলে দেওয়ার জন্য যে কলঙ্কিত প্রচেষ্টা নেওয়া হয়েছিল, যে নৃশংস হত্যাকাণ্ড ঘটানো হয়েছিল তার সঙ্গে কারা জড়িত ছিল, নতুন ও ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে সেটা জানানোর উদ্দেশে এই কমিশন গঠন করা হচ্ছে।
সংস্কৃতিসচিব ও জাতীয় গ্রন্থকেন্দ্র পরিচালনা বোর্ডের চেয়ারম্যান মোঃ আবুল মনসুরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসাবে বক্তব্য রাখেন বিশিষ্ট লেখক ও সাংবাদিক সরাফ আহমেদ। শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন বিচারকমণ্ডলীর প্রতিনিধি সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব গোলাম কুদ্দুছ ও বেসরকারি গ্রন্থাগার প্রতিনিধি মো. শাহ নেওয়াজ। পাঠক প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন সীমান্ত পাঠাগার এর প্রতিনিধি কাশফিয়া বিনতে সোহা।
কে এম খালিদ বলেন, ভারতবর্ষের সকল ইতিহাসকে ছাপিয়ে গেছে বঙ্গবন্ধুর ইতিহাস। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আজীবন সংগ্রাম ও ত্যাগ-তিতিক্ষার মাধ্যমে শোষিত-বঞ্চিত বাঙালি জাতির জন্য একটি স্বাধীন- সার্বভৌম ভূখণ্ড উপহার দিয়েছেন।
সভাপতির বক্তব্যে সংস্কৃতি সচিব মোঃ আবুল মনসুর বলেন, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তার পরিবারের সদস্যদের প্রতি আমাদের তখনই প্রকৃত শ্রদ্ধা ও সম্মান জানানো হবে যখন আমরা তাদের জীবনযাপন ও ত্যাগের ইতিহাস জানবো এবং নিজেদের জীবনে অনুসরণ করব।
মো. আবুল মনসুর বলেন, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট হত্যাকাণ্ডের পর বঙ্গবন্ধুর দুই কন্যাকে আশ্রয় না দিয়ে তৎকালীন বেলজিয়ামের রাষ্ট্রদূত সানাউল হক ইতিহাসের আস্তাকুঁড়ে নিক্ষিপ্ত হয়েছে।
পরামর্শ দিয়ে সচিব বলেন, সাময়িক লাভের জন্য কোন কিছুর পেছনে দৌড়াবেন না। কেউ বিপদে পড়লে ভিডিও ক্লিপ তৈরি না করে তার পাশে দাঁড়ান, সহায়তা করুন।
অনুষ্ঠানে প্রতিমন্ত্রী সেরা ২০ জন পাঠক-শিক্ষার্থীর মাঝে সনদ ও পুরস্কার বিতরণ করেন। অনুষ্ঠানের শুরুতে সংগীত, আবৃত্তি ও নৃত্যের সমন্বয়ে সংক্ষিপ্ত সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশিত হয়।
প্রসঙ্গত, এবারের বিশেষ পাঠ কার্যক্রমে ঢাকা ও এর পার্শ্ববর্তী অঞ্চলের ২০টি বেসরকারি গ্রন্থাগারের ৩০০ পাঠক-শিক্ষার্থী প্রবাসী লেখক সরাফ আহমেদ রচিত ‘১৫ আগস্ট হত্যাকাণ্ড: প্রবাসে বঙ্গবন্ধুর দুই কন্যার দুঃসহ দিন’ গ্রন্থটি পাঠ এবং পাঠ-উত্তর অংশগ্রহণকারী গ্রন্থাগারসমূহ কর্তৃক তাদের নিজস্ব প্রক্রিয়ায় বাছাইকৃত/নির্বাচিত ৬০ সেরা পাঠক-শিক্ষার্থী বিচারকমণ্ডলীর উপস্থিতিতে বক্তব্য আকারে প্রতিক্রিয়া উপস্থাপনের মাধ্যমে সরাসরি এ কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করে।
প্রাথমিকভাবে গ্রন্থাগার কর্তৃক নির্বাচিত ৬০ জন পাঠক-শিক্ষার্থীর মধ্য থেকে সেরা ২০ জন পাঠক নির্বাচনের লক্ষ্যে ৫ সদস্য বিশিষ্ট একটি বিচারক প্যানেল গঠন করা হয়। বিচারক-প্যানেলে ছিলেন সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি গোলাম কুদ্দুছ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ও কবি মাসুদুজ্জামান, বিশিষ্ট আবৃত্তিশিল্পী ড. ভাস্বর বন্দ্যোপাধ্যায় ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ও বিশিষ্ট আবৃত্তিশিল্পী রূপা চক্রবর্তী।
এমএ/এমএমএ/