ফয়সালা হবে রাজপথে: মোশাররফ
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেছেন, ‘অবৈধ সরকার আর ক্ষমতায় টিকে থাকতে পারবে না। আমাদের নেতা তারেক রহমান ঘোষণা দিয়েছেন ফয়সালা হবে রাজপথে। ফয়সালা করার দ্বায়িত্ব জনগণকে সঙ্গে নিয়ে বিএনপি নেতাকর্মীদের।’
তিনি বলেন, ‘এক সময় গণতন্ত্র হত্যা করেছিল, আমাদের নেত্রী খালেদা জিয়া গণতন্ত্র ফিরিয়ে এনেছিলেন। খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে হবে। তারেক রহমানকে দেশে এসে রাজনীতি করার সুযোগ দিতে হবে।’
বৃহস্পতিবার (১১ আগস্ট) রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে এক সমাবেশে বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
আন্দোলনের মাধ্যমে এই সরকারকে হটাতে হবে। আন্দোলনের কোনো বিকল্প নেই। সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে যার যার অবস্থান থেকে রাজপথে নামতে হবে। এ সময় তিনি দেশের অর্থনীতির দূবস্থার বিষয়টি তুলে ধরেন।
দল হিসেবে বিএনপি শেষ হয়ে যাবে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওয়াবদুল কাদেরের দেওয়া এমন বক্তব্যের সমালোচনা করে বর্ষীয়ান এই রাজনীতিবিদ বলেন, ‘নাম বলে কারও দাম বাড়াতে চাই না। আজকের সমাবেশের উপস্থিতি প্রমাণ করে বিএনপি নয় বিদায় হবে এই অবৈধ সরকারের।
স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেন, গত সাড়ে ছয় বছর দশ লক্ষ কোটি টাকা পাচার করেছে। এই সরকারের বিচার করতে হবে। বিএনপি ১৯ টাকা কেজি চাল খায়েছে এই সরকার ৫০ টাকা কেজি চাল বিক্রি করছে....এভাবে অনেক বলতে পারব, এই যে মানুষের পকেট কাটল...।
তিনি বলেন, দেশের মানুষের উপর নির্যাতন চালাচ্ছে। নেতা-কর্মীরা জেল খাটতে খাটতে দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেছে।
অর্থনীতির বর্তমান অবস্থা তুলে ধরে দলের স্থায়ী কমিটির আরেক সদস্য ড. আবদুল মঈন খান বলেন, বাংলাদেশে কেন দেউলিয়া হবে না? দেশের টাকা বিদেশে পাচার হয়ে গেছে। এই টাকা কারও বাবার টাকা না। জনগণের ট্যাক্সের টাকা। এই সরকারকে আর ক্ষমতায় রাখা যাবে না। সবাইকে ঐক্যবদ্ধ করে জনগণের পক্ষের সরকার প্রতিষ্ঠায় এই সরকারকে প্রতিহত করব। নির্দলীয় সরকার প্রতিষ্ঠা করে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করব।
দলের স্থায়ী কমিটির আরেক সদস্য সেলিমা রহমান বলেন, দেশকে সরকার খাদের কিনারায় দাঁড় করিয়েছে। জনগণকে ঐক্যবদ্ধ করে নিরপেক্ষ সরকারের দাবিতে আন্দোলনের মধ্য নিয়ে জনগণের সরকার গড়ে তুলতে হবে।
দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেন, সরকার লুটপালট করে দেশেটাকে মিউজিয়াম বানিয়ে ফেলেছে। লুটপাটের হাত থেকে দেশেকে বাঁচাতে হলে বিএনপি যে আন্দোলন শুরু করেছে এটাকে এগিয়ে নিতে হবে। রাজপথ দখল করতে হবে। নিরপেক্ষ সরকারের অধিনে সুষ্ঠু নির্বাচন আদায় করতে হবে।
ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল আউয়াল মিন্টু বলেন, বাংলাদেশ আজ লন্ঠিত। এই দুর্নীতিবাজ সরকারের লুন্ঠন থেকে বাংলাদেশকে রক্ষা করা এখন সর্ববৃহত রাজনৈতিক বিএনপির ওপর একটা ঈমানি দায়িত্ব। আমি নেতৃবৃন্দকে বলব, আপনারা সবাই মিলে এই লুন্ঠনকারীদের হাত থেকে বাংলাদেশকে বাঁচাই।
শেখ হাসিনার উদ্দেশে বিএনপি'র ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু বলেছেন, জনগনের পার্লামেন্টে প্রস্তাব পাস হয়ে গেছে। আপনি ক্ষমতায় থাকতে পারবেন না।
দুদু বলেন, এই সমাবেশে প্রমাণ করেছে এই দেশে কোনো চোর, লুটেরা থাকতে পারবে না।কথা পরিষ্কার, আপনারা (আওয়ামী লীগ) গণতন্ত্র হত্যা করবেন আর ক্ষমতায় থাকবেন এদেশের জনগণ এটা মেনে নেবে না।
সরকারের উদ্দেশে তিনি বলেন, এখনো সময় আছে। আমাদের নেত্রী গণতন্ত্রের মাতা বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিন। এখনো সময় আছে বাংলাদেশের ভবিষ্যতের প্রধানমন্ত্রী তারেক রহমানকে দেশে আসতে দিন। না হলে এদেশের জনগণ ক্ষমতা থেকে টেনে নামাব। আজকের এই সভা প্রমাণ করেছে আর বেশিদিন আপনারা ক্ষমতায় থাকতে পারবেন না।
সভাপতির বক্তব্যে ঢাকা মহানগর বিএনপি দক্ষিণের আহ্বায়ক আবদুস সালাম বলেন, এখনও কিন্তু আমরা আসতে আসতে যাইতেছি, হরতাল দেইনি, বেশি ভাড়াভাড়ি করলে...
তিনি বলেন, গুম, হত্যার বিচার এমনি এমনি যাবে না। আওয়ামী লীগ মনে করে ছিল খালেদা জিয়াকে জেলে নিলে বিএনপি ভেঙে যাবে। কিন্তু তারেক রহমানের নেতৃত্ব বিএনপি ঐক্যবদ্ধ, অনেক বেশি শক্তিশালী।
ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আমান উল্লাহ আমান বলেন, আজকের সমাবেশে যোগ দিতে ঢাকাবাসী ঘর থেকে বেরিয়ে এসেছে। সরকারের অনিয়ম ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে প্রতিবাদে সোচ্চার হচ্ছেন।
তিনি বলেন, প্রয়োজনে লাশ হব তবুও এই নির্বাচিত সরকারকে ক্ষমতায় থাকতে দিব না।
ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির সদস্য সচিব আমিনুল হক ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সদস্য সচিব রফিকুল আলম মজনুর সঞ্চলনায় ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক আবদুস সালাম সমাবেশে সভাপতিত্বে বক্তব্য দেন, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল আউয়াল মিন্টু, ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন, অ্যাডভোকেট জয়নাল আবেদীন, নিতাই রায় চৌধুরী, শামসুজ্জামান দুদু, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীসহ বিএনপির সিনিয়র নেতারা বক্তব্য দেন।
এমএইচ/এমএমএ/