গণ অধিকার পরিষদের সঙ্গে আলোচনায় সন্তুষ্ট ফখরুল
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে আওয়ামী লীগ অত্যন্ত পরিকল্পিতভাবে দেশে গণতন্ত্রকে ধ্বংস করেছে।
তিনি বলেন, ‘একদলীয় শাসনব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করার জন্য আওয়ামী লীগ রাষ্ট্রের সকল গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে ধ্বংস করে দিয়েছে। গণ অধিকার পরিষদের সঙ্গে আলোচনা অত্যন্ত সন্তুষ্ট হয়েছি, খুশি হয়েছি যে তারা আমাদের সঙ্গে সকল বিষয়ে প্রায় একই মত ধারণ করেন। বিশেষ করে এই সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচন নয়। সে বিষয়ে তারা একমত হয়েছেন। এই সরকারকে আর ক্ষমতায় থাকতে দেওয়া যায় না কারণ এই সরকার অত্যন্ত চতুরতার সঙ্গে সচেতনভাবে বাংলাদেশের অর্জিত গণতন্ত্র, বাক স্বাধীনতা সাম্য ও সামাজিক মূল্যবোধ সেই সঙ্গে ন্যায়বিচারের যে অধিকার তার সবকিছু ধ্বংস করে দিয়েছে। এই কারণে এই সরকারকে সরানোর জন্য জনগণকে সঙ্গে নিয়ে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনে এক পথ হয়েছি।’
বুধবার (৩ আগস্ট) গণধিকার পরিষদের সঙ্গে সংলাপ শেষ এসব কথা বলেন মির্জা ফখরুল।
সংলাপে বিএনপির পক্ষ থেকে দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, দলের মিডিয়া সেলের আহ্বায়ক জহির উদ্দিন স্বপন অংশ নেন।
তিনি বলেন, ‘এই আন্দোলন আমরা যুগপৎভাবে করবো এবং এই আন্দোলন করে সরকারকে পদত্যাগে বাধ্য করা, সংসদ ভেঙে দেওয়া, সঙ্গে সঙ্গে একটা নিরপেক্ষ সরকারের হাতে নির্বাচনকালীন সময়ে তাদের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করা। পরে সকল রাজনৈতিক দলগুলোর মতামতের মধ্য দিয়ে নতুন নির্বাচন কমিশন গঠনে সকল দলের অংশগ্রহণ মধ্য দিয়ে সকলের কাছে গ্রহণযোগ্য একটি নির্বাচন অনুষ্ঠান করা, তার মাধ্যমে জনগণের সংসদ ও সরকার গঠন করা। যে সরকার সত্যিকার অর্থে জনগণের প্রতিনিধিত্ব করবে এবং তারপরে রাষ্ট্র গঠনের জন্য সবাইকে নিয়ে জাতীয় সরকার গঠন করব। এবং যে বিষয়গুলো আমরা মনে করি পরিবর্তন সংস্কার হওয়া দরকার মেরামত করার জন্য আমরা সেই ব্যবস্থা গ্রহণ করব।’
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘বিএনপি কী করেছে কী করেনি সেটা দেশের মানুষ সবাই জানে। আপনারা এটাও জানেন একদলীয় বাকশাল শাসনব্যবস্থা থেকে বহুদলীয় গণতন্ত্র ফিরিয়ে এনেছিল বিএনপি। এই দেশে গণমাধ্যমের পুরোপুরি স্বাধীনতা নিশ্চিত করেছে বিএনপি। বিচারপতিদের নিয়োগের ব্যাপারে কমিশন গঠনের কথা প্রথম বলেছেন জিয়াউর রহমান।
তিনি আরও বলেন, ‘এটা আমাদের ভিশন ২০৩০ তে উল্লেখ আছে । রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী ক্ষমতা ভারসাম্যের কথাও উল্লেখ আছে। তাই এই মুহূর্তে গণ অধিকার পরিষদের চিন্তা এবং আমাদের চিন্তার মধ্যে ফান্ডামেন্টাল চিন্তা আছে বলে মনে করি না।’
তিনি বলেন, ‘সাংবাদিক ভাইদের অনুরোধ করে বলছি-সব সময় ইতিবাচক দিক থেকে সমর্থন করবেন। জাতির বর্তমান যে অবস্থায় শুধুমাত্র বিএনপি বা গণ অধিকার পরিষদ লড়াই করলেই সফলতা আসবে না। আপনাদেরকেও আপনাদের অবস্থান থেকে লড়াই করতে হবে আপনাদের স্বাধীনতা রক্ষা করার জন্য। ডিজিটাল সিকিউরিটি আইন আপনাদের ধ্বংস করে দিচ্ছে, বিভিন্ন নির্যাতনমূলক আইন আপনাদেরকে ধ্বংস করছে, আপনারা লিখতে পারছেন না প্রাণ খুলে।’
অনেক গুণী সাংবাদিক তারা দেশ ছেড়ে পালিয়ে গেছেন। শত শত সাংবাদিককে হত্যা করা হয়েছে। তাই এই লড়াই শুধু বিএনপি কিংবা গণ অধিকার পরিষদের লড়াই নয়। এটা জাতির লড়াই বেঁচে থাকার অস্তিত্বের লড়াই, আপনারাও এত শরিক হউন, যোগ করেন তিনি।
এমএইচ/এমএমএ/