দাবি না মানলে রাজপথেই সরকার পতন আন্দোলন: ফখরুল
নির্বাচনকালীন সরকারের দাবি না মানলে রাজপথেই সরকার পরিবর্তন করা হবে বলে জানিয়েছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
শনিবার (২৩ জুলাই) দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের জহুর হোসেন হলে ওভারসিজ করসপন্ডেন্ট অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশ (ওকাব) এর ‘মিট দ্যা ওকাব’ অনুষ্ঠানে দেশের চলমান পরিস্থিতিতে দলীয় লক্ষ্য তুলে ধরতে গিয়ে বিএনপি মহাসচিব এ কথা জানান।
তিনি বলেন, ‘এখন রাজপথেই একমাত্র সমাধান। সরকার যদি নিজেরা উদ্যোগ না নেয় অর্থাত এই অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে আমরা যে দাবিগুলো করেছি তা না মানে- রাজপথেই একমাত্র সমাধান।বাংলাদেশে তো বেশিরভাগ সময় দেখা গেছে যে, জনগনের স্বতঃস্ফূর্ত আন্দোলনের মধ্য দিয়ে পরিবর্তন হয়। আমরা অত্যন্ত আশাবাদী এবং আত্ম বিশ্বাসী যে, এবার জনগনের অকুন্ঠ সমর্থন নিয়ে আমরা সংগ্রামের মধ্য দিয়ে, আন্দোলনের মধ্য দিয়েই এই সরকারের পরিবর্তন আনতে পারব।’
দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন সম্ভব নয় উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘নির্বাচন তখনই সম্ভব হবে যখন দেশে একটি নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকার থাকবে। ওই সরকারের অধীনে একটি যে নির্বাচন কমিশন গঠন করা হবে সেই কমিশন নির্বাচন পরিচালনা করবে। তারপর আগে কোনো নির্বাচন কমিশনের পক্ষেই সম্ভব নয়। শুধু আমাদের কথা নয়, আগের এটিএম শামুসুল হুদা যে প্রধান নির্বাচন কমিশনার ছিলেন তিনিও বলেছেন দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন অত্যন্ত জটিল। পরবর্তিকালে কেএম নুরুল হুদা সাহেব ২০১৮ সালে একটা অত্যন্ত কলঙ্কময় নির্বাচন অনুষ্ঠান করেছেন তিনিও পরে বলেছেন, দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন অত্যন্ত কঠিন।’
‘আর বর্তমানে যিনি আছেন তিনি তো একেবারে হাল ছেড়ে দিয়েছেন মনে হয় আরকী। তিনি অলরেডি বলেই দিয়েছেন দলীয় সরকারের অধীনে খুব কঠিন হচ্ছে এবং এখানে যদি বিএনপি না আসে বা মূল বিরোধী দল যদি না আসে সেই নির্বাচন অর্থবহ হবে না। সেজন্য আমাদের মূল কথাটাই হচ্ছে নির্বাচনকালী তত্ত্বাবধায়ক সরকার এটাই হচ্ছে আমাদের দাবি।’
নির্বাচনকালীন সরকারের এজন্য সরকারকেই সংসদে আইন আনতে হবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘এটা সরকারকেই আনতে হবে। আমরা তো তাই করেছিলাম ১৯৯৬ সালে নতুন সংসদ হওয়ার পরে সারারাত জেগে সংসদ আইন পাস করে আমরা পদত্যাগ করেছিলাম। সংসদ বাতিল করা হয়েছিল। সেই নির্বাচনে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া ১১৬ টা আসনে বিরোধী দলে বসেছিলো। আমরা মেনে নিয়েছি। দ্যাট ইজ ডেমোক্রেসি।’
‘সেখানে আপত্তিটা কোথায় এই সরকারের?’
‘ব্যাক ডোরে সংলাপ নেই’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘ব্যাক ডোর বলে কোনো কথা নেই। আমাদের যা কিছু সব ফ্রন্ট ডোর।’
‘আমরা সবসময় সামনে থেকে প্রকাশ্যে একেবারে জনসভার মধ্য দিয়ে ঘোষণা দিচ্ছি যে, তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া বা নিরপেক্ষ সরকার ছাড়া বিএনপিসহ অনেকগুলো রাজনৈতিক দল আছে তারা ইতিমধ্যে বলে দিয়েছে কোনো নির্বাচনে যাবে না।’
তাহলে কি কোনো সহিংসতায় যাচ্ছে কি না প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ‘এটা তো নির্ভর করবে সরকারের ওপর। এই সরকার এখন ড্রাইভিং সিটে। প্রত্যেকবারই সরকারকেই উদ্যোগ নিতে হয় যেকোনো রাজনৈতিক সংকটের সমাধান কারার জন্য।’
‘তারা যদি কনফোনট্রেশন দেখতে না চায়, মারামারি কাটাকাটি দেখতে না চায় তাহলে সরকারকে অবশ্যই আমরা যে দাবিগুলো দিয়েছি অর্থাত তাদেরকে পদত্যাগ করে নতুন একটা তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠনের যা ব্যবস্থা করা দরকার, বিধান করা দরকার যেটা আমরা করেছি সেইভাবে তাদের করতে হবে।’
আন্দোলনে জামায়াত ইসলামী অবস্থান কি হবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমরা সব রাজনৈতিক দলের সাথে কথা বলছি একটা জাতীয় ঐক্য তৈরি করার জন্য। সেখানে এখন পর্যন্ত যতগুলো রাজনৈতিক দলের সাথে কথা বলেছি একটা বিষয় আমরা সবাই একমত হয়েছি যে, আমরা যুগপথ আন্দোলনে যাবো। সুতরাং এখানে এ বিষয়ে কোনো বিভ্রান্তির সুযোগ নেই।’
ঢাকায় বিদেশ সংবাদদাতাদের সংগঠন ওকাবের অনুষ্ঠানে বিদেশী সংস্থা ও পত্রিকার সংবাদদাতাদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন বিএনপি মহাসচিব। এর আগে মহাসচিব দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি, সরকারের অপশাসন, নির্বাচনের বিষয়ে দলের অবস্থানসহ নানা বিষয় তুলে ধরেন।
সর্বশেষ ২০০১ সালে জাতীয় নির্বাচনের আগে ওকাবের এরকম অনুষ্ঠানে এসেছিলেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া।
‘সরকারের বিকল্প বিএনপিই’
সরকারের পরিবর্তে বিএনপি বিকল্প কিনা প্রশ্ন করা হলে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘অবশ্যই। বিএনপি সবচেয়ে বড় রাজনৈতিক দল এবং বিএনপি তিনবার রাষ্ট্র পরিচালনা করেছে, আমাদের নেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে সরকার পরিচালনা করেছে। তারও আগে বিএনপি দুইবার রাষ্ট্র পরিচালনা করেছে।’
‘বিএনপি হচ্ছে একমাত্র বিকল্প যা এই সমস্যার সমাধান করতে পারে।’
আগামী নির্বাচনে বিএনপি গেলে তার নেতা কে হবেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এই দলের নেতৃত্ব তো নির্ধারিত হয়ে আছে। দেশনেত্রী বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া-তিনি আমাদের নেত্রী, তার অবর্তমানে আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান আমাদের নেতা। সুতরাং এখানে কোনো অস্পষ্টতা নেই।’
‘যুগপথ আন্দোলন প্রসঙ্গে’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘যুগপথ আন্দোলনের অভিজ্ঞতা আমাদের আছে। আপনাদের নিশ্চয় মনে আছে- ১৯৯০ সালেও যে আন্দোলন হয়েছিলো-৫ দল, ৭ দল ও ৮ দল। সেখানে কিন্তু যুগপথ আন্দোলন হয়েছিল। আজকে বলতে পারেন সেই মডেলে সমস্ত রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে কথা বলছি। সবাই যার যার অবস্থান থেকে তারা আন্দোলন শুরু করবে। আন্দোলনের মধ্য দিয়েই আন্দোলনের ধারাই নিয়ে তারপরে কোনদিকে আন্দোলন যাবে।’
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘নির্দলীয় সরকারের প্রশ্নে আমরা ২০১৪ সাল থেকে আন্দোলন করছে। আমরা সেই আন্দোলনেই আছি। আমরা যখন জনগনকে সঙ্গে নিয়ে রাস্তায় নামব, আন্দোলনই বলে দেবে আন্দোলনের ধারা কোন পথে যাবে।’
‘সবটাই সম্ভব যদি সরকার চায়’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘সবটাই সম্ভব যদি সরকার চায়। আমরা পরিস্কার করে বলেছি যে, আমরা নির্বাচনে তখনই যাব যদি একটি তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন হয়, নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন হয় এ ব্যাপারে কোনো প্রশ্ন নেই।’
‘সংবিধান বহুবার পরিবর্তন হয়েছে নির্বাচনের জন্য। ১৯৯০ সালে হয়েছে, পরবর্তিকালে আওয়ামী লীগ তো সংবিধানের বহু অংশ পরিবর্তন করে দিয়েছে। সুতরাং চাইলে অবশ্যই হবে। ডকট্রিন অব নেসেসিটি বলে একটা কথা আছে। সেই প্রয়োজনে জনগনের স্বার্থে..। এখন এটাই সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন যে জনগনের স্বার্থে প্রয়োজন হলে সংবিধান পরিবর্তন করে নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের ব্যবস্থা করতে হবে।’
‘দাবি না মানলে সংলাপও নয়’
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘নির্দলীয় সরকারের রুপরেখার প্রশ্ন তখনই আসবে যখন সরকার আমাদের সঙ্গে নিরপেক্ষ সরকারের গঠনের বিষয়ে একমত হবেন, তখনই আসবে। তার আগে না।’
‘সরকার যদি বলে যে, নির্বাচনকালীন সরকার, নিরপেক্ষ সরকার, সহায়ক সরকার গঠন করা হবে-আমরা একমত তখন কীভাবে হবে সেটা নিয়ে আমরা চিন্তা করে দেখব। তাহলে কী আলোচনা সুযোগ আছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘না আলোচনার পথ কোথায়? সরকার যদি তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিষয়ে কথা বলতে চায় তখন আমরা সেটা দেখবো। তার আগে তো না। আগে তাদের (সরকর) তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিষয়ে একমত হতে হবে। তার আগে তো নয়, অন্যবিষয়ে তো নয়।’
‘নেতা-কর্মীদের জেলে খাটা সংখ্যা ৩০ লাখ’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমাদের নেতা-কর্মীদের জেলখাটার সংখ্যা কোনো মতেই প্রায় ৩০ লক্ষের কম নয়।যখনই মামলা হয়েছে সবাইকে জেলে যেতে হয়, জেলে গিয়ে জামিন নিয়ে বেরিয়ে আসতে হয়। গত পরশু আমার বিরুদ্ধে আরেকটা মামলা হয়েছে অর্থাত আমার ৮৬টা মামলার সঙ্গে আরেকটা যুক্ত হয়েছে। এই হচ্ছে বাংলাদেশের বর্তমান অবস্থা।’
‘দয়া করে একটু আমাদের অফিসে যাবেন দেখবেন বস্তায় বস্তা এফআইআরের কপি আছে।’
‘গণতান্ত্রিক দেশগুলোর কাছে বিএনপির প্রত্যাশা’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমরা সকল গণতান্ত্রিক দেশগুলোর কাছে একটাই প্রত্যাশা করি যে, বাংলাদেশে গণতন্ত্রকে শক্তিশালী করার জন্য সবাই যার যার জায়গা থেকে তারা তাদের ভূমিকা রাখবে।’
‘ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসনের নিন্দা’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হওয়ার কিছুদিন মধ্যেই আমরা স্টেটমেন্ট দিয়েছি।আমরা মনে করি যে, সব দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষার তার অধিকার আছে।ইউক্রেন একটা স্বাধীন দেশ। সেখানে কোনো ফরেন ইনভেশন আমরা কখনোই সমর্থন করিনি, আমরা করব না। আমরা প্রত্যেকটি দেশ যাতে স্বাধীনভাবে থাকতে পারে সেটাতে বিশ্বাস করি। আমরা রাশিয়ার ইনভেশনকে আমরা অবশ্যই নিন্দা জানিয়েছি।’
রাশিয়া-ইউক্রেনে খাদ্যপণ্য বর্হিবিশ্বে পাঠানোর সমঝোতার উদ্যোগকে কিভাবে দেখছেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এটা আমরা মনে করি যে, উভয় দেশেরই তাদের যে দায়িত্ববোধ আছে বিশ্বমানবতার প্রতি- এটা তারই পরিচয় বহন করে।’
‘বাংলাদেশের সঙ্গে শ্রীলংকার মিল কোথায়’
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘আমরা কয়েকটি বিষয় মিল দেখতে পারছি। অর্থনীতিবিদরা বলছেন, বিশেষজ্ঞরা বলছেন যেটা হচ্ছে জ্বালানি তেলের মূল্য বৃদ্ধি পেয়েছে আন্তর্জাতিকভাবে। যার প্রভাব ইতিমধ্যে বাংলাদেশে পড়েছে। গ্যাসের দাম বেড়েছে। আমরা পুরোপুরি আমদানি নির্ভর। এই সরকার ১৫ বছর ক্ষমতায় আছে তারা নিজস্ব গ্যাস উত্তোলনের পদক্ষেপ নেয়নি। আমদানি করা গ্যাসের দাম বেড়ে যাচ্ছে, ডলারের দাম বেড়ে যাচ্ছে এখন একটা বড় রকমের ক্রাইসিস শুরু হয়ে গেছে ইতিমধ্যে।’
‘সার কারখানাগুলো বন্ধ হয়ে যাচ্ছে, পোষাক কারাখানাগুলো অনেকে বিপদে পড়েছে গ্যাস না পাওয়ার কারণে। ফলে প্রতিযোগিতারর মধ্যে বেকায়দার মধ্যে পড়েছে।অন্যান্য শিল্পকারখানাগুলো জ্বালানি সংকটে পড়েছে। পরিবহন ব্যয় বেড়ে যাচ্ছে। অর্থনীতিবিদরা বলেছেন, বৈদেশিক মুজদের পরিমান নিচের দিকে যাচ্ছে, রেমিট্যান্সে কমে যাচ্ছে। শ্রীলঙ্কার মূল্য ক্রাইসিস ছিল রিজার্ভ শূন্য কোঠায় গিয়েছে। আজকে এই সরকার এমনভাবে প্রতারণা করে যে, রিজার্ভ ৪২ বিলিয়নের কথা বলে। এর মধ্যে সাড়ে ৭ বিলিয়ন এক্সপোর্ট ডেভেলপমেন্ট ফান্ডের নামে তারা এদেশের যারা রপ্তানি করে তাদেরকে ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে দিয়েছে। এই টাকা ফেরত নামার আসার সম্ভাবনা নেই। রপ্তানি কমে আসছে, উতপাদনের ব্যয় বাড়ছে। ফলে ওই ক্রাইসিসগুলো এখনে গভীর হচ্ছে। সেজন্য আমরা আশঙ্কা করছি যে এখানে শ্রীলঙ্কার মতো একটা অবস্থা তৈরি হতে পারে অর্থনৈতিক দিক দিয়ে।’
বিএনপির দাবি: সরকার পদত্যাগ
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘আমাদের সাজেশন একটাই-রিজাইন অ্যান্ড গিভ ইলেকশন। নির্বাচন দাও নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে। সেই নির্বাচিত সরকারই সমস্যার সমাধান করতে পারে। এই সরকার যারা দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত, তারা দুর্নীতির কারণে এই অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে তারা কোনোদিনই এই সমস্যার সমাধান করতে পারবে না।
আপনাদের দাবি পূরণ না হলে কি নির্বাচনে অংশ নেবেন কি না জানতে চাইলে বিএনপি মহাসচিব বলেন, আপনার নিশ্চয় মনে আছে ২০১৮ সালে আমরা কখন নির্বাচনে গিয়েছিলাম। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনার পরে আমরা নির্বাচনে গিয়েছি। সেখানে সেই আলোচনায় উনি (প্রধানমন্ত্রী) প্রতিশ্রুতি করেছেন এবং তিনি এ কথাও বলেছিলেন যে, আমি বঙ্গবন্ধুর মেয়ে আমি আপনাদের কথা দিচ্ছি যে, নির্বাচনটি সুষ্ঠু হবে, সেই দিন থেকে কেউ গ্রেপ্তার হবে না ও অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচন হবে কোনোভাবে বাধা দেওয়া হবে না। আমরা গণতন্ত্রের স্বার্থেই সমস্ত দল একমত হয়েই সেই নির্বাচনে গিয়েছিলাম।
কিন্তু শেখ হাসিনা তার সেই প্রতিশ্রুতি রক্ষা করেননি। তিনি কয়েকদিন পর থেকেই ধড়পাকড় শুরু করেছিলেন এবং যতরকমের নির্যাতন-নিপীড়ন করা দরকার বিরোধী দলের উপর তিনি তাই করেছিলেন। আমাদের ১৯ জন প্রার্থী তাদেরকে গ্রেফতার করা হয়েছিলো। কোর্টের রায় পর্যন্ত প্রভাবিত করা হয়েছিল এবং নির্বাচন কমিশনকে প্রভাবিত করা হয়েছিল।আমরা ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা দিয়ে বলি এখানে জহিরউদ্দিন স্বপন ও শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি আছেন-ঘর থেকে বেরুতে পারেনি ক্যাম্পেইন করার জন্য। আমার বাসার সামনে ঠাকুরগাঁওয়ে দুই পাশে দুইটা মাইক্রোবাস নিয়ে ডিবি-নিরাপত্তা বাহিনীর লোকজন অপেক্ষা করে যেই বাসা ঢুকছে তাকে তুলছিল আর যে বাসা থেকে বেরুচ্ছিলো তাকে তুলছিলো। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, র্যাব, সেনাবাহিনী সমবেত প্রচেষ্টায় তারা বিরোধী দলকে সেদিন নির্বাচনে অংশ নিতে দেয়নি। যার ফলে সেই নির্বাচনে কোনো ফলাফল হয়নি।
মিট দ্যা প্রেসের অনুষ্ঠানে ওকাবের আহ্বায়ক বিবিসির সংবাদদাতা কাদির কল্লোল ও সদস্য সচিব জার্মান নিউজ এজেন্সি-ডিপিএ‘র সংবাদদাতা নজরুল ইসলাম মিঠুর সঞ্চালনায় এতে ওকাবের জ্যেষ্ঠ সদস্য ফরিদ আহমেদ মূল মঞ্চে ছিলেন।
মিট দ্যা ওকাব অনুষ্ঠান বিএনপির মিডিয়া সেলের জহির উদ্দিন স্বপন, শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি ও শায়রুল কবির খান উপস্থিত ছিলেন।
এমএইচ/এমএমএ/