ক্ষমতাসীন দলের মন্ত্রীদের একবার সিটি স্ক্যান করা দরকার: রিজভী
বাংলাদেশে মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের প্রতিবেদনে সামগ্রিকভাবে দেশের বাস্তব অবস্থা তুলে ধরা হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। এসময় আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের সমালোচনা করে রিজভী বলেন, বর্তমান ক্ষমতাসীন দলের মন্ত্রীদের একবার সিটি স্ক্যান করা দরকার।
তিনি বলেছেন, ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, খালেদা জিয়াকে রাজনৈতিক কারণে বন্দি করা হয়েছে, তিনি রাজবন্দি। এখানে সংবাদপত্রের স্বাধীনতা নেই, কথা বলার স্বাধীনতা নেই। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বিচারবহির্ভূত হত্যা ও গুমসহ নানা ধরনের নিপীড়নে জড়িত থাকলেও এর জন্য তাদের জবাবদিহি করা হয় না। প্রতিবেদনে এই সামগ্রিক বাস্তব অবস্থা তুলে ধরা হয়েছে। কিন্তু এইটা ক্ষমতাসীন দলের নেতা-মন্ত্রীদের গায়ে খুব লেগেছে।
শুক্রবার (১৫ এপ্রিল) সন্ধ্যায় রাজধানীর বাড্ডার প্রিমিয়ার প্লাজায় গ্যালারি-৯ এ এক ইফতার মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন রিজভী।
বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার পূর্ণ শারীরিক সুস্থতা কামনায় মানব সেবা সংঘের উদ্যোগে এই দোয়া ও ইফতার মাহফিলের আয়োজন করা হয়।
রিজভী বলেন, তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেছেন- মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দফতর বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতির ওপর যে প্রতিবেদন দিয়েছে তার সঙ্গে তিনি একমত নন। তিনি বলেছেন, একটি নির্দিষ্ট সূত্র থেকে তথ্য নিয়ে তারা এই প্রতিবেদনটা দিয়েছে। আসলে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নেতা-মন্ত্রীদের বক্তব্য আমার কাছে অদ্ভূত লাগে।
রিজভী বলেন, আওয়ামী লীগের মন্ত্রীদের একবার সিটি স্ক্যান করা দরকার। সিটি স্ক্যান করলে অবশ্যই দেখা যাবে, প্রত্যেকের মাথা কিছুটা ক্ষতিগ্রস্ত। কারণ, উনারা যেটা বিশ্বাস করেন কেবল সেটাই বলতে হবে। যেমন মিষ্টি কুমড়ার বেগুনি, এটাই বলতে হবে। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে মিষ্টি কুমড়া দিয়ে বেগুনি হয় না। কিন্তু যেহেতু সরকারপ্রধান বলেছেন, এটাই হলো আসল তথ্য। আমেরিকার স্টেট ডিপার্টমেন্টকেও সেটাই বলতে হবে, তাদের প্রতিবেদনের মধ্যে সেটাই রাখা উচিত ছিল।
বিএনপির এই নেতা বলেন, ওরা (সরকার) মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার, কথা বলার অধিকার, নির্ভয়ে-নির্বিঘ্নে চলাচল করার অধিকার কেড়ে নিয়েছে। তারপরেও হাছান মাহমুদরা বলবেন এটাই গণতন্ত্র। আমেরিকার স্টেট ডিপার্টমেন্টকেও সেটাই স্বীকার করতে হবে। দেশে ফ্যাসিবাদী শাসন চলছে, কিন্তু সরকার বলছে, দেশে গণতন্ত্র রয়েছে। আমেরিকার স্টেট ডিপার্টমেন্টকেও সেটাই স্বীকার করতে হবে। অন্যথায় তারা (সরকার) বলবে, কোনো নির্দিষ্ট সূত্র থেকে তারা এই তথ্য পেয়েছে। এটাই হচ্ছে আওয়ামী লীগ।
মানব সেবা সংঘের সভাপতি সঞ্জয় দে রিপনের সভাপতিত্বে এবং গোবিন্দ কুন্ডুর সঞ্চালনায় এতে আরও বক্তব্য রাখেন-বিএনপির হাবিব-উন-নবী খান সোহেল, আশরাফ উদ্দিন আহমেদ উজ্জ্বল, রমেশ দত্ত, স্বেচ্ছাসেবক দলের আব্দুল কাদির ভুইয়া জুয়েল, সাবেক স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা আক্তারুজ্জামান বাচ্চু, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ শ্রমিক দলের সাবেক সভাপতি কাজী আমীর খসরু, সাবেক সাধারণ সম্পাদক মাহবুব আলম বাদল, ছাত্রদলের মামুন খান, সাবেক ছাত্রদল নেতা মেহেবুব মাসুম শান্ত, আয়োজক সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক শামসুল আরেফিন প্রমুখ।
কেএম