আওয়ামী লীগকে সরাতে না পারলে অস্তিত্ব থাকবে না: ফখরুল
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, 'আজকে এই রমজানের দিনে এই কথা গুলো বলতে আমাদের ইচ্ছা হয় না তারপরেও বলতে হয় আমরা যদি এই সরকারকে সরাতে না পারি, আওয়ামী লীগকে যদি সরাতে না পারি তাহলে বাংলাদেশের অস্তিত্ব থাকবে না।”
শনিবার (৯ এপ্রিল) গুম-খুন হওয়া নেতা-কর্মীদের পরিবারকে নিয়ে ইফতার করেছেন জাতীয়তাবাদী কৃষক দলের নেতা-কর্মীরা। ইস্কাটনের লেডিস ক্লাবে আয়োজিত এই ইফতার পার্টিতে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, নাগরিক ঐক্যের আহবায়ক মাহমুদুর রহমান মান্নাসহ ২০ দলীয় জোটের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
গুমের শিকার নেতা-কর্মীদের পরিবারকে নিয়ে এক সাথে কৃষক দল এই ইফতার পার্টির আয়োজন করায় কৃষক দলকে ধন্যবাদ জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘জাতিসংঘের যে চার্টার সেই চার্টারে এ্যানফোর্স ডিজএ্যাপিয়ারেন্সকে বলা হয় চরমভাবে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অপরাধ। এই কাজটি আওয়ামী লীগ সরকার গত কয়েকবছর ধরে করেছে এবং এই মানবাধিকার লঙ্ঘন করে তারা রাজনৈতিক নেতা-কর্মী, গণতন্ত্রের জন্য যারা সংগ্রাম-লড়াই করছেন তাদেরকে গুম করেছে, খুন করেছে, হত্যা করেছে।'
নিখোঁজ ইলিয়াস আলীর কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, 'আজকে আপনাদের সামনে বসে আছেন আমাদের সাংগঠনিক সম্পাদক সাবেক সংসদ সদস্য ইলিয়াস আলীর স্ত্রী। ইলিয়াস আলী প্রায় ১০ বছর আমাদের মাঝ থেকে নিখোঁজ হয়ে গেছেন। এখানে আরও অনেকে আছে ছোট বাচ্চা মেয়ে তারা গত ৭/৮/১০ বছর তাদের বাবাকে খুঁজছে। এই রকম প্রায় ৬০০ পরিবার আছে যে পরিবারগুলো তাদের পুত্রকে, তাদের স্বামীকে অথবা তাদের পিতাকে খুঁজছে কিন্তু তাদেরকে তারা পাচ্ছে না। এটা প্রমানিত সত্য যে, এদেরকে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা তারা তুলে নিয়ে গিয়েছিলো এবং তারা গুম হয়ে আছে। যেই কারণে মার্কিন নিষেধাজ্ঞা র্যাবের ওপর এসেছে এবং অনেক কর্মকর্তার উপরে এসেছে।'
বিএনপি মহাসচিব বলেন, 'আজকে সমস্ত অত্যাচার-নির্যাতন, হত্যা-গুম-খুন সব কিছু বন্ধ করতে হলে প্রথম যে বিষয়টি দরকার তা হচ্ছে এই ভয়াবহ দানবকে সরিয়ে সত্যিকার অর্থে জনগনের সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে। সেটা এদের মানুষকে আন্দোলন- গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে করতে হবে। আসুন পরম করুনাময় আল্লাহতা'লার দরবারে এই দোয়া করি এই যে শিশু তাদের পিতাকে খুঁজছে, এই যে স্ত্রী তাদের স্বামীকে খুঁজছে, এই যে মা তাদের সন্তানদের খুঁজছে আল্লাহতা'লা যেন তাদেরকে পরিবারের মাঝে ফিরিয়ে দেয়। আর আল্লাহতা'লা যেন আমাদেরকে শক্তি দেয় আমরা যেন এই ভয়াবহ দানবকে সরিয়ে দেশে গণতন্ত্রকে প্রতিষ্ঠা করতে পারি।”
ইফতারের এই আয়োজনে কৃষক দলের পক্ষ থেকে গুম-খুনের শিকার নেতা-কর্মীদের ৫০ পরিবারের সদস্যদের ঈদ উপহার দেওয়া হয়। ইফতারের পূর্বে সংক্ষিপ্ত আলোচনা অনুষ্ঠানে গুম ও খুনের শিকার নেতা-কর্মীদের পরিবারের সদস্যদের মধ্যে তাহসিনা রুশদির লুনা, আফরোজা ইসলাম আঁখি, মুনিয়া আখতার, সাফা, উম্মে হাবিবা মিম অশ্রুসজল কন্ঠে তাদের মন-বেদনার কথা প্রকাশ করেন।
কৃষক দলের সভাপতি হাসান জাফির তুহিনের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম বাবুলের পরিচালনায় ইফতার অনুষ্ঠানে অনুষ্ঠানে বিএনপির আবদুল্লাহ আল নোমান, নিতাই রায় চৌধুরী, আমান উল্লাহ আমান, আবদুস সালাম, মশিউর রহমান, হাবিবুর রহমান হাবিব, মাহবুব উদ্দিন খোকন, খায়রুল কবির খোকন, হাবিব উন নবী খান সোহেল, রুহুল কুদ্দুস তালুদার দুলু, শহিদউদ্দিন চৌধুরী এ্যানীসহ অঙ্গসংগঠন ও কৃষক দলের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
এমএইচ/এএস