বিদেশি পরামর্শে নির্বাচনে যাবে না বিএনপি: মোশাররফ
বিদেশি কোনো পরামর্শে বিএনপি নির্বাচনে যাবে না বলে জানিয়েছেন দলটির স্থায়ী কমিটির অন্যতম সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন।
তিনি বলেন, ‘বিএনপি নির্বাচনে যাবে কি যাবে না তার পরামর্শ দেবে জনগণ। অন্য কেউ না। জনগণ যেদিন পরামর্শ দেবে, জনগণের আস্থা যেদিন হবে যে দেশে সুষ্ঠু নির্বাচন হবে, জনগণ নিজের হাতে ভোট দিতে পারবে, মেশিনের মাধ্যমে নয়, সেদিন জনগণ বলবে আপনারা নির্বাচনে যান। জনগণের দল হিসেবে বিএনপি নির্বাচনে যাবে। বিদেশি কোনো পরামর্শে নয়।’
শনিবার (৯ এপ্রিল) দুপুরে চন্দ্রীমা উদ্যানে অবস্থিত বিএনপি প্রতিষ্ঠাতা শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের মাজারে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন। সিলেট জেলা বিএনপির নবগঠিত কমিটি এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
বিএনপিকে নির্বাচনমুখী করতে যুক্তরাষ্ট্রের সহযোগিতা চেয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন। গত ৪ এপ্রিল রাতে ওয়াশিংটনে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিনকেনের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে তিনি এ সহায়তা চান। বৈঠকে বাংলাদেশের অংশগ্রহণমূলক গণতন্ত্র ও নির্বাচনের তাগিদ দেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিনকেন।
খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল একটি মধ্যপন্থী গণতান্ত্রিক দল। আজ বাংলাদেশ যে সংকট, তা হচ্ছে দেশে গণতন্ত্র নেই, মানুষের অধিকার নেই, ভোটের অধিকার নেই, দুর্নীতি, চাঁদাবাজি, গুম, খুন, বিচারবহির্ভূত হত্যারকাণ্ড, মামলা, হামলা এবং দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি। স্বৈরাচারী ও গায়ের জোরের সরকার সমস্যা সমাধানে ব্যর্থ হয়েছে। দেশ আজ ধ্বংসের কিনারায় গিয়ে পৌঁছাছে।’
‘আমরা লজ্জিত, বাংলাদেশ সরকারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আমেরিকাতে গিয়ে ধরনা দিচ্ছে। কয়েকটি দিন আগেও আওয়ামী লীগের নেতারা বলেছে বিএনপি নাকি ধরনা দেয়। আজ বাংলাদেশের মানুষের কাছে প্রমাণিত ধরনা কারা দিচ্ছে। এই সরকার সব দিকে যখন মনে করছে তাদের ব্যর্থতা, সব ক্ষেত্রে তাদের পরাজয় তখন তারা বিদেশিদের সহযোগিতা চাচ্ছে। এটা অত্যন্ত ন্যাক্কারজনক’
তিনি বলেন, ‘আমরা সুষ্ঠু অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন চাই। এটা তো বেশি কিছু কথা নয়। এই সরকার পর পর তিনটি জাতীয় নির্বাচন এবং স্থানীয় নির্বাচনে যে কারচুপি, যে ডাকাতি করেছে তাতে জনগণ ভোটের উপর আস্থা হারিয়ে ফেলেছে। আমাদেরও আস্থা নেই। সরকারের উচিত পদত্যাগ করে নির্দলীয় নিরেপক্ষ সরকারের অধিনে নির্বাচন দেওয়া। তাহলে দেশের সব দল নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে। নির্বাচনের প্রতি মানুষের আস্থা আসবে। বিএনপিও জনগণের দল হিসেবে সেই নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে।’
বিএনপির এই নেতা বলেন, পররাষ্ট্রমন্ত্রী আমেরিকাতে গিয়ে, আমেরিকাকে অনুরোধ করেছে। তারা যেন বিএনপিকে বলে নির্বাচনে যাওয়ার জন্য। এটা তো অন্য কেউ বলার বিষয় না। আমরা মনে করি এদেশের মানুষ যেদিন বলবে তারা ভোট দিতে পারবে, তাদের আস্থা ফিরে এসেছে সেদিন বিএনপি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে।
খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, বাংলাদেশ মানবাধিকার নেই। সে জন্য র্যাববসহ বিভিন্ন কর্মকর্তাদের নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। এটা দেশের জন্য সম্মানের নয়। বিদেশে আমাদের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয়েছে। সেই ব্যাপারেও এখানে সমাধান না করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী আমেরিকা গিয়ে তাবেদারি করছে।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন— বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ডা. এ জেট এম জাহিদ হোসেন, বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা খন্দকার মোক্তাদির আহমেদ, তাহসিনা রুশদীর লুনা, সিলেট জেলা বিএনপির সভাপতি আব্দুল কাইয়ুম, সাধারণ সম্পাদক এমরান আহমদ চৌধুরী, সাংগঠনিক সম্পাদক মো. শামিম আহমদ ও সিলেট জেলা বিএনপি নেতারা।
এমএইচ/আরএ/