‘অপপ্রচার করে আওয়ামী লীগের শিকড় উপড়ে ফেলা যাবে না’
অপপ্রচার করে আওয়ামী লীগের শিকড় উপড়ে ফেলা যাবে না বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ যদি ঐক্যবদ্ধ থাকে আগামী নির্বাচনে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আমরাই বিজয়ের বন্দরে পৌঁছাব। অপপ্রচার করে চরিত্র হনন করে লাভ নেই। আওয়ামী লীগের বিরেুদ্ধে দেশে-বিদেশে প্রপাগান্ডা চালিয়ে লাভ নেই। আওয়ামী লীগের শক্তি এদেশের মাটি ও মানুষের অন্তরে, মাটির অনেক গভীরে যার শিকড়। এ শিকড় কেউ অপপ্রচার করে উপড়ে ফেলতে পারবে না।
শনিবার (৯ এপ্রিল) দুপুরে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের নবনির্বাচিত ইউনিট কমিটির পরিচিতি সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।
ওবায়দুল কাদের বলেন, ষড়যন্ত্রকারীদের ষড়যন্ত্রে পদ্মা সেতুর অর্থায়ন থেকে বিশ্ব ব্যাংক সরে যায়। সেই স্বপ্নের বাস্তবায়ন ঘটিয়েছেন বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা। পদ্মা সেতু এখন আর কোনো স্বপ্ন নয়। পদ্মা সেতু এখন দিনের আলোর মতো জাজ্বল্যমান সত্য। নদীর তলদেশে টানেল এখন স্বপ্ন নয়। চট্টগ্রামের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব কর্ণফুলি টানেল এখন বাস্তব। অপপ্রচার করে টানেল বন্ধ করা যাবে না। অপপ্রচার করে পদ্মা সেতু বন্ধ করা যাবে না।
তিনি আরও বলেন, অপপ্রচার করে মেট্রোরেল বন্ধ করা যাবে না। মাত্র কিছু দিন অপেক্ষা করুন কাজ প্রায় শেষ। পদ্মা সেতু এখন দৃশ্যমান, কর্ণলফুলি টানেল দৃশ্যমান হচ্ছে। এগুলো এখন বাস্তবতা। স্বপ্ন আজ দৃশ্যমান বাস্তবতা। আমরা শুধু স্বপ্ন দেখি না স্বপ্ন দেখাতেও জানি।
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, অপপ্রচার করে শেখ হাসিনার উন্নয়ন স্তব্ধ করা যাবে না, অগ্রযাত্রা বন্ধ করা যাবে না। বঙ্গবন্ধু কন্যা বীর দর্পে এগিয়ে যাচ্ছেন বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলার অভিমুখে। পদ্মা সেতু, মেট্রোরেলের বিরুদ্ধে অপপ্রচার করতে গিয়ে ব্যর্থ হয়ে তারা শ্রীলঙ্কার কথা বলে। বাংলাদেশ নাকি শ্রীলঙ্কা হয়ে যাবে বাংলাদেশ নাকি শ্রীলঙ্কার পথে হাটছে। অনেকে শ্রীলঙ্কার চলমান পরিস্থিতিকে বাংলাদেশের সঙ্গে তুলনা করতে চায়। বাংলাদেশের অর্থনীতির ভিত সামষ্টিক অর্থনৈতিক সূচক শক্ত ভিতের উপর দাঁড় করিয়েছেন বঙ্গবন্ধু কন্যা। তারা না জেনেই বা উদ্দেশ্যমূলকভাবে আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে বলছে, শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে এসব অপপ্রচারে নেমেছে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ দেশের ভেতর, বাইরে ঋণ গ্রহণে কখনও সহনীয়তার সীমা অতিক্রম করেনি। স্বাধীনতার পর থেকে আজ পর্যন্ত বাংলাদেশ কখনও ঋণ খেলাপি হয়নি। শ্রীলঙ্কায় জাতীয় আয়ের তুলনায় বৈদেশিক ঋণের অনুপাত ৬১ শতাংশ আর আমাদের জাতীয় আয়ের তুলনায় বৈদেশিক ঋণের পরিমাণ ১৩ শতাংশ। যারা অপপ্রচার করছে, উদ্দেশ্যমূলকভাবে করে যাচ্ছে। আমরা ডলারকে স্থিতিশীল অবস্থায় রাখতে পেরেছি। আমাদের দেশের কেউ শ্রীলঙ্কার মতো ইচ্ছে করলে বিদেশে ডলার পাঠাতে পারবে না। চিকিৎসা, শিক্ষা যে কোন খাতে বিদেশে অর্থ প্রেরণের জন্য অ্যাকাউন্টে খুলে তারপর পাঠাতে হয়।
তিনি আরও বলেন, পদ্মা সেতু বিদেশি ঋণ নির্ভর নয়। আমাদের টাকায় পদ্মা সেতু। কোনো বিদেশি ঋণ না নিয়ে এত বড় মেগা প্রকল্প হয় না। বঙ্গবন্ধু কন্যা দেখিয়েছেন উইক্যান, ইয়েস উই ক্যান। শ্রীলঙ্কার ঋণ কঠিন শর্তে অধিকতর সুদের হারে পরিশোধ করতে হচ্ছে। আর বাংলাদেশের বৈদেশিক ঋণ সহজ শর্তে স্বপ্ন সুদে। কোথায় শ্রীলঙ্কা আর কোথায় বাংলাদেশ। তৃণমূল পর্যন্ত আমাদের অর্থনীতি ভারসম্যমূলক অবস্থায় রয়েছে। বাংলাদেশ কখনও শ্রীলঙ্কার মতো হবে না।
ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ বজলুর রহমানের সভাপতিত্বে পরিচিতি সভায় আরও বক্তব্য রাখেন, আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক, জাহাঙ্গীর কবির নানক, কর্ণেল অব. ফারুক খান, সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম, শিল্প প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার, আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিশেষ সহকারী ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এসএ মান্নান কচি প্রমুখ।
এসএম/এসএন/এএস