তরুণদের রাজনৈতিক দলকে স্বাগত জানাই: তারেক রহমান
বক্তব্য রাখছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। ছবি: সংগৃহীত
জুলাই বিপ্লবে নেতৃত্ব দেওয়া ছাত্রদের নতুন রাজনৈতিক দল গঠনের আলোচনার মধ্যে এ নিয়ে মুখ খুলেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তিনি জানিয়েছেন, দেশের তরুণরা রাষ্ট্র-রাজনীতির প্রতি আগ্রহী হয়ে উঠেছে, এটি অবশ্যই ইতিবাচক দিক। এই তরুণরা গত দেড় দশক একটি নির্বাচনেও ভোট দিতে পারেনি। গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক অধিকার বঞ্চিত এই তরুণদের কেউ যদি জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠায় নতুন রাজনৈতিক দল গঠন করে, বিএনপি সেই উদ্যোগকে স্বাগত জানায়।
শনিবার (২৫ জানুয়ারি) বিকেলে রাজধানীর রমনায় ইঞ্জিনিয়ার ইনস্টিটিউট বাংলাদেশ প্রাঙ্গণে শিক্ষক কর্মচারীদের চাকরি জাতীয়করণের দাবিতে আয়োজিত শিক্ষক সমাবেশে লন্ডন থেকে ভার্চুয়ালি দেওয়া প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, অতীতের পথ থেকে বেরিয়ে তারুণ্য নতুন পথ রচনা করবে, তবে কোনো প্রশ্নবিদ্ধ পথে নয়। সেটি হওয়া উচিত স্বচ্ছ ও স্বাভাবিক।
বাংলাদেশের পক্ষে ঐক্যের আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে বাংলাদেশের পক্ষের গণতান্ত্রিক শক্তির মধ্যে কোনও বিষয় নিয়ে ভুল বোঝাবুঝি অযথা তর্ক সময়ের অপচয় বলে আমি মনে করি। একইসঙ্গে সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলতে চাই- জনগণ যদি বৃহত্তর স্বার্থে বিভিন্ন ক্ষেত্রে সরকারের ব্যর্থতা ধৈর্য ধরে মানতে পারে। তাহলে যারা সরকারে আছেন তাদের আরও অনেক বেশি ধৈর্যশীল হওয়া উচিত বলেও আমি মনে করি।
নির্বাচন নিয়ে বির্তক সৃষ্টি না করার আহ্বান জানিয়ে তারেক রহমান বলেন, বিএনপির মনে জনগণকে নিয়ে রাজনীতি নয় বরং জনগণের জন্য রাজনীতি। তাই আমরা যে কোনও মূল্যে দেশের জনগণের রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক ক্ষমতা নিশ্চিত করতে চাই। নির্বাচনই হচ্ছে জনগণের রাজনৈতিক ক্ষমতার অন্যতম প্রধান হাতিয়ার। নির্বাচন নিয়ে বির্তক সৃষ্টি করার অর্থ নিজেদের অজান্তে পরাজিত-পলাতক ফ্যাসিস্টদের অবস্থানকে শক্তিশালী করা।
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি প্রশ্ন রেখে তিনি বলেন, জনগণ বিশ্বাস করে অন্তর্বর্তী সরকারের মতো সর্বজন সমর্থিত একটি নির্দলীয় অরাজনৈতিক সরকারের পক্ষে বাজার সিন্ডিকেটের কবল থেকে জনগণকে মুক্তি দেওয়া সহজ। তাহলে এখন প্রশ্ন—এতদিনেও সরকার কেন বাজার নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ। জনগণের ওপর কেন উল্টো ভ্যাটের বোঝা চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে। এখন কেন বাজার সিন্ডিকেটের দৌরাত্ম্য চলছে। এমন পরিস্থিতিতে জনগণের মনে প্রশ্ন উঠাটাই স্বাভাবিক। তাহলে কী সরকারের কেউ-কেউ অন্য ইস্যুতে বেশি মনোযোগী। নাকি সরকার পারছে না।
তিনি বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের নানা সীমাবদ্ধতা থাকার পরও তাদের ব্যর্থ হতে দেওয়া যাবে না। কারণ হাজারো শহীদের রক্ত মাড়িয়ে একটি গণতান্ত্রিক, মানবিক ও বৈষম্যহীন বাংলাদেশ গড়ার অঙ্গীকার করে সরকার রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব নিয়েছে।
সমাবেশে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, শেখ হাসিনা পালিয়ে গেছে, কিন্তু তুমি-আমি একই রয়ে গেছি। এখনও কোর্টে যাই, হাজিরা দিতে হয়। এর থেকে পরিত্রাণ পাইনি। তাই আন্দোলন করে আমাদেরকে নির্বাচন আদায় করতে হলে দুঃখ পাবো না।
শিক্ষক নেতা অধ্যক্ষ সেলিম ভুঁইয়ার সভাপতিত্বে সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন, নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, আব্দুল মঈন খান, সেলিমা রহমান প্রমুখ।