টাঙ্গাইলে বিএনপি’র দুই গ্রুপের সংঘর্ষ, আহত ৫
টাঙ্গাইলে বিএনপি’র দুই গ্রুপের সংঘর্ষ। ছবি: সংগৃহীত
টাঙ্গাইলের বাসাইলে একইস্থানে বিএনপির দুই গ্রুপের কর্মী সম্মেলনকে কেন্দ্র করে ধাওয়া পাল্টা-ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে দু’পক্ষের আহত হয়েছেন অন্তত ৫ নেতাকর্মী। শনিবার (১৮ জানুয়ারি) সকালে উপজেলার কাশিল ইউনিয়ন পরিষদের সামনে এ ঘটনা ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, শনিবার বিকেল ৩টায় উপজেলার কাশিল ইউনিয়ন বিএনপির দুই গ্রুপ একইস্থানে কর্মী সম্মেলনের আয়োজন করে। সম্মেলনে বিএনপির জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের শীর্ষ নেতাকর্মীদের উপস্থিত থাকার কথা ছিল।
এদিকে, একইস্থানে দুই গ্রুপের কর্মী সম্মেলন থাকায় সকাল থেকেই কালিশ ইউনিয়ন পরিষদ এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করে। পরে উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি কাজী শহীদুল ইসলামের পক্ষের বাথুলীসাদী ৪ নং ওয়ার্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদক (অব্যাহতিপ্রাপ্ত) মানিক মোহাম্মদ তোহা গ্রুপের নেতাকর্মীরা পরিষদের সামনে কর্মী সম্মেলন করার লক্ষে চেয়ার ও টেবিল বসানোর প্রস্তুতি নিচ্ছিল।
এসময় উপজেলা বিএনপির পক্ষ থেকে কাশিল ইউনিয়ন বিএনপির সদস্য সচিব রফিকুল ইসলাম, ইউনিয়ন যুবদলের আহবায়ক আব্দুর রউফ ও বাথুলীসাদী ৪নং ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি কাঞ্চন খানসহ কয়েকজন নেতাকর্মী সেখানে উপস্থিত হয়। এক পর্যায়ে দুই পক্ষের নেতাকর্মীদের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। মুহূর্তের মধ্যে সেখানে লাঠিসোটা ও দেশিয় অস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষ ও ধাওয়া পাল্টা-ধাওয়ার ঘটনা ঘটে।
এ ঘটনায় দুই গ্রুপের নেতাকর্মীদের মধ্যে কাশিল ইউনিয়ন বিএনপির সদস্য সচিব রফিকুল ইসলাম, ইউনিয়ন যুবদলের আহবায়ক আব্দুর রউফ, ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি কাঞ্চন খান ও সাধারণ সম্পাদক মানিক মোহাম্মদ তোহাসহ অন্তত ৫ জন আহত হন।
এ ঘটনার পর পরিষদ চত্বরে দু’পক্ষের কর্মী সম্মেলন বন্ধের ঘোষণা দেয় উপজেলা প্রশাসন ও থানা পুলিশ। পরে সেখানে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়।
উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি কাজী শহীদুল ইসলামের পক্ষের ৪ নং ওয়ার্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মানিক মোহাম্মদ তোহা বলেন, পূর্ব নির্ধারিত তারিখ অনুযায়ী ইউনিয়ন বিএনপির কর্মী সম্মেলন করার জন্য পরিষদের সামনে চেয়ার ও টেবিল বসানোর প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম। এসময় হঠাৎ করে অন্য গ্রুপের রফিকুল ইসলাম ও আব্দুর রউফসহ কয়েকজন নেতাকর্মী এসে বাধা সৃষ্টি করে। একপর্যায়ে তারা আমার ওপর অতর্কিতভাবে হামলা করে। এ ঘটনায় আমার শরীরের বিভিন্নস্থানে আঘাত করে। পরে আমি হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছি। ঘটনার পর পুলিশ এসে দুই পক্ষেরই কর্মী সম্মেলন বন্ধ করে দিয়েছে।
উপজেলা বিএনপির পক্ষের কাশিল ইউনিয়ন বিএনপির সদস্য সচিব রফিকুল ইসলাম বলেন, প্রায় ১৫ দিন আগে আমরা ইউনিয়ন বিএনপির কর্মী সম্মেলনের তারিখ নির্ধারণ করেছি। হঠাৎ করে কাজী শহীদুল ইসলাম গ্রুপের মানিক মোহাম্মদ তোহাসহ কয়েকজন নেতাকর্মীরা আমাদের কর্মী সম্মেলন বাধাগ্রস্ত করার জন্য হামলা চালায়। এতে আমিসহ ৪ জন আহত হয়েছি। এ ঘটনার পর কর্মী সম্মেলনের তারিখটি বাতিল করা হয়েছে।
উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি কাজী শহীদুল ইসলাম বলেন, কয়েকদিন আগে আমরা ইউনিয়ন বিএনপির কর্মী সম্মেলনের তারিখ নির্ধারণ করি। পরে সেখানে চেয়ার ও টেবিল বসাতে গেলে কেন্দ্রীয় বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আহমেদ আযম খান গ্রুপের নেতাকর্মীরা আমার নেতাকর্মীদের ওপর হামলা চালায়।’
উপজেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মামুন আল জাহাঙ্গীর বলেন, কাশিল ইউনিয়ন বিএনপির কর্মী সম্মেলনের তারিখটি প্রায় ১৫দিন আগে করা হয়। কর্মী সম্মেলনটি বানচাল করার জন্য বিএনপির বহিস্কৃত কাজী শহীদুল ইসলামের নেতৃত্বে আওয়ামী লীগদেরকে সাথে নিয়ে অতর্কিতভাবে হামলা চালায়। আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য আমাদের সিদ্ধান্ত আছে।
এ ঘটনায় বাসাইল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) জালাল উদ্দিন বলেন, একইস্থানে বিএনপির দুই গ্রুপ কর্মী সম্মেলনের ডাক দেয়। পরে দুই গ্রুপের নেতাকর্মীদের মাঝে মারামারির ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়। পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে সেখানে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) মোহাম্মদ নেয়ামত উল্ল্যা বলেন, ঘটনার পর দুই গ্রুপের কর্মী সম্মেলনটি বন্ধ করা হয়েছে।