সর্বজনীন পেনশন দুর্নীতির আরেক কায়দা কানুন: ফখরুল
করোনা টিকা নিয়ে সরকার প্রথম থেকে দুর্নীতি করছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ।
তিনি বলেন, ‘পত্রিকায় দেখলাম এখন নাকি তারা আবার মানুষকে ‘সর্বজনীন পেনশন’ দেবে, পরিষ্কার করে আমরা যতটুকু বুঝতে পারছি, এটা আরেকটা লুটের কায়দা কানুন তারা করতে যাচ্ছে, মানুষের কাছ থেকে প্রতি মাসে হাজার হাজার কোটি টাকা নেবে ৬০ বছর পর দেবে এর মধ্যে মারা গেলে টাকা পাবে না। যদিও এটা এখনো পাস হয়নি তবে তারা এই প্রস্তাব নিয়েছে। তাদের প্রতিটি ক্ষেত্রে শুধুমাত্র কীভাবে লুট করা যায়, কি করে মানুষের পকেট কাটা যায় এই ব্যবস্থায় তারা করছে।’
শনিবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) বিকালে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে অনুষ্ঠিত এক বিক্ষোভ সমাবেশে এ কথা বলেন বিএনপি মহাসচিব। দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতির প্রতিবাদে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ ও উত্তর বিএনপি যৌথভাবে এই বিক্ষোভ সমাবেশের আয়োজন করে।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘মানুষের কোনো সমস্যার সমাধান তারা করতে পারছে না। পারছি না তো বটেই বরং মানুষকে তারা আরও বিপদে ফেলছে। আজকে সমগ্র বাংলাদেশের একটাই সমস্যা সমস্যা হচ্ছে আওয়ামী লীগ। মানুষ এখন আওয়ামী লীগকে তাদের সবচেয়ে বড় শত্রু বলে মনে করছে। আজকে গালিও দেয় এ কি মানুষ নাকি আওয়ামী লীগ। এটা হয়ে গেছে সব জায়গায়।’
দেশের জনগণকে উদ্দেশ করে বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘আমরা রাস্তায় নেমেছি, আপনারাও শরিক হন, যুবক ভাইদের বলছি দেশমাতৃকার জন্য জেগে উঠুন।’
রাজনৈতিক দলগুলোকে ঐক্যবদ্ধভাবে সরকারবিরোধী আন্দোলনে শরিক হওয়ার জন্য আহ্বান জানান মির্জা ফখরুল।
তিনি বলেন, ‘আজ সব জায়গায় একটাই আওয়াজ সেটা হচ্ছে এই সরকার কবে যাবে? কারণ আওয়ামী লীগ এখন লুটেরার দলে পরিণত হয়েছে। দেশকে দুর্নীতির একটি স্বর্গরাজ্য বানিয়ে ফেলেছে। পানির দাম বাড়ার অন্যতম কারণ হচ্ছে ওয়াসার এমডি তাকে তিনবার চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে, তার বেতন কমপক্ষে পাঁচ থেকে ছয় লক্ষ টাকা, এই যে একজন ব্যক্তি বিশেষ কে দুর্নীতির সুযোগ করে দেওয়া সেই কাজটা করছে সরকার। সব ক্ষেত্রে দুর্নীতি আজকে একটা সর্বগ্রাসী ব্যাধিতে পরিণত হয়েছে।’
চালের দাম বাড়ছে কারণ উৎপাদনের যে ঘাটতি আছে সেটা সরকার স্বীকার করতে চায় না। ‘বলে তো আমরা স্বয়ংসম্পূর্ণ অথচ প্রতিবছর দেখা যাচ্ছে যে ৫৭ লক্ষ টন চাল আমদানি করতে হচ্ছে। মিথ্যা কথা বলে সর্বক্ষণ তারা মানুষকে বোকা বানাচ্ছে।
কুইক রেন্টালের দ্রব্য ক্রয় করতে তারা যে পরিমাণ দুর্নীতি করেছে তা পূরণ করতেই বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধি করা হয়েছে। দাম বাড়ানো ছাড়া তাদের কোনো উপায়ে থাকছে না।
‘জনগণের টাকা ট্যাক্সের টাকা দিয়ে লবিস্ট নিয়োগ করেন তাদের উপর অত্যাচার নির্যাতন ঘুম করা খুন করা হালাল করতে চাইছেন। ব্যর্থতা ঢাকতে চাইছেন আড়াল করতে চাইছেন। কথায় আছে ধর্মের কল বাতাসে নড়ে এখন চতুর্দিকে ঘণ্টা বাজতে শুরু করেছে, আর উপায় নাই যতই উলট পালট করেন যতই লবিস্ট নিয়োগ করেন।’
সরকারকে উদ্দেশ করে মির্জা ফখরুল বলেন এখনো সময় আছে পদত্যাগ করুন নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের ব্যবস্থা করুন। জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা হলে সকল সমস্যার সমাধান হবে। খালেদা জিয়াসহ সকল রাজ-বন্দীদের মুক্তি দিন, খুন গুম করে কোনোদিন জনগণের আন্দোলন ঠেকানো যাবে না, অতীতেও যায়নি।
আজকে প্রধানমন্ত্রী বলছেন আর ভর্তুকি দেওয়া হবে না সেই প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল বলেন ভর্তুকি দিতে হবে না চুরি বন্ধ করে লুট বন্ধ করেন, চুরি করছেন লুট করছেন বলে আজকে ভর্তুকি দিতে হয়।
মির্জা ফখরুল বলেন, সরকার টিকা নিয়ে দুর্নীতি শুরু করেছে প্রথম থেকেই। এমন কোন জায়গা নেই যে এই সরকার লুটপাট করছে না। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ লুটেরা দলে পরিণত হয়েছে। লুটপাট করে বিদেশে টাকা পাচার করে ক্ষমতায় টিকে থাকতে চায়।
মির্জা ফখরুল বলেন, সরকার নিজে এবং সমস্ত প্রশাসনযন্ত্রকে দুর্নীতির আখড়া বানিয়ে ফেলেছে। ওয়াসার এমডি কে তিনবার চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দিয়েছে। এই যে ব্যক্তি বিশেষ কে দুর্নীতির সুযোগ করে দিয়েছে সরকার। এই দুর্নীতির কারণে পানির মূল্য বৃদ্ধি পাচ্ছে।কুইক রেন্টাল প্রকল্পে দুর্নীতির কারণে বিদ্যুতের দাম বাড়ছে। এদের জন্য আবার সংসদে দায়মুক্তি আইন করা হয়েছে।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, আইনমন্ত্রী এবং উপদেস্টার টেলিফোন আলাপ ফাঁস হয়েছে। আমরা জানতে চাই বারবার এই সবগুলো পরিষ্কার করে বলতে হবে। জনগণ জানতে চায়।
ঢাকা মহানগর দক্ষিণের আহ্বায়ক আব্দুস সালাম এর সভাপতিত্বে সভায় অন্যদের মধ্যে স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ, নজরুল ইসলাম খান, মির্জা আব্বাস, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, উপদেষ্টা হাবিবুর রহমান হাবিব,আমান উল্লাহ আমান, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক এবিএম মোশারফ হোসেন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
এমএইচ/এমএমএ/