কোনো বিধিনিষেধের সামনে মাথানত করব না: মান্না
নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না বলেছেন, 'মানুষ রাজপথে নেমেছে। অমিক্রন বিধিনিষেধের আগে বিএনপি রাজপথে নেমেছিল। হাজার হাজার মানুষ যখন জনসভায় যোগ দিচ্ছিল। কোথাও কোথাও ১৪৪ ধারা জারি করলেও তা ভেঙ্গে সভা হয়েছে। এখন বিধিনিষেধ নাই। তারপরে আমরা রাজপথে আসছি। এবার ১৪৪ ধারা দেন, আমরাও ভেঙ্গে ফেলে দেখিয়ে দেব। কোনো বিধি-নিষেধের সামনে মাথানত করব না। অতীতেও বাংলাদেশের জনগণ করেনি।'
দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি, নিপুন রায় চৌধুরীসহ দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ উপজেলা শাখার নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে দায়ের করা মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার এবং সাম্প্রদায়িক উস্কানিদাতা কেরানীগঞ্জ মডেল থানার ওসি আব্দুস সালামের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে নারী ও শিশু অধিকার ফোরামের উদ্যোগে অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে তিনি এসব কথা বলেন।
গত ১৮ ফেব্রুয়ারি কেরানীগঞ্জের ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে মান্না বলেন, আওয়ামী লীগ ধর্মনিরপেক্ষ দল নয়। বরং আওয়ামী লীগ সংখ্যালঘু সম্প্রদায়কে নির্যাতন করে। সরকারকে বলব, হামলা মামলা করে গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বা নিপুণ রায়দের দমন করা যাবে না।
মান্না বলেন, আজ হোক, কাল হোক এই সরকার যাবেই। এরপর যে সরকার আসবে অর্থাৎ কেয়ারটেকার সরকার হতে পারে। তিন মাস তারা ক্ষমতায় থাকবে, তারপর তারা নির্বাচন দেবে।
'সারাদেশে এই সরকারের ওসি এসপি ডিসিরা যে অত্যাচার নির্যাতন করেছে-ওরাই আবার ক্ষমতায় থেকে নির্বাচন করবে? না। ওদেরও বদলানো হবে। তিন মাসে প্রশাসনও বদলাবে। সচিবালয়ে যারা আছে, তাদের বদলাতে হবে। সারাদেশ থেকে লুট করে বাংলাদেশকে যারা নিঃস্ব করে ফেলেছে তাদের বিচার করা হবে।'
তিনি বলেন, 'কেউ কেউ বলেন, আওয়ামী লীগ এত বড় সংগঠন নতুন সরকার গড়লে আওয়ামী লীগকে রাখবেন না? আমি বলি আওয়ামী লীগ নয়; আওয়ামী লীগের কিছুই ওই সরকারে থাকতে পারবে না। আওয়ামী লীগ বা অন্য কোনো দলের বিরুদ্ধে আমাদের কোনো রাগ নেই। কিন্তু যে চোর, তার চুরির বিচার হবে না? যে অন্যায়ভাবে আমার ভাইকে হত্যা করেছে, গুম করেছে, খুন করেছে তাদের বিচার হবে না? এদের ছেড়ে দেওয়ার জন্য এই আন্দোলন করছি না।'
খালেদা জিয়ার প্রসঙ্গ টেনে মান্না বলেন, 'কারা খালেদা জিয়াকে মৃত্যুর মুখেও বিদেশে চিকিৎসা করতে দিল না। ওরা এমনি এমনি পার পেয়ে যাবে? না। এই আন্দোলন কেবল আওয়ামী লীগকে সরিয়ে দেওয়ার আন্দোলন নয়, আমরা দেশটার ভালো করতে চাই। দেশে গণতন্ত্র, মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে চাই। দেখেন দুদকের একজন কর্মকর্তা যিনি দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে মামলা দিয়েছে সেই কর্মকতাকে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে। এই দুদক কর্মকর্তার পক্ষে সরকার কেন কোনো কথা বলছে না? কারণ, এই সরকার দুর্নীতি করে।'
নাগরিক ঐক্য সভাপতি বলেন, এই সরকার একেক সময় একেক রূপ ধারণ করে। আজ এর পক্ষে বলবে, কাল ওর বিপক্ষে বলবে। চট্টগ্রামে চীন নাকি একটি শহর বানিয়ে দেবে। আমার একটাই বক্তব্য আমার দেশের জমি কাউকে দেওয়া যাবে না। এই সরকার নানাভাবে ক্ষমতায় টিকে থাকতে চাইছে। এদের সব ষড়যন্ত্র নস্যাৎ করতে রাজপথে আন্দোলন চালিয়ে যেতে হবে। আমি দেশের সকল রাজনৈতিক দলের প্রতি আহ্বান জানাব, আপনারা আন্দোলনের জন্য তৈরি হোন ঐক্যবদ্ধ হোন। সামনে স্বাধীনতার মাস, এই মাসে আমাদেরকে লড়াই করতে হবে। যেন স্বৈরাচারকে হটিয়ে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করতে পারি।
বৃহস্পতিবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে নারী ও শিশু অধিকার ফোরামের আহ্বায়ক ও বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সেলিমা রহমানের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, নেতা আব্দুস সালাম, খায়রুল কবির খোকন, সরফত আলী সপু, আজিজুল বারী হেলাল, সাইফুল আলম নিরব, ডা. রফিকুল ইসলাম, রবিউল ইসলাম খান রবি, মশিউর রহমান বিপ্লব, স্বেচ্ছাসেবক দলের সাইফুল ইসলাম ফিরোজ, মৎস্যজীবী দলের আব্দুর রহিম।
এমএইচ/টিটি