চুয়াডাঙ্গার জীবননগর উপজেলার বাঁকা ইউনিয়ন পরিষদের জৈব সার কাণ্ডে বিএনপি ও যুবদলের ৫ নেতাকে বহিষ্কার করা হয়েছে। আজ বুধবার ৫ ফেব্রুয়ারি বেলা আড়াইটার দিকে জীবননগর উপজেলা বিএনপির সভাপতি আনোয়ার হোসেন খান ও সাধারণ সম্পাদক মো. শাহজাহান আলী এবং উপজেলা যুবদলের আহ্বায়ক মো. মঈন উদ্দিন ও সদস্যসচিব মো. কামরুল ইসলাম স্বাক্ষরিত পৃথক পৃথক চিঠিতে তাদের বহিষ্কার করা হয়।
বহিষ্কার হওয়া নেতারা হলেন, জীবননগর উপজেলার বাঁকা ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আব্দুল খালেক, সাধারণ সম্পাদক আব্দুল বাশার, সহসভাপতি খাদেমুল খোকন, জীবননগর উপজেলা বিএনপির সদস্য আব্দুল কাশেম, বাঁকা ইউনিয়ন যুবদলের আহ্বায়ক মো. রাজা মালিথা।
বহিষ্কার পত্রে বলা হয়, আপনি গত ০৪-০২-২০২৫ ইং তারিখ বাঁকা ইউনিয়ন পরিষদে জৈব সার বিতরণ ও সার সরবরাহের ব্যাপারে অনধিকার প্রবেশ করে বিশৃঙ্খলা সুষ্টি করায় দলের ভাবমূতি নষ্ট করেছেন। বিধায় দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের দায়ে দল হইতে বহিষ্কার করা হলো।
চুয়াডাঙ্গার জীবননগর উপজেলার বাঁকা ইউনিয়ন পরিষদে জৈব সার বিতরণ নিয়ে গত কয়েকদিন ধরে বিএনপির দুই গ্রুপ ও জামায়াত ইসলামীর দ্বন্দ্ব চলছিল। এরমধ্যে মঙ্গলবার (৪ ফেব্রুয়ারি) রাত সাড়ে ৭টার দিকে ইউনিয়ন পরিষদ থেকে ১২২ বস্তা সার পাওয়ার টিলার করে নিয়ে যাওয়ার সময় স্থানীয় জনতা আটক করে। এই সার নিয়ে যাওয়ার ঘটনায় বাঁকা ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আবুল বাশার ও ইউনিয়ন বিএনপির সহ-সভাপতি খাদেমুল খোকন জড়িত বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
সার আটকের পর বাঁকা ইউনিয়ন যুবদল নেতা রাজা ফেসবুকে লেখেন, বাঁকা ইউনিয়ন বিএনপির সেক্রেটারি মো. আবুল বাশার ও সহ-সভাপতি মো. খাদেমুল ইসলাম খোকন ভুয়া প্রকল্প করে মাটি ভর্তি সার বাঁকা ইউনিয়ন পরিষদের নিয়ে আসে। বিষয়টি মিডিয়ায় প্রচার হওয়ায় আজ ৪/২/২৫ ইং রাত আনুমানিক ৮ ঘটিকার সময় স্যার পাওয়ার টিলার ভর্তি করে পাছার করার সময় জনতা ধাওয়া খেয়ে গাড়িসহ ধরা খায়। এই চোরের দায়দায়িত্ব বিএনপি দল নেবে না। এই দুইজন বিএনপি নেতার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি।
বাঁকা ইউনিয়ন বিএনপির নেতা আবুল কাশেম বলেন, বিএনপি কোনো চোরের দল না। যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠছে। যদি ঘটনা সত্য হয় আমরা তার শাস্তি চাই।
বাঁকা ইউনিয়ন জামায়াতের আমির মাওলানা মফিজুর রহমান বলেন, ইউনিয়ন পরিষদ থেকে ১২২ বস্তা সার চুরি করে নিয়ে যাওয়ার সময় আটক করা হয়েছে। গাড়ির চালক এ ঘটনায় দুজনের নাম বলেছেন। আমাদের দাবি তদন্ত করে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হোক।
এ বিষয়ে বাঁকা ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মো. আবুল বাঁশার বলেন, ‘আমি এ বিষয়ে কিছু জানি না। ইউনিয়ন পরিষদেরও কেউ নই। চেয়ারম্যান বরখাস্ত হওয়ায় এ সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে। তিনিই সারের অনুমোদন করেছিলেন। আমাকে জড়িয়ে কোনো তথ্য দেওয়া হলে তা মিথ্যা হবে।’
এ বিষয়ে জীবননগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মামুন হোসেন বিশ্বাস বলেন, পাওয়ার টিলারে করে সার নিয়ে যাচ্ছিল, এসময় স্থানীয় লোকজন আটক করেছে। আমরা জিডিমূলে সারগুরো থানা হেফাজতে রেখেছি। এই সারের উৎস কি, কোথায় থেকে আসছে সেটি জানার জন্য প্রশাসনের কয়েকজনকে ফোন দিয়েছিলাম, তবে তারা কিছু বলতে পারেননি।