আনসার বিশৃঙ্খলার নেতৃত্বে স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতা কাদের
আনসার বিশৃঙ্খলার নেতৃত্বে স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতা কাদের। ছবি: সংগৃহীত
বেশ কয়েকদিন ধরে চাকরি জাতীয়করণের দাবি নিয়ে আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর সদস্যরা আন্দোলন করে আসছিলেন। এই আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় গতকাল রবিবার সচিবালয়ে প্রবেশ করে সারাদিন সকল কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অবরুদ্ধ করে রাখেন তারা।
একপর্যায়ে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাকর্মীদের ওপরেও হামলা করেন এই বাহিনীর সদস্যরা। এতে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আনসার সদস্যদের সংঘর্ষে ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম নেতা হাসনাত আবদুল্লাহ ছাড়াও শিক্ষার্থী-সাংবাদিকসহ অন্তত ৩৫ জন আহত হয়েছে।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সেখানে সেনাবাহিনীর সদস্যরা উপস্থিত হলে তাদের ওপরেও হামলা করেন আনসার সদস্যরা। এতে ৬ সেনাসদস্য আহত হন, যাদের একজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে এক বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে সেনাবাহিনী।
জানা গেছে, আনসার আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়া ব্যক্তির নাম কাদের। তিনি মানিকগঞ্জের শিবালয় উপজেলার ষাটঘর তেওতা (বিলপাড়া) এলাকার ফজলুল হকের ছেলে এবং তেওতা ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক। কাদের বর্তমানে ঢাকার হযরত শাহ জালার আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে আনসারের পিসি হিসেবে কর্মরত।
এদিকে অনলাইনে ছড়িয়ে পড়া একটি ভিডিওতে দেখা যায়, সচিবালয়ের ভেতরে ঢুকে পড়া আনসারদের নেতৃত্ব দিয়ে দাবি আদায়ের লক্ষ্যে বক্তব্য দিচ্ছেন কাদের। সচিবালয়ের ভেতরে বক্তব্য দেওয়া ওই ব্যক্তি যে আনসার সদস্য কাদের, সেটি স্থানীয় ইউপি সদস্য দেলোয়ার হোসেন ও প্রতিবেশী সফিউদ্দিন বিশ্বাস নিশ্চিত করেছেন।
এদিকে, কাদের স্বেচ্ছাসেবক লীগের রাজনীতি করেন কিনা জানতে চাইলে তিনি তার রাজনৈতিক পরিচয় গোপন রাখার জন্য এ প্রতিবেদকের কাছে কাকুতি মিনতি করেন।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের উপজেলা নেতৃবৃন্দরা জানান, কাদেরের মতো আনসাররা ঘাপটি মেরে থেকে ষড়যন্ত্র করছিলো তাদের বিচারের আওতায় আনার দাবি তাদের।
প্রসঙ্গত, চাকরি জাতীয়করণের দাবিতে রোববার সকাল থেকে সচিবালয়ের সামনে প্রায় ১০ হাজার আনসার সদস্য অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করতে থাকেন। একপর্যায়ে দুপুর ১২টা থেকে তারা সচিবালয় ঘেরাও করে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের ৭ জন উপদেষ্টাসহ সচিবালয়ের অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের অবরুদ্ধ করে রাখেন। উত্তেজিত আনসার সদস্যদের শান্ত করার জন্য বিকেলে বাহিনীটির মহাপরিচালক, আনসার ও ভিডিপি সচিবালয়ে এসে আনসার সদস্যদের সব দাবি মেনে নেন।
তবে দাবি মেনে নেওয়া হলেও অবরোধ চালিয়ে যান আনসার সদস্যরা। ফলে বিকেল ৫টায় অফিস ছুটি হলেও উপদেষ্টারাসহ কর্মকর্তা-কর্মচারীরা আটকা পড়েন। এ সময় সচিবালয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক সারজিস আলম, হাসনাত আবদুল্লাহও অবরুদ্ধ হয়ে পড়েন। একপর্যায়ে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাকর্মীদের ওপরেও হামলা করেন এই বাহিনীর সদস্যরা। এতে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আনসার সদস্যদের সংঘর্ষ বাধে। এ ঘটনায় ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম নেতা হাসনাত আবদুল্লাহ ছাড়াও শিক্ষার্থী-সাংবাদিকসহ অন্তত ৩৫ জন আহত হন।