মামলা-গ্রেপ্তার বন্ধে ডিএমপির সহযোগিতা চেয়েছে বিএনপি
ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আমান উল্লাহ আমান বলেছেন, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বিনা ওয়ারেন্টে, মামলা ছাড়াই বিএনপির ও অঙ্গ সহযোগী সংগঠনগুলোর নেতা-কর্মীদের গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। বিশেষ করে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে ঢাকা মহানগর বিএনপির ও অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীদের। যা ২০১৮ সালে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে শুরু করা হয়ে ছিল। ঠিক একইভাবে বর্তমান আওয়ামী সরকারের নির্দেশে অন্যায় নির্দেশনা বাস্তবায়ন করে যাচ্ছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী (পুলিশ)।
বৃহস্পতিবার (২৩ মার্চ) ডিএমপি কমিশনারের সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে সাংবাদিকদের কাছে এসব কথা বলেন বিএনপির এই নেতা আমান উল্লাহ আমান।
তিনি বলেন, ডিএমপি পুলিশ কমিশনারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছি- বিনা ওয়ারেন্টে মামলা বিহীন দলের নেতা-কর্মীদের গ্রেপ্তার বন্ধের কথা বলেছি। যদি কারো নামে মামলা থাকে মামলায় গ্রেপ্তারি পরোয়ানা থেকে থাকে সেক্ষেত্রে তাকে গ্রেপ্তার করলে আমাদের কোনো আপত্তি নেই। অন্যথায় বিনা কারণে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে হয়রানি করতে গ্রেপ্তার বন্ধ করতে হবে। সামাজিক যোগাযোগ পরিবেশ রক্ষায় রেস্টুরেন্ট কিংবা বিয়ে-শাদীর প্রোগ্রাম থেকেও নেতা-কর্মীদের গ্রেপ্তার করা হচ্ছে তা বন্ধ করতে পুলিশ কমিশনারকে বলেছি। বিশেষ করে রমজান মাসে প্রতি বছরের মতো ঢাকা মহানগর বিএনপির উদ্যোগে ইফতার মাহফিলের আয়োজন করতে যাচ্ছি সে উপলক্ষে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সহযোগিতা চেয়েছি যাতে করে ইফতার মাহফিলগুলো সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করা যায়। আমরা নিশ্চয়তা চেয়েছি- পুলিশ কমিশনার বলেছেন এবং আমাদের আশ্বস্ত করেছেন যে- তিনি বিষয়গুলো দেখবেন।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে নির্বাচন বিএনপি মেনে নেবে না। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনের জন্য আমরা রাজপথে আন্দোলন করছি। তাই সরকার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বিএনপি ও তারঙ্গ সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা এবং গ্রেপ্তার বন্ধ করুন। তারপরও যদি সরকারের অন্যায় নির্দেশে আক্রোশ থেকে বের না হয় পুলিশ সেক্ষেত্রে আমরা পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণ করব।
ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক আব্দুস সালাম বলেন, বিএনপি ও তার অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীদের অহেতুক হয়রানি করা হচ্ছে, গ্রেপ্তার করা হচ্ছে এই বিষয়ে জানাতেই ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছি, কথা বলেছি। সুনির্দিষ্ট কোনো অভিযোগ ছাড়া কাউকে হয়রানি ও গ্রেপ্তার করা যাবে না সে কথা বলেছি। কেননা না সম্প্রতি ঢাকা মহানগর থেকে যাদেরকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে তারা সবাই হাইকোর্ট-জজকোর্ট থেকে জামিনে মুক্ত ছিল। তারপরও গ্রেপ্তার করা হয়েছে পরবর্তীতে তাদের বিরুদ্ধে মামলা দেওয়া হয়েছে, কখনো কখনো পুরোনো মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।
তিনি বলেন, আমরা পুলিশ কমিশনারকে বলেছি বিনা কারণে শুধু বিএনপি করার ফলে যদি গ্রেপ্তার করতে হয় তাহলে একটা সময় নির্ধারণ করে দেন- আমরা সবাই এসে আপনাদের কাছে ধরা দেব। কারণ বিএনপি কোনো আন্ডারগ্রাউন্ড রাজনৈতিক দল নয়। বিএনপি দেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় রাজনৈতিক দল। বেশ কয়েকবার রাষ্ট্র পরিচালনা করেছে। কাজই বিএনপি নেতা-কর্মীরা সামাজিক অনুষ্ঠান হোটেল কিংবা রেস্তোরায় বসে অংশ নিতে পারবে না তা কখনো হতে পারে না। তাই নির্বাচনকে সামনে রেখে বিএনপিকে কাবু করতে ঘরে ঢোকাতে অহেতুক চেষ্টা বন্ধ করুন।
আব্দুস সালাম বলেন, আমরা পুলিশ কমিশনারকে এ কথাও বলেছি যে, তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া আওয়ামী লীগের অধীনে নির্বাচন আমরা চাই না। বরং আপনার অবস্থান থেকেও আওয়ামী লীগ ও সরকারকে বলেন- দেশটাকে যাতে অস্থিতিশীলতার দিকে নিয়ে না যায়।
এ সময় উপস্থিত ছিল বিএনপির প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী, ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপি'র সদস্য সচিব আমিনুল হক।
এসএন