মঙ্গলবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৫ | ১৬ বৈশাখ ১৪৩২
Dhaka Prokash

ইসি গঠনে রাষ্ট্রপতির সংলাপ

আইন তৈরিতে একমত সকল পক্ষ, তবুও..

প্রতিটি রাজনৈতিক দলের দর্শন ও আদর্শে কিছু না কিছু ভিন্নতা রয়েছে। তবে এবার একটি জায়গায় সকলেই ঐক্যমতে পৌঁছাতে পেরেছে। বিশেষ করে নির্বাচন কমিশন গঠনের ব্যাপারে সকল রাজনৈতিক দলের দাবি এক মোহনায়। তা হলো নির্বাচন কমিশন আইন। নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপের আয়োজন করেছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। গত ২০ ডিসেম্বর সংসদের বিরোধী দল জাতীয় পার্টির সঙ্গে সংলাপের মধ্য দিয়ে শুরু হয় রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা পর্ব।

রাষ্ট্রপতির কার্যালয় থেকে পাঠানো তালিকা ও সময়সূচি অনুযায়ী এখন পর্যন্ত ৩২টি দলকে আমন্ত্রণ জানিয়েছে বঙ্গভবন। আমন্ত্রণে সাড়া দিয়ে ১২ জানুয়ারি পর্যন্ত সংলাপে অংশ নিয়েছে ১৭টি দল। বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলসহ (বিএনপি) ৭টি দল রাষ্ট্রপতির সংলাপ প্রত্যাখান করেছে। বৃহস্পতিবার ১৩ জানুয়ারি ৩টি দলের জন্য সময়ে রেখেছে বঙ্গভবন। সর্বশেষ ১৭ জানুয়ারি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সঙ্গে সংলাপ করে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলাপ আলোচনা শেষ করবেন রাষ্ট্রপতি।

এখন পর্যন্ত যেসকল রাজনৈতিক দল সংলাপে অংশগ্রহণ করেছে প্রতিটি দল নির্বাচন কমিশন গঠনে একটি পৃথক আইন করার পরামর্শ দিয়েছে। কোনো কোনো দল বিশেষ অধিবেশন ডেকে হলেও আইন করার মাধ্যমে নির্বাচন কমিশন গঠন করার প্রস্তাব দিয়েছে। আবার কোনো কোনো দল অধ্যাদেশ জারি করে হলেও নির্বাচন কমিশন গঠনে একটি আইন করার প্রস্তাব করা হয়েছে।

এরপর নতুন প্রধান নির্বাচন কমিশনারসহ চার কমিশনার বাছাই করতে একটি সার্চ কমিটি গঠন করবেন রাষ্ট্রপতি। সেই সার্চ কমিটি দ্রুততম সময়ের মধ্যে যোগ্য ব্যক্তিদের খুঁজে বের করে রাষ্ট্রপতির কাছে নাম প্রস্তাব করবেন। প্রস্তাবিত সেই নামগুলো থেকে রাষ্ট্রপতি প্রধান নির্বাচন কমিশনারসহ অপর চার কমিশনার নিয়োগ করবেন। আগামী ১৪ ফেব্রুয়ারি কে এম নূরুল হুদার নেতৃত্বাধীন বর্তমান নির্বাচন কমিশনের মেয়াদ শেষ হচ্ছে। এর আগে নতুন নির্বাচন কমিশন নিয়োগ দেবেন।

সার্চ কমিটি গঠনে রেওয়াজ অনুযায়ী আপিল বিভাগের একজন বিচারপতির নেতৃত্বে সার্চ কমিটি গঠন করেন রাষ্ট্রপতি। সার্চ কমিটিতে হাইকোর্ট বিভাগের একজন বিচারপতি, মহাহিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক (সিএজি)সহ ২-৩ জন বিশিষ্ট নাগরিক থাকেন। এবারও হয়তো তাই হতে পারে।

নির্বাচন কমিশন গঠনে সংবিধানের পথে হাটার পরামর্শ দিয়েছেন জাতীয় পার্টি (জেপি) চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন মঞ্জু। তিনি বলেছেন, ‘সার্চ কমিটি এলো কোথা থেকে? এটা তো সংবিধানে নাই। সংবিধানে যা আছে সেই মাপে চলার কথা বলেছি।’

রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সংলাপ শেষে জাতীয় পার্টির মহাসচিব ও সংসদ সদস্য মুজিবুল হক চুন্নু বলেছিলেন, ‘আমরা বরাবরই ইসি গঠনে আইন করার কথা বলেছি। গত অধিবেশনেও বলেছি। আইনমন্ত্রীকে বলেছিলাম আপনি না পারেন, আমাকে বলেন আমি আইনটা আনি। আমাকে এখনও বললে এক সপ্তাহের মধ্যে আইনটা আনতে পারব।”

সংলাপ শেষে ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন বলেছেন, ‘নির্বাচন কমিশন একটি সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান। সংবিধানের ১১৮ বিধি বাস্তবায়নার্থে আইনের বিধানাবলি অনুসারে প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও নির্বাচন কমিশনার নিয়োগের জন্য একটি আইন তৈরি করতে হবে’।

তিনি আরও বলেছেন, সম্প্রতি সময়ে যে আইন হচ্ছে সেই আইনগুলোর কোন কোনটা করতে সময় ২ ঘণ্টা বেশি লাগে নাই। যেদিন আইন কমিটিতে যাবে পরদিন বসে আইন পাস করা সম্ভব। কাজেই হুদা কমিশনের ড্রাফ আছে। উনারা যদি চান সারা রাত বসে খেটে আইনের ড্রাফ করে দেব’।

আইন করার পক্ষে মত দিয়েছে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ)। দলটির সভাপতি হাসানুল হক ইনু সংলাপ শেষে বলেন, নির্বাচন কমিশন গঠনে আইন করতে হবে।

বাংলাদেশ তরিকত ফেডারেশনের চেয়ারম্যান সৈয়দ নজিবুল বশর মাইজভান্ডারী সংলাপ শেষে বলেছেন, ‘মহামান্য রাষ্ট্রপতিও দু:খ প্রকাশ করেছেন। তিনি একমত পোষণ করেছেন যে আইন হওয়া প্রয়োজন। যেহেতু আইনটা সংবিধান আছে। আমি বিষয়টির দৃষ্টি আকর্ষণ করেছি তিনিও মনে করেন যেন এটা নিয়ে বার বার কথা না ওঠে। একটা আইন থাকলে আইনের মাধ্যমে সুন্দরভাবে সবকিছু হবে। রাষ্টপতি একমত। তিনি নিজেও চান আইনটা দ্রুত হোক।

রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সংলাপে নির্বাচন কমিশনকে সম্পূর্ণ স্বাধীন ও কার্যকরভাবে গড়ে তুলতে সংবিধান অনুযায়ী আইন করার জোর দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি (ন্যাপ)।

আইন করার পক্ষে আইনমন্ত্রীও। কিছুদিন আগে এক অনুষ্ঠানে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছিলেন, ‘আইন করা উচিত আমিও বলি। আইন হবে। কিন্তু যদি ওই করোনার সময়ে সংসদ বসে, তবে আমরা সব সংসদ সদস্যদের ডাকি না। আমাকে বলা হয়েছিল, এই নির্বাচন কমিশনের ব্যাপারে একটি অর্ডিন্যান্স করে দেন। আমি বলেছি, সেটা সম্ভব না।’

মন্ত্রী আরও বলেন, ‘এ রকম একটা আইন সংসদকে পাশ কাটিয়ে করতে আমি রাজি না।’ তিনি মন্ত্রী আরও বলেন, আগামী নির্বাচন কমিশন গঠন উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি সংলাপ শুরু করেছেন। তিনি যে সিদ্ধান্ত দেবেন, সে সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আগামী নির্বাচন কমিশন গঠিত হবে। আইনের ব্যাপারে একটা কথা হচ্ছে, ১৪ ফেব্রুয়ারি এই নির্বাচন কমিশনের সময় শেষ হচ্ছে। সংসদ যখন একটা আইন করতে পারবে না, তখন সার্চ কমিটি এই কাজ করছে। সার্চ কমিটিতে ছয়জনের মধ্যে চার সদস্য সাংবিধানিক পোস্টধারী, বাকি দুজন সিভিল সোসাইটির। এখানে রাজনৈতিক দলের কেউ নেই।

আইন করার বিষয়টি গুরুত্ব দিয়েছে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগও। এরইমধ্যে আওয়ামী লীগের নেতারা বিভিন্ন সভা সমাবেশে আইন করার কথা তুলে ধরেছেন। তবে এখনই না আগামীতে আইন করার হবে বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ। তিনি বলেছেন, খুব শিগগিরই নির্বাচন কমিশন গঠনে কাজ শুরু করব’। আমরা আশাকরছি হয়তো আগামী এক বছর বা কাছাকাছি সময়ে এটা করা সম্ভব হতে পারে।

আইনমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ নেতাদের বক্তব্যে বিশ্লেষণ করে একথা অনুমেয় যে এবার আইন হচ্ছে না। হয়তো এই কমিশন সার্চ কমিটি দিয়ে করে পরবর্তি সময়ে আইন হতে পারে।
আইন করতে কি আসলে খুব বেশি সময়ের প্রয়োজন নাকি রাজনৈতিক দলগুলোর সদিচ্ছার অভাব এমন প্রশ্নে দুইজন বিশেষজ্ঞ মতামত দিয়েছেন। তাদের মতে রাজনৈতিক দলগুলো নিজেদের সুবিধা নিতেই আইন করতে রাজী হন না।

বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের ভাইস চেয়ারম্যান ইউসুফ হোসেন হুমায়ুন ঢাকাপ্রকাশ-কে বলেন, ‘এটা তো অর্ডিন্যান্স করে করা যাবে না। এটা করতে হলে পার্লামেন্টে নিতে হবে। পার্লামেন্টে আলোচনা হবে তারপর এটা পাস হবে। সেইটার জন্য সময়টা বাড়াতে বলেছে। পার্লামেন্টে সেশনে কি আইন আসবে সেটা মন্ত্রণালয় প্রসেস করে। প্রসেস করার পর সেটা যাবে পার্লামেন্টারি কমিটিতে। সংসদীয় কমিটি অনুমোদন দিলে তারপর যাবে সংসদে এটা সময়ের ব্যাপার। যে প্রসেস আছে তার জন্য আইটনা করতে এক মাস যথেষ্ট না’।

অর্ডিন্যান্স করে করা যাবে না কেন এমন এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘অর্ডিন্যান্স করে কোনটা? এটা তো নির্বাচনের ব্যাপার, রাষ্ট্রীয় ব্যাপার। এটা তো ছোট খাটো ব্যাপার না, যে অর্ডিন্যান্স করে করা যাবে। এটা তারাহুড়োর বিষয় না।’

এবিষয়ে সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) এর সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার ঢাকাপ্রকাশ-কে বলেন, কেন সময় নেই? আমরা তো সেটাই বুঝতে পারছি না। আমরা ড্রাফট করে আইন মন্ত্রীকে দিয়েছি। আইন ড্রাফট করতে একদিন, কি দুই দিন লাগে। এটা ৩-৪ পৃষ্ঠার একটা আইন। আমরা ড্রাফট করেছি। শামসুল হুদা কমিশনও একটা ড্রাফট করে গেছে। সময় নেই বলে যে কথা বলছে তারা এটা সম্পূর্ণ অযৌক্তিক।’
সংলাপে অংশগ্রহণকারী সকল দলই চান আইন হোক কিন্তু কেন হচ্ছে না আইন করলে কার ক্ষতি এমন প্রশ্নের জবাবে বদিউল আলম মজুমদার বলেন, ‘এবার করবে না তারা (আওয়ামী লীগ)। তারা পুরনো পথেই হাঁটবে। অনুগতদের দিয়ে নির্বাচন করতে চায়।’

আইন করলে কি অনুগতদের আসার পথ বন্ধ হয়ে যাবে বলে মনে করেন আপনি? এমন প্রশ্নের জবাবে বলেন,‌ থাকে, কিন্তু একটু দুরহ। আইন করা হলে কিছু বাধ্যবাধকতা থাকে। স্বচ্ছতা থাকে। তাদের বিরুদ্ধে মানুষের অভিযোগ থাকলে সেটা তুলে ধরতে পারবে। যোগ্যতার মাপকাঠি নির্ধারিত থাকবে। আইন হলে তাদের হাতটা একটু বাঁধা থাকে।

তার মানে আপনি বলতে চাচ্ছেন রাজনৈতিক দলগুলো নিজেদের সুবিধা নিতেই এতোদিন আইন করেনি? জবাবে বদিউল আলম মজুমদার বলেন, আইনটা করতে চায় না কেন? সংবিধানের ৪৮ (৩) অনুচ্ছেদে আছে শুধু প্রধানমন্ত্রী নিয়োগ আর প্রধান বিচারপতি নিয়োগ ছাড়া সবক্ষেত্রে রাস্ট্রপতিকে সিদ্ধান্ত নিতে হয় প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শক্রমে। তাই রাষ্ট্রপতি কাকে নিয়োগ দেবেন তিনি সেটার সিদ্ধান্ত নিতে পারেন না। প্রধানমন্ত্রী যাদের সুপারিশ করবেন রাষ্ট্রপতি তাই করবেন। অতীতেও তাই করেছে, এবারও তাই করবে। আইন করলে একটু বাঁধা সৃষ্টি হতে পারে। অতীতে যেগুলো করেছে সেগুলো পরীক্ষিত পথ। এই পথে প্রধানমন্ত্রী যাকে চাইবে তাকেই নিয়োগ করবেন। যেহেতু এই পথে ফল পেয়েছে, এবারও তাই করবে।’

স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্তি হলো এই সময়ে অনেক দল ক্ষমতায় ছিল তাহলে তারা আইনটি করেনি কেন? তার মানে আপনি বলতে চান দলগুলা নিজেদের সুবিধা নিতেই আইন করেনি? জবাবে বদিউল আলম মজুমদার বলেন, হ্যাঁ, হ্যাঁ।

একটি আইন করতে যেসকল ধাপ অতিক্রম করতে হয়। প্রথমে আইনের খসড়া মন্ত্রিসভার বৈঠকে অনুমোদন দেওয়া হয়। এরপর মন্ত্রিসভার অনুমোদিত খসড়া বিলটি সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী সংসদে স্পিকারের অনুমতি নিয়ে উত্থাপন করেন। সংশ্লিষ্ট মন্ত্রী বিলটি উত্থাপনের পর ওই মন্ত্রণালয় সংশ্লিষ্ট সংসদীয় কমিটিতে যাচাই-বাছাই করার জন্য প্রেরণ করেন। সংসদীয় কমিটি বৈঠকে বসে যাচাই-বাছাই করে বিলটি চূড়ান্ত করে পাসের জন্য মন্ত্রণালয়ে পাঠায়। এরপর সংসদীয় কমিটির চূড়ান্ত বিলটি পাসের প্রস্তাব উত্থাপন করেন সংশ্লিষ্ট মন্ত্রী। সেখানে সংসদ সদস্যদের আলাপ আলোচনার ভিত্তিতে যদি কোন সংশোধনী থাকে সেগুলোসহ স্থিরিকৃত আকারে আইনটি পাস হয়।

সংবিধান অনুযায়ী প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও নির্বাচন কমিশনার নিয়োগের এখতিয়ার রাষ্ট্রপতির হাতে। এর আগে সাবেক রাষ্ট্রপতি মো. জিল্লুর রহমান ২০১২ সালে এবং বর্তমান রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ২০১৭ সালে অধিকাংশ রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সংলাপ করে সার্চ কমিটির মাধ্যমে সর্বশেষ দুই নির্বাচন কমিশন নিয়োগ দিয়েছিলেন।

সংবিধানের ১১৮ অনুচ্ছেদে বলা আছে, প্রধান নির্বাচন কমিশনার এবং অনধিক চার জন নির্বাচন কমিশনারকে নিয়ে একটি নির্বাচন কমিশন থাকিবে এবং এ বিষয়ে প্রণীত কোনও আইনের বিধান সাপেক্ষে রাষ্ট্রপতি প্রধান নির্বাচন কমিশনারকে এবং অন্যান্য নির্বাচন কমিশনারকে নিয়োগ দেবেন।

সংবিধানের ১১৮ (৩) অনুচ্ছেদে বলা আছে, সংবিধানের বিধানাবলী-সাপেক্ষে কোন নির্বাচন কমিশনারের পদের মেয়াদ তাহারা কার্যভার গ্রহণের তারিখ হতে পাঁচ বৎসরকাল হবে।

কে এম নুরুল হুদার নেতৃত্বাধীন ইসি গঠনের আগে ২০১৬ সালের ১৮ ডিসেম্বর সংসদের বাইরে থাকা বিএনপির সঙ্গে নির্বাচন কমিশন গঠন নিয়ে সেবার সংলাপ শুরু করেন রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ। একমাস ধরে ৩১টি দলের সঙ্গে চলা ওই সংলাপ ২০১৭ সালের ১৮ জানুয়ারি শেষ হয়। সার্চ কমিটি গঠন করার পর সে বিষয়ে প্রজ্ঞাপন দেয় মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। ওই কমিটির কাজের সাচিবিক দায়িত্বও থাকে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের হাতে।

এসএম/

 

 

Header Ad
Header Ad

ভারতের সামরিক আক্রমণ আসন্ন,পারমাণবিক অস্ত্রের হুমকি পাকিস্তানের

ছবি: সংগৃহীত

ভারতের কাশ্মীরে পর্যটকদের ওপর প্রাণঘাতী বন্দুক হামলার পর পাকিস্তানের ওপর ভারতের সামরিক আক্রমণ আসন্ন বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন দেশটির প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা মুহাম্মদ আসিফ।

একই সঙ্গে অস্তিত্ব রক্ষার প্রয়োজনে পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহারের সম্ভাবনার কথাও জানিয়েছেন তিনি। সোমবার ইসলামাবাদে ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি এ কথা জানান।

পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী বলেন, আমরা আমাদের বাহিনীকে আরও শক্তিশালী করেছি। কারণ এখন সামরিক আক্রমণ আসন্ন। সুতরাং এই ধরনের পরিস্থিতিতে কিছু কৌশলগত সিদ্ধান্ত নিতে হয়। আমরা সেসব সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছি।

তিনি বলেন, কাশ্মীরের ঘটনাকে কেন্দ্র করে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ভারতের হুমকি-ধামকি বাড়ছে। পাকিস্তানের সামরিক বাহিনী ভারতীয় হামলার সম্ভাবনা সম্পর্কে সরকারকে অবহিত করেছে। 

তবে ভারতের এই আক্রমণ আসন্ন বলে মন্তব্য করলেও এই বিষয়ে বিস্তারিত আর কোনো তথ্য দেননি তিনি।

খাজা আসিফ বলেন, পাকিস্তান উচ্চ সতর্কাবস্থায় রয়েছে। আমাদের অস্তিত্বের জন্য প্রত্যক্ষ কোনো হুমকি তৈরি হলেই কেবল পারমাণবিক অস্ত্রের ভাণ্ডার ব্যবহার করা হবে।

গত মঙ্গলবার কাশ্মীরের পেহেলগামে বন্দুকধারীদের হামলায় ২৫ ভারতীয় ও এক নেপালি নাগরিকের প্রাণহানি ঘটে। এই হামলার ঘটনার পর হিন্দু-সংখ্যাগরিষ্ঠ ভারতে ব্যাপক ক্ষোভের সূত্রপাত হয়েছে। পাশাপাশি মুসলিম-সংখ্যাগরিষ্ঠ পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সামরিক পদক্ষেপ নেওয়ার দাবিও জোরাল হয়েছে ভারতে।

 

Header Ad
Header Ad

কানাডার প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত মার্ক কার্নি

কানাডার নতুন প্রধানমন্ত্রী মার্ক কার্নি। ছবি: সংগৃহীত

কানাডার নির্বাচনে প্রধানমন্ত্রী মার্ক কার্নির লিবারেল পার্টি জয় লাভ করেছে বলে জানিয়েছে কানাডিয়ান ব্রডকাস্টিং কর্পোরেশন (সিবিসি)।

সোমবারের এই বিজয়ে লিবারেলদের নাটকীয়ভাবে ঘুরে দাঁড়িয়েছে। মূলত যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কানাডার অর্থনীতি ও সার্বভৌমত্বের প্রতি হুমকির প্রতিক্রিয়া লিবারেল জয় তরান্বিত করেছে।

মঙ্গলবার (২৯ এপ্রিল) এক প্রতিবেদনে এ খবর দিয়েছে এপি।

এদিকে, কানাডা শনিবার ভ্যাঙ্কুভারে এক মারাত্মক গাড়ি হামলার ঘটনার পরবর্তী প্রভাব মোকাবিলা করছে। ওই হামলায় মৃত্যুর ঘটনা ঘটে এবং এর জেরে কয়েক ঘণ্টার জন্য নির্বাচনী প্রচার কার্যক্রম স্থগিত রাখা হয়। 

পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনাটি সন্ত্রাসী হামলা নয়; অভিযুক্ত ব্যক্তি স্থানীয় বাসিন্দা এবং মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যার ইতিহাস রয়েছে।

নির্বাচনের আগে লিবারেলরা বিশাল পরাজয়ের মুখোমুখি হতে চলেছিল।  তবে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প যখন কানাডার অর্থনীতির ওপর আক্রমণ শুরু করেন এবং দেশটির সার্বভৌমত্বের হুমকি দেন—এমনকি কানাডাকে আমেরিকার ৫১তম অঙ্গরাজ্য বানানোর প্রস্তাব দেন—তখন কানাডিয়ানদের মধ্যে ব্যাপক জাতীয়তাবাদী আবেগ ছড়িয়ে পড়ে। 

এর ফলেই নির্বাচনের গতিপথ ঘুরে যায় এবং লিবারেলরা টানা চতুর্থ মেয়াদে ক্ষমতা ধরে রাখতে সক্ষম হয়।

বিরোধী কনজারভেটিভ পার্টির নেতা পিয়েরে পলিয়েভ্রে চেয়েছিলেন এই নির্বাচনকে সাবেক প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোর জনপ্রিয়তা পতনের ওপর একটি গণভোটে পরিণত করতে। ট্রুডোর এক দশকের শাসনকালে খাদ্য ও আবাসন ব্যয় বেড়ে যাওয়ায় তার জনপ্রিয়তা অনেকটাই কমে গিয়েছিল।

কিন্তু ট্রাম্পের আক্রমণের পর ট্রুডো পদত্যাগ করেন এবং সাবেক দুইবারের কেন্দ্রীয় ব্যাংকার মার্ক কার্নি লিবারেল পার্টির নেতা ও কানাডার প্রধানমন্ত্রী হন।

কানাডায় যেভাবে প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হন 

দেশটির ৩৪৩টি ফেডারেল আসনে ভোটাররা কেবল তাদের নিজ নিজ এলাকার প্রতিনিধি নির্বাচন করেন।

যে দলের নেতৃত্বে হাউস অব কমন্সে সংখ্যাগরিষ্ঠ আসন অর্জিত হবে, সেই দল সরকার গঠন করবে এবং দলের নেতা হবেন প্রধানমন্ত্রী।

যদি কোনো দল নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা না পায়, তবে সাধারণত সর্বাধিক আসন পাওয়া দল সংখ্যালঘু সরকার গঠন করে এবং সরকার টিকিয়ে রাখতে বিরোধী দলের কিছু সদস্যের সমর্থনের ওপর নির্ভর করতে হয়।

কখনও কখনও একাধিক দল মিলে আনুষ্ঠানিক চুক্তির মাধ্যমে যৌথভাবে জোট সরকারও গঠন করতে পারে।  লিবারেল পার্টি সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়েছে কি না তা এখনো পরিষ্কার নয়।

 

Header Ad
Header Ad

নওগাঁয় ডাকাত দলের ৩ সদস্যসহ ৮ জন গ্রেপ্তার, উদ্ধার লুণ্ঠিত মালামাল

ছবি : ঢাকাপ্রকাশ

নওগাঁয় আন্তঃজেলা ডাকাত দলের ৩ সক্রিয় সদস্যসহ ৮ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ (ডিবি)। এদের মধ্যে বাকি ৫ জন চোরাই মালামাল ক্রয়-বিক্রয়ের সঙ্গে জড়িত। গ্রেপ্তারকৃতদের কাছ থেকে ১টি অটো চার্জার ভ্যান এবং ১৯টি অটো চার্জার ভ্যানের ব্যাটারিসহ ১৫০ কেজি খুচরা যন্ত্রাংশ উদ্ধার করা হয়েছে।

রোববার (২৭ এপ্রিল) নওগাঁ এবং রাজশাহীর জেলার বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদেরকে গ্রেফতার করা হয়।

সোমবার (২৮ এপ্রিল) দুপুরে নওগাঁ জেলা পুলিশ কর্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অর্থ ও প্রশাসন) ফারজানা হোসেন এসব তথ্য জানান।

গ্রেপ্তারকৃত ডাকাত দলের সদস্যরা হলেন, জেলার পোরশা উপজেলার সোভাপুর গ্রামের মৃত আব্দুল হাকিমের ছেলে আব্দুল জব্বার (৪০) চাঁপাইনবাবগঞ্জের গোমস্তাপুর উপজেলার পাথরপূজার গ্রামের আব্দুর রহমানের ছেলে নুরুজ্জামান (৪০) এবং নওগাঁর সাপাহার উপজেলার ধবলডাঙ্গা গ্রামের ইব্রাহিমের ছেলে মোহাম্মদ সেলিম (৩০)।

গ্রেপ্তারকৃত চোরাই মালামাল ক্রয়-বিক্রয় চক্রের সদস্যরা হলেন, জেলার মান্দা উপজেলার উত্তর কাঞ্চন গ্রামের আলম খানের ছেলে শহিদ খান (৩৪) একই গ্রামের পরেশ আলী মৃধার ছেলে কাওছার আলী মৃধা (২৪), উপজেলার কালিকাপুর গ্রামের তমিজউদদীন মোল্লার ছেলে আব্দুল মতিন মোল্লা (৫০), কামারকুড়ি গ্রামের মৃত ময়েন উদ্দিনের ছেলে জিয়াউর রহমান (৪২) এবং শ্রীরামপুর গ্রামের মৃত সোলায়মান মন্ডলের ছেলে আজিজুল মন্ডল(৬৪)।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ফারজানা হোসেন বলেন, বুধবার (২৩ এপ্রিল) রাত অনুমানিক ৮ টার দিকে সাপাহার থানার নোচনাহার বাজার থেকে সাদিকুল ইসলাম (৩২) নামে এক অটো চার্জার ভ্যান চালক তার নিজের অটো চার্জার ভ্যান চালিয়ে বাড়ি ফিরছিলেন। ফেরার পথে সাপাহার থানাধীন ইলিমপুর মোড় হইতে হরিপুর বাজারগামী রোডে ইলিমপুর ব্রীজের নিকট পৌছাতেই রাস্তার পাশে ওৎপেতে থাকা ০৪ জন অজ্ঞাতনামা ব্যক্তি তার অটো চার্জার ভ্যান থামিয়ে তাকে ভ্যান থেকে টেনে নামায় এবং তার গলার চাকু ধরে হত্যার ভয় দেখিয়ে পাশের আম বাগানে নিয়ে এলোপাতাড়ি ভাবে মারপিট করে।

পরবর্তীতে তারা সাদিকুলের অটো চার্জার ভ্যানটি ছিনতাই করে নিয়ে যায়। অপর আরো একটি ঘটনায় একই ডাকাত দল গত শুক্রবার (২৫ এপ্রিল) দিবাগত রাত ৩ টার দিকে পোরশা থানার সরাইগাছি - আড্ডা আঞ্চলিক মহাসড়কের মশিদপুর এলাকায় এক অটো চার্জার ভ্যান চালককে আটক করে। তাকে এলোপাতাড়ি মারপিট করে হত্যার ভয় দেখিয়ে তার অটো চার্জার ভ্যান ছিনতাই করে নিয়ে যায়।

তিনি আরও বলেন, এই দুই ঘটনায় পোরশা এবং সাপাহার থানায় আলাদা দুইটি মমলা হয়। মামলার পর থেকেই পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ (ডিবির) একটি বিশেষ টিম অভিযান অব্যাহত রাখে। গতকাল (২৭ এপ্রিল) নওগাঁ এবং রাজশাহী জেলার বিভিন্ন জায়গায় অভিযান চালিয়ে ৩ জন ডাকাত এবং চোরাই ভ্যানের মালামাল ক্রয়-বিক্রয়ের সঙ্গে জড়িত এমন ৫ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়।

ফারজানা হোসেন আরও বলেন, গ্রেফাতারকৃত ডাকাতদের মধ্যে মোহাম্মদ সেলিম (৩০) বহুল আলোচিত সাপাহার উপজেলা জামায়াতের সেক্রেটারি আব্দুল্লাহ হিল কাফি হত্যা মামলার অন্যতম প্রধান আসামী। সেলিমের বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় ৮টি চুরি এবং ডাকাতির মামলা রয়েছে। এছাড়াও ডাকাত আব্দুল জব্বারের বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় ১০ টি এবং ডাকাত নুরুজ্জামানের বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় ৪ টি চুরি এবং ডাকাতির মামলা রয়েছে। আসামীদের বিজ্ঞ আদালতের মাধ্যমে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রিমান্ড আবেদন করা হবে।

সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার(ক্রাইম অ্যান্ড অপস্) সুমন রঞ্জন সরকার জেলা গোয়েন্দা পুলিশের পরিদর্শক (ওসি ডিবি) আব্দুল মান্নানসহ পুলিশের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

ভারতের সামরিক আক্রমণ আসন্ন,পারমাণবিক অস্ত্রের হুমকি পাকিস্তানের
কানাডার প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত মার্ক কার্নি
নওগাঁয় ডাকাত দলের ৩ সদস্যসহ ৮ জন গ্রেপ্তার, উদ্ধার লুণ্ঠিত মালামাল
নিজের মূত্র পান করেছিলেন বলিউড অভিনেতা পরেশ রাওয়াল
নাহিদ ইসলামকে বাংলাদেশের আগামীর প্রধানমন্ত্রী বললেন হাসনাত আব্দুল্লাহ
কিছু লোডশেডিং না হলে ভর্তুকি বেড়ে যাবে: বিদ্যুৎ উপদেষ্টা
গণপিটুনির পর কারাগারে ইমামের মৃত্যু, গাজীপুরের পূবাইলে চাঞ্চল্য
ইশরাক হোসেনকে মেয়র হিসেবে শপথ না পড়াতে লিগ্যাল নোটিশ
পাকিস্তানের পাশে দাঁড়িয়ে ৭টি অস্ত্রবাহী বিমান পাঠালো তুরস্ক
বিএনপির ৩ সংগঠনের নতুন কর্মসূচি ঘোষণা
পাঁচ জেলায় বজ্রপাতে ১১ জনের মৃত্যু
জামিন পেলেন মডেল মেঘনা আলম
জুলাই গণ-অভ্যুত্থান অধিদপ্তর গঠন করলো সরকার
নিরীহ কাউকে মামলা দিয়ে হয়রানি করা যাবে না: আইজিপি
পাকিস্তানে সামরিক হামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে ভারত: নিউইয়র্ক টাইমস
ঢাকায় অটোরিকশা ও চার্জিং স্টেশন বন্ধে ডিএনসিসির অভিযান শুরু হতে যাচ্ছে
চাঁদা না দিলে রেলের কমান্ড্যান্টকে বদলির হুমকির অভিযোগ দুই ছাত্র প্রতিনিধির বিরুদ্ধে (ভিডিও)
বলিউডে সেনারা হিরো, বাস্তবে কেন জিরো ভারতীয় বাহিনী!
কুমিল্লায় বজ্রপাতে স্কুলছাত্রসহ নিহত ৪
মে মাসে শেখ হাসিনার বিচার শুরু হচ্ছে: প্রধান উপদেষ্টা