দুপুরে জানানো হবে সমাবেশের স্থান: মির্জা ফখরুল
বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে যাওয়ার পথে নয়া পল্টনের অবরুদ্ধ সড়কের মোড়েই মির্জা ফখরুলকে আটকে দেয় পুলিশ।
বৃহস্পতিবার (৮ ডিসেম্বর) সকাল ১০টা ৪০ মিনিটে তার গাড়ি নাইটেঙ্গল মোড়ে এলে পুলিশ কর্মকর্তারা তাকে যেতে বাধা দেন।
এ সময়ে মহাসচিবের সঙ্গে দলের ভারপ্রাপ্ত দপ্তর সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স ও মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান ছিলেন।
ঢাকা মেট্রোপলিট পুলিশের যুগ্ম কমিশনার বিপ্লব সরকার জানান, ক্রাইম সিনের কাজ শেষ না হওয়া পর্যন্ত বিএনপি অফিসে কারো প্রবেশাধিকার নেই।
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর পরে উপস্থিত গণমাধ্যমের কর্মীদের কাছে বলেন, ‘আমি বিএনপির মহাসচিব। আমাকে আমার পার্টি অফিসে যেতে দেওয়া হলো না এবং তারা যে কথাগুলো বলছে সব মিথ্যা। আমাদের ওখানে কোনো বিস্ফোরক ছিল না। নাথিং ওয়াজ দেয়ার। তারা(পুলিশ) নিজেরা এসব করেছে আপনারা (গণমাধ্যম) তা দেখেছেন ‘
তিনি অভিযোগ করে বলেন, ‘এটা সম্পূর্ণ চক্রান্ত ও পরিকল্পিত। আমাদের ১০ তারিখের সমাবেশ পুরোপুরি নস্যাৎ করতে এটা সরকারের হীন পরিকল্পনা-চক্রান্ত। গণতন্ত্রকে ধ্বংস করতে, মানুষের অধিকার ধবংস করতে আমার রাজনৈতিক অধিকারকে ধ্বংস করতে এসব চক্রান্ত। যদি আমার নিজের দলের অফিসে যেতে না পারি তাহলে কী করে রাজনৈতিক নেতা-কর্মীরা কাজ করবে।’
‘একটা লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির সাংবিধানিক অধিকার হলো, সে তার স্বাভাবিক রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করবে। এখন একজন মহাসচিব যদি তার অফিসেই যেতে না পারে তাহলে এটা সম্ভব নয়। এখানে গণতন্ত্র তো দূরের কথা, এখানে মানুষ একটা সভ্য সামাজিক মুক্ত জীবনে বাস করছে না। আমি এর তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘অবিলম্বে বিএনপি অফিসকে খুলে দেওয়ার জন্য দাবি জানাচ্ছি। যাদের গতকাল গ্রেপ্তার করা হয়েছে তাদের মুক্তি দেওয়ার জন্য দাবি জানাচ্ছি এবং বিনা কারণে একজনকে হত্যা করা হয়েছে সেটার প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানাচ্ছি।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘১০ তারিখের সমাবেশ যেন সুষ্ঠু শান্তিপূর্ণভাবে অনুষ্ঠিত হতে পারে তার জন্য আমি সরকারের কাছে আহ্বান জানাচ্ছি। এর দায়-দায়িত্ব থাকবে সরকারে।’
কোথায় হবে সমাবেশ জানতে চাইলে মির্জা ফখরুল জানান, বেলা ৩টায় গুলশান কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে আনুষ্ঠানিকভাবে জানানো হবে।
মির্জা ফখরুল গাড়ি থেকে নেমে যুগ্ম কমিশনারকে বলেন, ‘আমি আমার পার্টি অফিসে যেতে চাই।’
এই সময় তাকে স্যার সম্বোধন করে যুগ্ম কমিশনার ফখরুলকে বলেন, ‘গতকাল বিকালে ও রাতে আমাদের পুলিশ সদস্যদের উপর বোমা নিক্ষেপ করা হয়েছে। পরবর্তী সময়ে সেখানে অভিযান চালিয়ে ককটেল বোমা উদ্ধার করা হয়েছে। এই মুহূর্তে আমাদের কাছে ঘটনাস্থলটি আইনের ভাষায় প্লেস অব অকারেন্স। সো এটা আমরা ক্রাইম সিন হিসেবে বিবেচনা করছি। ক্রাইস সিন হিসেবে আমাদের সিভাইড, বোম ডিসপোজাল টিমের সদস্যরা সেখানে কাজ করছে। সো এই মুহূর্তে কেউ সেখানে যেতে পারবে না।’
মহাসচিব আবারও প্রশ্ন করেন, ‘আমি আবার অফিসে যেতে পারব কি না?‘
যুগ্ম কমিশনার বলেন, ক্রাইম সিনের কাজ শেষ না হওয়া পর্যন্ত এখানে কেউ অ্যালাউড না। নো বডি অ্যালাউড টু গো।’
‘আমি বিএনপির সেক্রেটারি জেনারেল হিসেবে আমার পার্টি অফিসে যেতে পারব কি না এটা আপনি বলুন?’ এরকম প্রশ্নের জবাবে এই পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, ‘আমাদের ক্রাইম সিনের কাজ শেষ না হওয়া পর্যন্ত নো বডি ইজ অ্যালাউড টু এন্টার ইন টু দি পার্টি অফিস।’
পরে বিএনপি মহাসচিব গাড়িতে উঠে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে গতকাল নয়া পল্টনে পুলিশের গুলিতে নিহত পল্লবী ৫ নম্বর ওয়ার্ডে স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক মকবুল হোসেন মরদেহ দেখতে যান এবং তার পরিবারকে সান্ত্বনা দেন।
এ সময় স্বাস্থ্যবিষয়ক সম্পাদক ডা. রফিকুল ইসলাম ছিলেন।