'ধর্মীয় শিক্ষা সংকোচন আগামী প্রজন্মকে দুর্নীতিগ্রস্ত করবে'
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীম বলেছেন, শিক্ষা যেকোনো জাতির অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক অগ্রগতির মূল চালিকাশক্তি। নৈতিকতা ও মূল্যবোধ চর্চার কথা নতুন শিক্ষাক্রমে বারবার উল্লেখ করা হলেও ইসলামী শিক্ষাকে সামষ্টিক মূল্যায়নে ও একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণিতে বিজ্ঞান ও বাণিজ্য বিভাগ থেকে বাদ দিয়ে মানবিক বিভাগে ঐচ্ছিক রেখে কৌশলে সংকুচিত করা হয়েছে। যার ফলে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম নীতি-নৈতিকতাহীন দুর্নীতিগ্রস্ত প্রজন্ম হিসেবে গড়ে উঠার দ্বার উন্মোচিত হবে।
শুক্রবার (২৬ আগস্ট) রাজধানীর শাহবাগ চত্বরে ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশের উদ্যোগে ৩১তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
চরমোনাই পীর বলেন, ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশ ১৯৯১ সালের ২৩ আগস্ট প্রতিষ্ঠার পর থেকেই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সুষ্ঠু ধারার রাজনীতি চর্চা করছে। ছাত্ররাজনীতির নামে চলমান মাদক, সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি ও ধর্ষণের প্রচলিত সংস্কৃতির বাইরে নৈতিকতা সমৃদ্ধ মেধাবী প্রজন্ম তৈরিতে কাজ করছে ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশ। এতে দেশবাসী ও অভিভাবকরা সন্তুষ্ট।
১৫০ আসনে ইভিএমে নির্বাচন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, অধিকাংশ রাজনৈতিক দলের তীব্র আপত্তি ও ইভিএমে অনাস্থা সত্ত্বেও নির্বাচন কমিশন কর্তৃক ১৫০ আসনে ইভিএমে নির্বাচনের সিদ্ধান্ত অযৌক্তিক। প্রায় সব রাজনৈতিক দল ইভিএমের বিপক্ষে মতামত দিলেও সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে নির্বাচন কমিশন তাদের মতামতকে আমলে নেয়নি। রাজনৈতিক দলগুলোকে ডেকে মতামত নেওয়ার পর তাদেরকে আশ্বস্ত করে এখন ধোঁকা দিচ্ছে সিইসি। সিইসির এমন সিদ্ধান্ত শুধুমাত্র আওয়ামী লীগ সরকারকে আবার ক্ষমতায় বসানোর অপকৌশল।
সভাপতির বক্তব্যে সংগঠনের কেন্দ্রীয় সভাপতি নূরুল করীম আকরাম বলেন, স্বাধীনতাত্তোর বাংলাদেশ সুবর্ণ জয়ন্তী উদযাপন করলেও এখনো আমরা শিক্ষার সংকট থেকে বের হতে পারিনি। বিজ্ঞানভিত্তিক, কর্মমূখী ও সর্বজনীন ইসলামী শিক্ষা কাঠামো প্রণয়নের জন্য আমাদের রাজপথে নামতে হচ্ছে। দেশের উন্নতির জন্য ডেমোগ্রাফিক ডেভিডেন্ড সুবিধা ব্যবহারে সরকার ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে। যেখানে দেশের শিক্ষিত কর্মক্ষম জনগোষ্ঠীকে কাজে লাগাতে সরকারগুলো বারবার ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে, সেখানে কারিগরি শিক্ষার সংকোচন নীতি গ্রহণ করা হচ্ছে।
এসময় তিনি পলিটেকনিক শিক্ষার্থীদের ন্যায়সঙ্গত দাবি ও আন্দোলনের সঙ্গে একাত্মতা ঘোষণা করেন।
সেক্রেটারি জেনারেল শেখ মুহাম্মাদ আল-আমিনের সঞ্চালনায় আয়োজিত প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী সমাবেশ থেকে সর্বস্তরের শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে নতুন শিক্ষাক্রম সংস্কার ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সপ্তাহে দু’দিন ছুটির বিষয়টি পুনর্বিবেচনার আহ্বান জানিয়েছে ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশ।
সমাবেশে বক্তব্য রাখেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মহাসচিব অধ্যক্ষ ইউনুস আহমাদ, প্রেসিডিয়াম সদস্য অধ্যাপক আশরাফ আলী আকন, প্রেসিডিয়াম সদস্য ও জাতীয় শিক্ষক ফোরামের কেন্দ্রীয় সভাপতি অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান, যুগ্ম-মহাসচিব মাওলানা গাজী আতাউর রহমান, মুহাম্মাদ আমিনুল ইসলাম, ইঞ্জিনিয়ার আশরাফুল আলম, সহকারী মহাসচিব ও ঢাকা মহানগর উত্তর সভাপতি অধ্যক্ষ শেখ ফজলে বারী মাসউদ, ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি আহমদ আব্দুল কাইউম, ইসলামী যুব আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সভাপতি মাওলানা নেছার উদ্দিন প্রমুখ।
এমএইচ/এসজি