'বিএনপির জাতীয় সরকার ফর্মুলা ষড়যন্ত্রকারীদের স্তব্ধ করে দিয়েছে'
বিএনপির জাতীয় সরকার ফর্মুলা ষড়যন্ত্রকারীদের স্তব্দ করে দিয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন দলটির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়।
শনিবার (৯ এপ্রিল) ‘গণতন্ত্রের মা দেশনেত্রী খালেদা জিয়ার মুক্তি ও সুচিকিৎসা এবং গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আন্দোলনের সাহসী যোদ্ধা তেঁজগাও কলেজ ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি আমিনুল ইসলাম জাকিরের সন্ধান দাবি’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
গয়েশ্বর চন্দ্র বলেন, একটি শব্দ ষড়যন্ত্রকারীদের স্তব্দ করে দিয়েছে। আমাদের দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান শব্দটি বিএনপির পক্ষ থেকে স্পষ্ট করেছেন। তা হচ্ছে নির্বাচনের আগে নির্বাচনকালীন নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে একটি সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচন এবং সেই নির্বাচনের নির্বাচিত প্রতিনিধিদের নিয়ে অথবা গণতন্ত্রের পক্ষে যারা থাকবে তাদের নিয়ে একটি জাতীয় সরকার গঠনের প্রস্তাব।
তিনি বলেন, আমাদের দলের অনেকের হয়তো খারাপ লাগতে পারে যে, মামলা হামলার শিকার হব আমরা; আর রাস্তা থেকে ধরে এনে জাতীয় সরকার গঠন করা হবে। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ করলাম সবাই, সরকার গঠন করল আওয়ামী লীগ।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য বলেন, মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে ১০ এপ্রিল প্রবাসী সরকার গঠন করা হলো। ২৬ মার্চ থেকে তার আগ পর্যন্ত কার নেতৃত্বে দেশে যুদ্ধ হয়েছে? জিয়াউর রহমানের নেতৃত্বে যুদ্ধ হয়েছে। দেশ স্বাধীনের পর যুদ্ধ বিধ্বস্ত একটি দেশকে পুনর্গঠন করতে একটি জাতীয় সরকারের প্রয়োজনীয়তা ছিল। কিন্তু সরকার গঠন করল আওয়ামী লীগ।
তিনি বলেন, দেশকে এই আওয়ামী লীগ সরকার যেখানে নিয়ে গেছে, সেখান থেকে সঠিক ট্র্যাকে ফেরাতে হলে সেই জাতীয় সরকারের প্রয়োজনীয়তা দেখা দিয়েছে। দেশে গণতন্ত্র নেই, মানবাধিকার নেই, আইনের শাসন নেই। এই রাষ্ট্রকে মেরামত করতে হলে গণতন্ত্রের পক্ষের শক্তিদের নিয়ে নির্বাচনের পরে জাতীয় সরকার গঠন করা অপরিহার্য। এ জন্যই বিএনপি নির্বাচনের আগে নিরপেক্ষ সরকার এবং নির্বাচনের পরে জাতীয় সরকারের কথা বলছে।
ছাত্রদল নেতা নিখোঁজ আমিনুল ইসলাম জাকিরের সন্ধান দাবি করে গয়েশ্বর বলেন, নৃশংস হত্যাকাণ্ডের চেয়ে গুম আরও নৃশংস। একজন মানুষকে হত্যা করলে অন্তত তার মরদেহ পাওয়া যায়। সামাজিক ও ধর্মীয় কিছু আনুষ্ঠানিকতাও আছে। মৃত্যুবার্ষিকীতে স্মরণও করা যায়। কিন্তু গুম করা হলে জীবিত নাকি মৃত সেটাও বলা যায় না। এটা ভয়াবহ মানবাধিকার লঙ্ঘন। গুম হওয়াদের নিয়ে যারা রাষ্ট্র পরিচালনা করছেন তারা ঠাট্টা মশকরা করেন। এই অধিকার তাদের কে দিয়েছে?
সরকারের সমালোচনা করে তিনি বলেন, এই সরকার গুম, খুন, লুটপাট, মানবপাচার, নারীপাচার, মুদ্রাপাচারসহ সব কিছুতেই পারদর্শী। এ জন্য কোনো নোবেল থাকলে সেটা এই সরকার প্রধান পেতেন। একটি সরকারের অপকর্মের সমালোচনা করা যাবে না, এটা আমাদের সংবিধানে নেই।
আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, বাংলাদেশের মানুষ ধর্মপরায়ণ, এখানে নাস্তিক নেই। এই দেশে যেসব মুসলিম ভাইয়েরা আছেন তারা ধর্মপরায়ণ; জঙ্গী নয়। বাংলাদেশের মানুষের ওপর এ অপবাদ দিয়ে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ টিকে আছে, আবারও ক্ষমতায় টিকে থাকার চেষ্টা করছে। তাই পশ্চিমা বিশ্বসহ গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র ও সংস্থাগুলোকে বলব, যে দেশে জঙ্গীবাদ-ই নেই, সেখানে জঙ্গী নির্মূলেরও কোনো প্রয়োজন নেই।
বাংলাদেশ গুম প্রতিরোধ ঐক্যপরিষদের উদ্যোগে আবদুল্লাহ আল জুবায়েরের সভাপতিত্বে ও সাজ্জাতুল হানিফ সাজ্জাতের পরিচালনায় আরও বক্তব্য রাখেন চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আব্দুস সালাম, বিএনপি নেতা ফজলুল হক মিলন, আমিরুল ইসলাম খান আলীম, ছাত্রদলের সভাপতি ফজলুর রহমান খোকন প্রমুখ।
এমএইচ/টিটি