জাতীয় সরকার গঠন ইস্যুতে দোটানায় বিএনপি
সরকার পতনের আন্দোলনে সরকার বিরোধী সকল রাজনৈতিক দলকে পাশে পেতে কিছুটা ভিন্ন পথে হাঁটার ভাবনায় বিএনপি। নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে গণতন্ত্রমনা সকল রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে অনানুষ্ঠানিকভাবে বৈঠক সম্পন্ন করেছে দলটি।
বৈঠকে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের পক্ষ থেকে উঠে আসা ইস্যুগুলোর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে জাতীয় সরকার গঠন প্রক্রিয়া আর বিএনপির পরিকল্পনা হচ্ছে নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন আদায়। ফলে দলটিতে 'জাতীয় সরকার গঠন' নিয়ে এখনো ঐক্যমতে পৌঁছাতে পারছে না নেতারা।
নির্দলীয় সরকারের অধীনে জাতীয় নির্বাচন এবং জাতীয় সরকার গঠন এই দুই ইস্যুতে বিএনপির জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়া ঝুলে রয়েছে। তাই ঐক্য প্রক্রিয়াকে চূড়ান্ত রূপ দিতে বিএনপি সিদ্ধান্তে নীতিগত পরিবর্তন আনতে যাচ্ছে।
দলটির হাইকমান্ড মনে করে আগে নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন আদায়, পরবর্তীতে ক্ষমতায় যেতে পারলে গণতন্ত্রমনা সকল রাজনৈতিক দলগুলোকে নিয়ে সরকার গঠন করা হবে, যে সরকারের নামকরণ থাকবে 'জাতীয় সরকার'। সেই লক্ষ্যে কিছুদিনের মধ্যেই জাতীয় সরকার গঠন প্রক্রিয়ার একটি খসড়া রুপরেখা প্রকাশ করবে দলটি।
এদিকে ইতোমধ্যে দেশের সকল গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচ্য বিষয়গুলো প্রতিবেদন আকারে নিয়ে দলের স্থায়ী কমিটির একজন সদস্য লন্ডন পৌঁছেছেন। তিনি সেখানে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে সার্বিক বিষয় তুলে ধরবেন। যা পরবর্তীতে দলের নীতিনির্ধারণী ফোরাম স্থায়ী কমিটির সদস্যদের বৈঠকে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে, সেই আলোকে রূপরেখাও প্রকাশ করা হবে।
নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের পর যারা গণতান্ত্রিক শক্তির পক্ষে থাকবে তাদের নিয়ে জাতীয় সরকার গঠন করা হবে বলে জানিয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী।
নির্বাচনের আগে জাতীয় সরকার নয়, তার জন্য সবার আগে প্রয়োজন নির্বাচনকালে একটি নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকার, যাদের অধীন সবার কাছে একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন হবে। নির্বাচনে যে ফলাফল আসবে, তার ভিত্তিতে জাতীয় সরকার হবে।
জাতীয় সরকার দাবি সরকারের কূটচাল কিনা সন্দেহ প্রকাশ করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়।
গয়েশ্বর বলেন, আমাদের মধ্যে নানা বিভ্রান্তি থাকতে পারে, চাওয়া পাওয়া থাকতে পারে। অনেক সময় অনেক কিছু কথা আসছে৷ আমরা চাচ্ছি নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন আর সেই লক্ষে আমরা আন্দোলন করছি৷ আবার যারা একটু ধৈর্য্য হারা হয়ে গেছে তারা আবার চাচ্ছে কি? জাতীয় সরকার৷ এখন জাতীয় সরকারটা কি? তার কি রুপরেখা তার কি তাৎপর্য? এখন এই জাতীয় সরকার রুপরেখা কারা করতেছে, এটা আবার সরকারের কূটচাল কিনা,কোন ভিত্তিতে এটাকে মুল আন্দোলনকে আড়াল করার জন্য সরকারের কোনো কিছু কিনা তা নিয়ে ধারনা আমাদের নাই৷
তিনি বলেন, আমাদের বৃহত্তর একটি জাতীয় ঐক্য। এটা জনগণের প্রত্যাশা৷ যেকোনো ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে কিংবা সৈরাচারের বিরুদ্ধে যখন আন্দোলন হয়, সবাই আশা করে একটা জাতীয় ঐক্য৷ জাতীয় ঐক্য জনগণের আস্থা অর্জন করে৷ এখানে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্য কার কতটুকু শক্তি আছে, সেটা বিবেচনার বিষয় না৷ বরঞ্চ সরকারের বাইরে যে কয়টি রাজনৈতিক দল আছে, তাদের একত্রিক করাটায় এই মুহুর্তে জরুরি৷
এমএইচ/এএস