দলীয় লোকদের লুটপাটের লাইসেন্স দিয়েছে সরকার: রিজভী
নিত্যপ্রয়োজনীয় দব্যমূল্য বৃদ্ধির কারণে মানুষের মনে উৎসব পালনের আনন্দ নেই মন্তব্য করে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন দলীয় লোকদের লুটপাটের লাইসেন্স দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। যে কারণে বাজারে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম আকাশছোঁয়া।
শুক্রবার (১৮ মার্চ) বিকালে পবিত্র শবে বরাত উপলক্ষে বিএনপির উদ্যোগে নয়া পল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের নিচতলায় আলোচনা সভা, মিলাদ ও দোয়া মাহফিলে তিনি এ কথা বলেন।
দোয়া মাহফিল শেষে একই স্থানে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ জাসাসের উদ্যোগে গরিব মানুষের মধ্যে খাদ্যপণ্য বিতরণ করেন রুহুল কবির রিজভী।
দোয়া মাহফিলের আগে দেওয়া বক্তব্যে রুহুল কবির বলেন, আমাদের নতুন প্রেক্ষাপটে শবে বরাত পালন করতে হচ্ছে। আগে সারারাত নামাজ পরে ইবাদত করতাম আনন্দের সঙ্গে। কিন্তু আজ সেই আনন্দ তিরোহিত। দেশে দু:সহ রাজনৈতিক পরিস্থিতি তৈরি করা হয়েছে। এখানে কোনো কিছু স্বাভাবিক না। স্বাভাবিকভাবে জীবনযাপন করা যায় না।
তিনি বলেন, সরকার দেশে আতঙ্কের পরিবেশ তৈরি করেছে। এখন জাতি গোষ্ঠী ভেদে উৎসব পালন করতে গেলেও ভয় হয়। এখন মানুষের জীবনধারণ কঠিন হয়ে গেছে। নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম আকাশছোঁয়া। মানুষের নাগালের বাইরে।
রিজভী বলেন, মানুষ ভাত ও তরকারির বিকল্প খুঁজছে। এখন আগের ৫ টাকার বনরুটি ১০ টাকা। কলা ১০ টাকা। এগুলো হচ্ছে দুর্ভিক্ষের লক্ষণ। মানুষ বিকল্পও খুঁজে পাচ্ছে না। ভরা মৌসুমেও পণ্যের দাম বেড়েছে। এটা যে কৃত্রিমভাবে করা হয়েছে তা বলার অপেক্ষা রাখে না।
তিনি বলেন, হাট-ঘাট, বাজার-বন্দর সবই সরকারের লোকজনের সিন্ডিকেটের কবলে। শেখ হাসিনা তাদের ছেড়ে দিয়েছেন। তাদের লুটেপুটে খাওয়ার জন্য লাইসেন্স দিয়ে রেখেছেন। বাজার নিয়ন্ত্রণ করার কোনো উদ্যোগ নেই। বরং তুচ্ছ তাচ্ছিল্য করছে। তারা এসি রুমে বসে নিজেদের আখের গোছাতে ব্যস্ত। অন্য দিকে দেশে গরিব মানুষের সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। এজন্য দায়ী অবৈধ সরকার ও তার মন্ত্রীরা।
সরকার ভয়ের পরিবেশ তৈরি করেছে। মানুষের ভাত তরকারি কেড়ে নিয়েছে। শিশুদের দুধ কেড়ে নিয়েছে। তারা নিজেদের লোকদের দিয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সাজিয়েছেন। কিন্তু জনগণের ক্ষোভের কাছে কামানও টিকতে পারে না। আপনাকে যেতে হবে এটা অবশ্যম্ভাবী।
রিজভী বলেন, তারা দেশের গণতন্ত্র, নির্বাচন ও জনগণের ভোটাধিকার ধ্বংসের পর মানুষের কায়িক উপার্জন ধ্বংস করছে। ফলে আজকে এই শবে বরাতে মানুষ হালুয়া রুটির ব্যবস্থা করবে কী করে? তাদের মনে তো আনন্দ নেই। তাই আসুন আমরা আজকে বিশেষ এই মহিমান্বিত রাতে মহান আল্লাহর দরবারে প্রার্থনা করি যেন এই অবৈধ সরকার বিদায় নেন এবং খালেদা কারাগার থেকে মুক্তি পান, তারেক রহমান সুস্থ হয়ে দেশে ফিরে আসেন এবং মানুষ ঠিকমতো খাবার ও বেঁচে থাকার সুযোগ পায়।
দোয়া মাহফিলে অংশ নেন বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মো. আবদুস সালাম, বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা মীর সরফত আলী সপু, জয়নাল আবেদীন মেসবাহ, নাজিম উদ্দিন আলম, কাজী রফিক, তাঁতী দলের আহ্বায়ক আবুল কালাম আজাদ, সদস্য সচিব মজিবুর রহমান, ওলামা দলের আহ্বায়ক শাহ মো. নেছারুল হক, সদস্য সচিব অধ্যক্ষ নজরুল ইসলাম, জাসাসের জাকির হোসেন রোকন, শ্রমিকদলের কাজী মো. আমীর খসরু, মঞ্জুরুল ইসলাম মঞ্জু, বাদল হাওলাদার, কৃষক দলের সাবেক নেতা শাহজাহান মিয়া সম্রাট, স্বেচ্ছাসেবক দলের ডা. জাহেদুল কবির, ছাত্রদলের সাবেক কেন্দ্রীয় নেতা মেহবুব মাসুম শান্ত, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের আহ্বায়ক রাকিবুল ইসলাম রাকিবসহ বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের শতাধিক নেতাকর্মী।
এমএইচ/আরএ/