‘শিবির সন্দেহে’ ছাত্রলীগ কর্মীকে হল থেকে বের করে দিলেন অন্যরা
লেখা ও ছবি : নুরুল ইসলাম রুদ্র, শাবিপ্রবি প্রতিনিধি
‘শিবিরের সাথে সংশ্লিষ্টতা’র অভিযোগ এনে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগ কর্মী ও বাংলা বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী আব্দুল বাছির জুয়েলকে শাহ পরান হল থেকে বের করে দিয়েছেন শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগ নেতা আশরাফ কামাল আরিফ গ্রুপের অনুসারীরা। শনিবার বিকাল সাড়ে পাঁচটায় হলটির ২১৯ নম্বর কক্ষ থেকে তারা তাকে বের করে দেন । তবে অভিযোগ অস্বীকার করেছেন তাদের দল নেতা ছাত্রলীগ নেতা আশরাফ কামাল আরিফ।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গিয়েছে, আশরাফ কামাল আরিফ, মাহবুবুর রশিদ ও আব্দুল্লাহ আল রুমান নিয়ন্ত্রিত গ্রুপটিতে বিভিন্ন দল ও উপ-দল রয়েছে। নেতা,কর্মীদের নিজেদের মধ্যে অন্তর্কোন্দল ও আগামী কমিটিতে পদ পাওয়ার লোভে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন সময়ে ঝগড়া ও বাকবিতন্ডা করতে দেখা গিয়েছে। এমনই একটি ঘটনায় আব্দুল বাছির জুয়েলকে হল থেকে বের করে দিয়েছেন আরিফের অনুসারীরা।
ছাত্রলীগের নেতা ও কর্মী লোকপ্রশাসনের ছাত্র সুমন মিয়া, আবু বকর, কম্পিউটার সায়েন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের ইফতেখার আহমেদ রানা, ইংরেজির মুজাহিদুল ইসলাম রিশাদসহ ২০-২৫ জন নেতা, কর্মীকে বাক-বিতন্ডা করতে দেখা গিয়েছে। এক পর্যায়ে কয়েকজনকে বলতে শোনা যায়, ‘ওরে বাইর কর, হলে কোন শিবির থাকতে পারবে না’। এ সময় কয়েকজনকে দেশীয় অস্ত্র ও লাঠি নিয়ে আশেপাশে ঘুরতে দেখা গিয়েছে।
হল থেকে বের করে দেওয়া ছাত্র আব্দুল বাছির জুয়েল বলেন, “আজকে গ্রুপের এক সিনিয়র নৃবিজ্ঞান স্নাতকোত্তরের ছাত্র রায়হান ভাইয়ের জন্মদিন ছিল। আমাদের মেসেঞ্জার গ্রুপে একটি পোস্ট দিয়েছিলাম। কয়েকজন বড় ভাই আমাকে পোস্টটি ডিলিট করতে বলেন। না করায় বিকালে কয়েকজন বড় ভাই এসে আমাকে ৫ মিনিটের মধ্যে হল থেকে বের হয়ে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। আমি ‘কেন বের হয়ে যাব?’ জানতে চাইলে ইফতেখার আহমদ রানা বলেছেন, ‘উপরের নির্দেশ রয়েছে। আরিফ ভাই নির্দেশ দিয়েছে বের হয়ে যেতে’।”
বিষয়টি জানাজানি হয়ে গেলে গ্রুপ লিডার আশরাফ কামাল আরিফ তাকে হল থেকে বের করে দেওয়ার বিষয়ে কাউকে কিছু না বলার নির্দেশ দিয়েছেন বলে জানান জুয়েল। শিবিরের সাথে সংশ্লিষ্টতা থাকার অভিযোগের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আমার পরিবারের কেউ শিবিরের সাথে সংশ্লিষ্ট নয়। তবুও তারা এমন কথা কেন বলেছে? আমি তা জানি না।’
ছাত্রলীগের শাবিপ্রবি’র নেতা আশরাফ কামাল আরিফ বলেছেন, ‘তার সিনিয়ররা জুয়েলের সিটে একজনকে দিয়ে তাকে আরেক রুমে দিতে চেয়েছিল। পরে তাদের সাথে তার কথা কাটাকাটি হয়েছে। তবে তারা এখন সমস্যাটির সমাধান করে দিয়েছে।’
সার্বিক বিষয়ে শাহ পরান হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ মিজানুর রহমান খান বলেন, ‘ঘটনাটি আমিও শুনেছি। অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেলে এই বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
ওএস।