২৫ ডিগ্রির নিচে এসি চালালে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্নের হুঁশিয়ারি

ছবি: সংগৃহীত
সচিবালয়সহ সরকারি-বেসরকারি অফিস, মসজিদ ও বাসাবাড়িতে ২৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে এসি চালানো যাবে না। নির্ধারিত তাপমাত্রার নিচে এসি চালানো হলে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হতে পারে বলে জানিয়েছেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান।
সোমবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে জেলা প্রশাসক সম্মেলন উপলক্ষে আয়োজিত প্রেস ব্রিফিংয়ে তিনি এ কথা জানান।
উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খান বলেন, "অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব গ্রহণের পর একটি ভঙ্গুর অর্থনৈতিক অবস্থা পেয়েছে। বিপুল পরিমাণ অর্থ পাচারের কারণে বিদ্যুৎ ও জ্বালানির মূল্য পরিশোধে কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে হয়েছে। এমন পরিস্থিতির মধ্যেও আসন্ন রমজানে বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক রাখতে আমরা প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নিয়েছি।"
তিনি জানান, শীতকালে দেশে বিদ্যুতের চাহিদা থাকে প্রায় ৯ হাজার মেগাওয়াট, কিন্তু গ্রীষ্মকালে এই চাহিদা বেড়ে দাঁড়ায় ১৭ থেকে ১৮ হাজার মেগাওয়াটে। চাহিদা বৃদ্ধির মূল দুটি কারণ হলো সেচের জন্য বিদ্যুৎ ব্যবহার এবং এসি বা কুলিং লোড। তিনি বলেন, "সেচ যেহেতু খাদ্য উৎপাদনের সঙ্গে সরাসরি যুক্ত, তাই এটি সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার পাবে। তবে এসির ব্যবহার যদি নিয়ন্ত্রিত হয়, তাহলে কয়েক হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সাশ্রয় করা সম্ভব।"
বিদ্যুৎ সাশ্রয়ের লক্ষ্যে ইতোমধ্যে বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে বলে জানান উপদেষ্টা। তিনি বলেন, "আমরা ধর্ম উপদেষ্টাকে অনুরোধ করেছি, যেন মসজিদগুলোতে তারাবির সময় এসি ২৫ ডিগ্রির নিচে না চালানোর নির্দেশনা দেন। একই নিয়ম সচিবালয়সহ সরকারি ও বেসরকারি অফিসেও কার্যকর করা হবে।"
তিনি আরও বলেন, "এসি ব্যবহারের এই নির্দেশনা যথাযথভাবে বাস্তবায়িত হচ্ছে কি না, তা মনিটর করতে বিদ্যুৎ বিভাগের একটি বিশেষ টিম কাজ করবে। যদি কোথাও এই নির্দেশনা লঙ্ঘিত হয়, তাহলে সেখানে লোডশেডিং করা হবে, এমনকি প্রয়োজনে বিদ্যুৎ সংযোগও বিচ্ছিন্ন করা হতে পারে। এটি শহর বা গ্রাম নির্বিশেষে সকল এলাকায় কার্যকর করা হবে।"
সরকারের পূর্বাভাস অনুযায়ী, চলতি গ্রীষ্মে বিদ্যুতের চাহিদা ১৮ হাজার মেগাওয়াটে পৌঁছাতে পারে। গত বছর প্রচণ্ড গরমের সময় দুই থেকে তিন হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুতের ঘাটতির কারণে লোডশেডিং হয়েছিল।
২০২৪ সালের ৩০ এপ্রিল সর্বোচ্চ ১৬ হাজার ৪৭৭ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করা সম্ভব হয়েছিল, যদিও বেশিরভাগ সময় উৎপাদন ছিল ১৫ হাজার মেগাওয়াটের আশপাশে।
সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী, বিদ্যুৎ ব্যবহারে সাশ্রয়ী না হলে এবছরও লোডশেডিংয়ের তীব্রতা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
