একুশে বইমেলা তৌহিদী জনতার ‘ক্ষোভ-বিক্ষোভ’ ন্যায়সঙ্গত: ফরহাদ মজহার
![](https://admin.dhakaprokash24.com/logo/placeholder.jpg)
লেখক, কবি ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক ফরহাদ মজহার। ছবি: সংগৃহীত
একুশে বইমেলায় ‘তৌহিদী জনতা’র প্রতিবাদ ও ক্ষোভ ন্যায়সঙ্গত বলে মন্তব্য করেছেন লেখক, কবি ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক ফরহাদ মজহার। তিনি বলেন, যারা এটি সহ্য করতে পারছেন না, তারা তৌহিদী জনতাকে ‘মব’ বলে অভিহিত করছেন, যা অন্যায়।
ফরহাদ মজহার বলেন, তসলিমা নাসরিন শুধু একজন লেখক নন, বরং তিনি প্রকাশ্যে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের বিরোধিতা করেছেন। বাংলাদেশের জনগণ তাকে দিল্লির আগ্রাসী স্বার্থ ও হিন্দুত্ববাদের প্রচারক হিসেবে দেখে। জুলাই গণঅভ্যুত্থানের পর দিল্লির প্রভাব ও হিন্দুত্ববাদী রাজনীতির একজন প্রতিনিধিকে ‘লেখকের স্বাধীনতা’র নামে প্রতিষ্ঠিত করার চেষ্টাকে শুধুমাত্র সাহিত্যিক দৃষ্টিকোণ থেকে বিচার করা যাবে না; এটি রাজনৈতিকভাবেও মূল্যায়ন করতে হবে।
ফেসবুকে দেওয়া এক পোস্টে তিনি প্রশ্ন করেন, "একুশের বইমেলায় কেন লেখকের স্বাধীনতার নামে হিন্দুত্ববাদী দিল্লির সাংস্কৃতিক আগ্রাসন প্রতিষ্ঠার চেষ্টা হচ্ছে? কারা এর পেছনে কাজ করছে? কেন করছে? স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উচিত এর জবাব দেওয়া।" তিনি আরও বলেন, “লেখকের স্বাধীনতার আড়ালে হিন্দুত্ববাদী রাজনৈতিক প্রচারণা চালানো হচ্ছে, আর এর বিরুদ্ধেই তৌহিদী জনতা প্রতিরোধ গড়ে তুলেছে। এটি নিছকই ধর্মীয় অনুভূতির বিষয় নয়, বরং স্বাধীনতার জন্য লড়াই।”
বইমেলায় জনসাধারণের প্রতিবাদের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “যখন একের পর এক মাজার ভাঙা হচ্ছে, তখন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। অথচ তসলিমা নাসরিনের বই স্টল থেকে সরানোর দাবি আসতেই কঠোর পদক্ষেপের হুমকি দেওয়া হচ্ছে।” তিনি একে ‘তৌহিদী জনতার ন্যায়সঙ্গত ক্ষোভ’ বলে অভিহিত করেন এবং বলেন, “তাদের বিরুদ্ধে ‘অপারেশন ডেভিল হান্ট’ চালানোর হুমকি আসছে, যা অগ্রহণযোগ্য।”
ফরহাদ মজহার বলেন, “একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির গণআদালত ছিল একটি রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত প্রচেষ্টা, যা আইন ও সংবিধানের বাইরে গঠিত হয়েছিল। সেই সময় এটিকে ‘মব জাস্টিস’ বলা হয়নি, অথচ এখন জনগণের ন্যায়সঙ্গত প্রতিবাদকে ‘মব জাস্টিস’ বলা হচ্ছে।” তিনি বলেন, “যদি ইনসাফের প্রশ্ন আসে, তাহলে তৌহিদী জনতা চাইলে গণআদালত গঠন করতে পারত, কিন্তু তারা তা করেনি। তারা শুধু বইমেলায় একজন বিতর্কিত লেখকের বই সরানোর দাবি করেছে।”
তিনি বলেন, “বাংলাদেশের বামপন্থি রাজনীতি ইসলামবিদ্বেষী। তারা বরাবরই ইসলামের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে এবং জাতিগত ফ্যাসিবাদের ভিত্তিতে রাজনৈতিক কৌশল সাজিয়েছে। তাদের রাজনৈতিক পরিকল্পনার মূল লক্ষ্যই হলো ইসলাম নির্মূল করা। তাই ‘তৌহিদী জনতা’র আন্দোলন অনেকের মনে আতঙ্ক সৃষ্টি করেছে।”
তিনি বলেন, “জুলাই গণঅভ্যুত্থানের পর জনগণের ঐক্য অটুট রাখা জরুরি। ইসলাম ও ইসলামবিদ্বেষী রাজনীতির বিভাজন সৃষ্টি করে জনগণকে বিভক্ত করা ঠিক নয়। এই বিভাজনের কারণে বাংলাদেশে বিপ্লবী রাজনৈতিক ধারার বিকাশ হয়নি।
ফরহাদ মজহার বলেন, “বাংলাদেশের রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক অঙ্গনে বড় পরিবর্তন প্রয়োজন। নিজেদের বদলাতে হবে, তাহলেই বাংলাদেশও বদলে যাবে।”
![Header Ad](https://admin.dhakaprokash24.com/images/single-post-anniversary.jpeg)