আগামী বছর থেকে বর্ষবরণের স্থান নির্দিষ্ট করে দেওয়া হবে: ডিএমপি কমিশনার
ডিএমপি কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী। ছবি: সংগৃহীত
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী বলেছেন, সারা পৃথিবীতেই নববর্ষে পটকা-আতশবাজি ফোটান হয়। তবে তারা নির্দিষ্ট স্থানে এ উৎসব করেন। আগামী বছর থেকে ঢাকায়ও বর্ষবরণ উৎসবের জন্য স্থান নির্দিষ্ট করে দেওয়া হবে।
মঙ্গলবার (৩১ ডিসেম্বর) থার্টি ফার্স্ট নাইট ও ইংরেজি বর্ষপূর্তি উপলক্ষে ডিএমপি কর্তৃক গৃহীত নিরাপত্তা ব্যবস্থা সংক্রান্ত সাংবাদিক সম্মেলনে এ কথা বলেন তিনি।
ডিএমপি কমিশনার বলেন, প্রথমত পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে থার্টি ফার্স্ট উদ্যাপিত হয়। বেশির ভাগ দেশে এটি নববর্ষ, আমাদের দেশে নয়। দ্বিতীয়ত অন্যান্য দেশে একটি নির্দিষ্ট স্থানে ইংরেজি নববর্ষ উদ্যাপনের আয়োজন করা হয়, পুরো শহরজুড়ে আতশবাজি ফুটানো হয় না। আমরাও এ বছর ঢাকা মহানগরীর একটি নির্দিষ্ট স্থানে থার্টি ফার্স্ট ও ইংরেজি নববর্ষ উদ্যাপনের অনুষ্ঠান আয়োজন করার চিন্তা করেছিলাম। কিন্তু এ বছর আমরা সেটি পারিনি। আশা করি আগামী বছর আমরা সেটি আয়োজন করব।
তিনি বলেন, থার্টি ফার্স্ট নাইটে যাতে আতশবাজি, পটকা, ক্লাস্টার বোমা, রকেট বোমা না ফুটানো হয় সে জন্য গত এক সপ্তাহ ডিএমপি রাজধানীতে অভিযান পরিচালনা করে ১৭২ কেজি আতশবাজি, পটকা, ক্লাস্টার বোমা, রকেট বোমা জব্দ করেছে। এ বিষয়ে পাঁচটি মামলা হয়েছে এবং পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
পুলিশের মনোবল ফিরে এসেছে কি না- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, পুলিশের মনোবলের যে ঘাটতি ছিল, এটি আমরা উতরে উঠেছি। আমাদের এখনো কোনো সমস্যা নেই। আমরা যে কোমায় যাওয়ার অবস্থায় গিয়েছিলাম, সেটি থেকে ফিরে এসেছি। আমাদের অফিসারদের মনোবল এখন অনেক ভালো।
নগরবাসীর উদ্দেশে ডিএমপি কমিশনার বলেন, শুধু পুলিশ বা পরিবেশ অধিদপ্তর দিয়ে শব্দদূষণ বন্ধ করা সম্ভব নয়। এর জন্য প্রত্যেক নাগরিকের দায়িত্ব রয়েছে। আমরা সবার সহযোগিতা চাই।
এদিকে থার্টি ফার্স্ট ও ইংরেজি নববর্ষ উদ্যাপনকে ঘিরে ঢাকা মহানগরীতে কেমন পুলিশ ফোর্স মোতায়েন করা হবে জানতে চাইলে অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার এসএন নজরুল ইসলাম বলেন, ঢাকা শহরের নিরাপত্তা নিশ্চিতে রেগুলার পুলিশ মোতায়েন থাকে। প্রত্যেক ফাঁড়ি থেকে রাতের বেলা কমপক্ষে দুটি পেট্রল টিম থাকে, থানা থেকে চারটি-পাঁচটি টিম থাকে। এটা আমাদের রেগুলার ডিপ্লয়মেন্ট। আজকে শুধু থার্টি ফার্স্ট নাইট উপলক্ষে ৩ হাজার পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। আমরা মনে করছি এটা যথেষ্ট। আমরা কিছু পয়েন্টকে টার্গেট করেছি। বিশেষ করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, গুলশান, ৩০০ ফিট, উত্তরা দিয়াবাড়ী এলাকায় বেশি পুলিশ মোতায়েন থাকবে। আমাদের পুলিশ ফোর্সের পাশাপাশি পরিবেশ অধিদপ্তরের ম্যাজিস্ট্রেটরা থাকবেন। ওনারা যে কোনো জায়গায় ভ্রাম্যমাণ আদালত চালালে আমাদের ফোর্স তাদের সহযোগিতা করবে।
সংবাদ সম্মেলনে থার্টি ফার্স্ট ও ইংরেজি নববর্ষ উদ্যাপনকে ঘিরে শব্দদূষণসহ নানা ক্ষতিকর দিক তুলে ধরেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব তপন কুমার বিশ্বাস। এ সময় তিনি বলেন, নির্দেশনা না মানলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আইন অমান্য করলে ৫ হাজার টাকা জরিমানা বা এক মাসের জেল অথবা উভয় দণ্ড হতে পারে। একাধিকবার আইন ভঙ্গ করলে সেই দণ্ড দ্বিগুণ হতে পারে। শব্দদূষণের কারণে প্রতি বছর ১২-১৫ হাজার মানুষ মৃত্যুবরণ করে বলেও জানান তিনি।