হাসপাতালে গিয়ে গণঅভ্যুত্থানে আহতদের তোপের মুখে স্বাস্থ্য উপদেষ্টা
হাসপাতালে গিয়ে গণঅভ্যুত্থানে আহতদের তোপের মুখে স্বাস্থ্য উপদেষ্টা। ছবি: সংগৃহীত
গণঅভ্যুত্থানে আহতদের দেখতে গিয়ে হাসপাতালে তোপের মুখে পড়েছেন স্বাস্থ্য উপদেষ্টা নূরজাহান বেগম। ঢাকায় নিযুক্ত ব্রিটিশ হাইকমিশনার সারাহ কুককে সঙ্গে নিয়ে আহতদের দেখতে হাসপাতালে যান স্বাস্থ্য উপদেষ্টা। এ সময় আহত সবার সঙ্গে দেখা না করে চলে আসায় তার গাড়ি আকটে দেয় বিক্ষুদ্ধ আহত ও তাদের স্বজনরা। এসময় আহতদের তোপের মুখে হাসপাতাল ছাড়তে হয়েছে তাদের।
বুধবার (১৩ নভেম্বর) রাজধানীর শেরে-বাংলা নগরে জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠানে (নিটোর) এ ঘটনা ঘটে।
জানা যায়, সকালে ব্রিটিশ হাইকমিশনার সারাহ কুকসহ নিটোরে গণঅভ্যুত্থানে আহত ছাত্র-জনতাকে দেখতে যান স্বাস্থ্য উপদেষ্টা। হাসপাতালের চতুর্থ তলার পুরুষ ওয়ার্ড দীর্ঘ এক ঘণ্টারও বেশি সময় নিয়ে পরিদর্শন করেন। এরপর তারা চলে এলে তৃতীয় তলায় থাকা আহত ও তাদের স্বজনরা ক্ষুদ্ধ হন এবং তাদের গাড়ি আটকে দেন। গাড়িতে কিল ঘুষি মারেন ক্ষুদ্ধ আহত ছাত্র-জনতা।
এ সময় হাসপাতালে আহতদের পরিদর্শনকালে উপদেষ্টার প্রোটকলে থাকা একজন এক রোগীকে ধাক্কা দেন এমন অভিযোগ এনে শোরগোলের সৃষ্টি হয়।
একই সময়ে গণঅভ্যুত্থানে আহতরা জুলাই স্মৃতি ফাউন্ডেশন থেকে অর্থ সহায়তা না পাওয়ার অভিযোগ তোলেন। ব্যাপক তোপের মুখে তাৎক্ষনিক দ্রুত হাসপাতাল প্রাঙ্গণ ছাড়ার চেষ্টা করেন উপদেষ্টা ও ব্রিটিশ হাইকমিশনার। তবে বিক্ষুব্ধরা তাদের গাড়ি ঘিরে আটকে রাখেন।
এ সময় গাড়ির সামনে একজন বসে পড়েন। গাড়ির ছাদে উঠে পড়েন একজন। কিছু সময় তারা গাড়িতে কিল-ঘুষিও মারতে থাকেন। নেমে আসতে বলেন গাড়ির চালককে। পরে নিরূপায় হয়ে স্বাস্থ্য উপদেষ্টা এবং ব্রিটিশ রাষ্ট্রদূত অন্য একটি গাড়িতে করে সেখান থেকে বেরিয়ে যান। পরে বিক্ষুব্ধরা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের ওই গাড়ি ও প্রটোকলে থাকা পুলিশের একটি গাড়ি আটকে দেন এবং রাস্তায় অবস্থান নেন।
হাসপাতালের গেট বন্ধ করে সেখানে অবস্থান নেওয়ায় রাস্তায় দীর্ঘ যানজট সৃষ্টি হয়। এসময় মো. হাসান নামে আহত এক শিক্ষার্থী বলেন, আমাদের এক একটা ওয়ার্ডে ৪৮ জন মানুষ আছে। কিন্তু তারা তাদের পছন্দের বিদেশি পাঁচজন সাংবাদিক নিয়ে এসেছেন এবং আমাদের দেশীয় কোনো সাংবাদিককে ঢুকতে দেওয়া হয়নি। তারা দুএকজনের সঙ্গে কথা বলে চলে গেছেন। কিন্তু আমাদের সঙ্গে কোনো কথা বলেননি। আমরা কথা বলতে গেলেও আমাদের বাধা দেওয়া হয়েছে। আমাদের সামান্য ট্রিটমেন্ট দিয়ে তিন মাস বসিয়ে রাখা হয়েছে। আমার পায়ে ৯টি অপারেশন করা হয়েছে, তারপরও এখন পর্যন্ত সুস্থ হতে পারিনি।