শহীদ মিনারে সাংবাদিক পীর হাবিবকে শেষ শ্রদ্ধা
সাংবাদিক ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক পীর হাবিবুর রহমানের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য তার মরদেহ রোববার (৬ জানুয়ারি) কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে আনা হয়। তার মরদেহে শেষ শ্রদ্ধা জানিয়েছেন সর্বস্তরের মানুষ।
শ্রদ্ধা জানানো শেষে দুপুর সাড়ে ১২টার পর জাতীয় প্রেসক্লাবে তার মরদেহে আনা হয় এবং সেখানে সাংবাদিক ও তার সহকর্মীদের শ্রদ্ধা নিবেদন ও জানাযা শেষে ডিআরইউতে নেওয়া হবে।
পীর হাবিবের ভাই পীর ফজলুর রহমান মিজবাহ এ সব তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, ‘প্রেসক্লাবে ও ডিআরইউ শেষে বেলা তিনটায় মরদেহ তার কর্মস্থল বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার বাংলাদেশ প্রতিদিন কার্যালয়ে নেওয়া হবে। সেখান থেকে মরদেহ তার নিজ এলাকা সুনামগঞ্জে নিয়ে যাওয়া হবে।’
পীর হাবিবুর রহমানের মরদেহে শেষ শ্রদ্ধা জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে মাহবুব উল আলম হানিফ, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, আফজাল হোসেন, পানি সম্পদ উপমন্ত্রী এনামুল হক শামীম, আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক শফিউল আলম নাদেল, ত্রাণ ও সমাজ কল্যাণ সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী, শিক্ষা সম্পাদক শামসুর নাহার চাপা, দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, উপদপ্তর সম্পাদক সায়েম খান, কেন্দ্রীয় সদস্য আজিজুস সামাদ আজাদ ডন, জাসদ সভাপতি ও সাবেক তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু, ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু আহমেদ মন্নাফী, নগরের নেতা মোর্শেদ কামাল, মিরাজ হোসেন, গোলাম সরোয়ার কবির, আব্দুল মতিন ভূইয়া, জগলুল কবির, আক্তার হোসেন, রিয়াজ উদ্দিন রিয়াজ, শরিফুল ইসলাম শরিফ, গিয়াস উদ্দিন পলাশ।
এ ছাড়া মরদেহে শেষ শ্রদ্ধা জানিয়েছেন, গণস্বাস্থ্যের ট্রাস্টি ডা. জাফরউল্লাহ, আওয়ামী লীগের মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক মৃণাল কান্তি দাস, যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য তাজউদ্দিন আহমেদ তাজ, কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ, জাসদ ছাত্রলীগ, জাতীয় পার্টি, আন্তজাতিক ট্রাইব্যুনালের পক্ষ থেকে, রাবির ব্যাচ ৮৭, আমরা মুক্তিযাদ্ধা সন্তান, বাংলাদেশ আবৃত্তি পরিষদ, ফুটবলার কায়সার আহমেদসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠন শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
সাংবাদিক পীর হাবিবুর রহমান শনিবার (৫ ফেব্রুয়ারি) বিকাল ৪টা ৮ মিনিটে রাজধানীর ল্যাবএইড হাসপাতালে তিনি শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন। তার বয়স হয়েছিল ৫৮ বছর। পাঁচ ভাই ও দুই বোনের মধ্যে পীর হাবিব ছিলেন তৃতীয়। তার এক ছোটভাই পীর ফজলুর রহমান মিজবাহ বর্তমান জাতীয় সংসদ সদস্য। তিনি স্ত্রী, দুই সন্তান রেখে গেছেন।
তিনি ক্যান্সার আক্রান্ত ছিলেন। গত বছর অক্টোবরে মুম্বাই জাসলুক হাসপাতালে বোনম্যারো ট্রান্সপ্লান্টেশনের মাধ্যমে ক্যানসার মুক্ত হন। ২২ জানুয়ারি তিনি করোনাভাইরাস আক্রান্ত হন। বিশিষ্ট চিকিৎসক অধ্যাপক এবিএম আব্দুল্লাহর পরামর্শে ল্যাবএইড হাসপাতালে ভর্তি হন। করোনামুক্ত হওয়ার পর কিডনি জটিলতার কারণে তাকে ভর্তি হতে হয় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থাতেই শুক্রবার (৪ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় স্ট্রোক করলে তাকে ল্যাবএইড হাসপাতালের আইসিইউতে স্থানান্তর করা হয়।
পীর হাবিবুর রহমানের জন্ম ১৯৬৩ সালের ১২ নভেম্বর সুনামগঞ্জ শহরে। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াকালে ১৯৮৪ সাল থেকে সাংবাদিকতায় তার হাতেখড়ি। রিপোর্টার হিসেবে দৈনিক বাংলাবাজার, যুগান্তর, মানবকণ্ঠ, আমাদের সময় পত্রিকায় কাজ করেছেন। কিছু দিন তিনি অনলাইন মাধ্যমে কাজ করেন। তিনি নিউজপোর্টাল পূর্বপশ্চিমবিডি.নিউজের প্রতিষ্ঠাতা। সর্বশেষ বর্তমানে বাংলাদেশ প্রতিদিনের নির্বাহী সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করছিলেন। তিনি রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও কলামিস্ট হিসেবে জনপ্রিয়তা অর্জন করেছিলেন।
এপি/এসএ/