ববির পরামর্শে নগদে বিদ্যুৎ-গ্যাস বিল পরিশোধ বন্ধ করেছিলেন নসরুল হামিদ
রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক ববি ও তৎকালীন বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু। ছবি: সংগৃহীত
আওয়ামী লীগ সরকার পতিত হওয়ার পর থেকেই দেশে বয়ে যাচ্ছে পরিবর্তনের হাওয়া। এই হাওয়া লেগেছে মোবাইল ব্যাংকিং সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান নগদেও। বদলে গেছে নগদের পরিচালনা পর্ষদ। প্রতিষ্ঠানটি বাংলাদেশ ব্যাংকের তত্ত্বাবধানে পরিচালিত হবে। এমন পরিস্থিতিতে নগদ বন্ধ করার জন্য নানাভাবে সরকারের শীর্ষ পর্যায় থেকে চেষ্টা চলেছে বলে অভিযোগ করেছেন প্রতিষ্ঠানটির প্রতিষ্ঠাতা ও সাবেক প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা তানভীর এ মিশুক।
সোমবার (২৬ আগস্ট) রাতে সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকে বিষয়টি নিয়ে একটি স্ট্যাটাস দিয়েছেন তিনি। মিশুক অভিযোগ করেছেন, ববির পরামর্শে নগদের মাধ্যমে বিদ্যুৎ-গ্যাস বিল পরিশোধের ব্যবস্থা বন্ধ করেছিলেন প্রতিমন্ত্রী। একটি গণমাধ্যমে বিষয়টি নিয়ে করা খবর শেয়ার করে তিনি এসব কথা বলেন।
তানভীর আহমেদ মিশুক তার ফেসবুক পোস্টে লিখেছেন, আজকে বণিক বার্তার একটা নিউজ দেখে ভালো লাগলো, জাতি অবশেষে জানতে পারলো গত সরকারের এর পিছনের মানুষ গুলো কারা। আজ নিউজটা দেখে একটা ঘটনাটা মনে পড়ে গেল, নগদের মাধ্যমে গ্যাস বিল, বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ করার প্রক্রিয়াটা বিগত সরকার একবার বন্ধ করে দিয়েছিল। তৎকালীন বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু’র সরাসরি নির্দেশে বন্ধ করা হয়। যার নেপথ্যে ছিলেন ব্র্যাক ও বিকাশের আসিফ সালেহ।
তিনি আরও লিখেছেন, কেন বন্ধ করা হলো তা জানার জন্য আমরা মন্ত্রীর সাথে যোগাযোগ করি। মন্ত্রী আমাদের বলেন, রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক ববি বলেছেন বন্ধ করে দিতে। কারণ, আসিফ সালেহ হচ্ছেন ববির ঘনিষ্ঠ বন্ধু। তাদের সঙ্গে সিআরআইতে একসাথে কাজ করেন এবং কোটি কোটি টাকা ডোনেশন দেন। ববিকে দিয়ে আসিফ সালেহ বিপুকে সিআরআই ডেকে নিয়ে নগদ বন্ধ করার নির্দেশ দেন। বিপু সাহেব আরও বলেন, বন্ধু ববির ক্ষমতা ব্যবহার করে আসিফ সালেহ যেভাবে নগদ বন্ধ করার জন্য উঠেপড়ে লেগেছে, বলা যায় না কখন কি হয়।
তানভীর এ মিশুকের অভিযোগ, বিগত সরকারেও আসিফ সালেহরা ক্ষমতা দেখিয়েছি, এ সরকারের সময়ও নগদের বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহার দেখিয়ে যাচ্ছে। বিগত প্রধানমন্ত্রীর বাম পাশে তাকে দেখেছি, এখন বর্তমান মাননীয় প্রধান উপদেষ্টার ডান পাশেও তাকে দেখছি। মাঝে মাঝে মনে হয়, দেশটা ব্র্যাক এবং বিকাশের, জনগনের না।
এদিকে খবরটি নিয়ে আসিফ সালেহ সোমবার (২৬ আগস্ট) রাতে সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দিয়েছেন। তিনি লিখেছেন, 'রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক ববি ও তার পরামর্শক পর্ষদ' শিরোনামে একটি লেখা আমার ছবিসহ আজ বণিকবার্তায় বেরিয়েছে। এই লেখা ছাপানোর আগে আমার সঙ্গে পত্রিকার পক্ষ থেকে কোনও প্রকার যোগাযোগ করা হয়নি। সে কারণে এখানে এ বিভ্রান্তিকর শিরোনামটির ক্ল্যারিফিকেশন দেয়া প্রয়োজন।
তিনি আরও লিখেছেন, প্রথমত আমি রাদওয়ান সিদ্দিকের কোন পরামর্শক পরিষদের সদস্য নই। আমাকে ২০২০ সালের শেষে পলিসি ম্যাগাজিন Whiteboard এর Editorial advisory board-এ যোগ দিতে আমন্ত্রণ করা হয় সামাজিক সেক্টরের প্রতিনিধি হিসেবে। সম্পূর্ণ নির্দলীয় একটি ভূমিকায় পলিসি বিষয়ে engagement-এর অংশ হিসেবে আমি আমন্ত্রণ গ্রহন করি এবং এর অংশ হিসেবে পরবর্তী সময়ে আমি জলবায়ু পরিবর্তনে সরকার এবং বেসরকারি সংগঠনের ভূমিকার ওপর একটি লেখা দিই।
তিনি আরও লিখেছেন, এ বোর্ডে বিভিন্ন সেক্টরের প্রতিনিধিত্বকারী পেশাজীবি ও একডেমিকদের ভূমিকা ছিল মূলত ম্যাগাজিনের বিষয় নির্বাচনে মন্তব্য দেয়া। এর বাইরে সেখানে আমার আর কোনো ভূমিকা ছিলো না। পাশাপাশি এটাও পরিষ্কার করে রাখা প্রয়োজন, CRI-এর অন্য কোনও কাজের সাথে আমার কোনো সম্পৃক্ততা ছিলো না। আমি আশা করব আমার কাজই আমার হয়ে কথা বলবে।