কোটা আন্দোলনে ৮১৯ জন নিহত, ৬৯ শতাংশই ৩০ বছরের কম: এইচআরএসএস
ছবি: সংগৃহীত
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র–জনতার আন্দোলনের সময় কমপক্ষে ৮১৯ জন নিহত হয়েছেন, যার মধ্যে ৬৯ শতাংশই ৩০ বছরের কম বলে জানিয়েছে হিউম্যান রাইটস সাপোর্ট সোসাইটি (এইচআরএসএস)।
মঙ্গলবার (২০ আগস্ট) দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবে হিউম্যান রাইটস সাপোর্ট সোসাইটি (এইচআরএসএস) আয়োজিত ২৪ এর গণঅভ্যুত্থানে সংঘটিত হত্যাকাণ্ড ও মানবাধিকার লঙ্ঘন বিষয়ক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানায় তারা।
এইচআরএসএস জানায়, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র–জনতার আন্দোলনের সময় কমপক্ষে ৮১৯ জন নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে ৬৩০ জনের নাম জানা গেলেও ১৮৯ জনের নাম জানতে পারেনি তারা। নিহতদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি মারা গেছে ১৮ থেকে ৩০ বছর বয়সী তরুণ ও যুবক। তাদের সংখ্যা ২৪০ জন। আর শিশু নিহত হয়েছে ৮৩টি। যার মধ্যে ৩০ বছরের কম বয়সী রয়েছেন ৬৯ শতাংশ। এ ছাড়া সারাদেশে আহত হয়েছেন প্রায় ২৫ হাজার মানুষ। সংস্থাটির মানবাধিকার পর্যবেক্ষণবিষয়ক এক প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে।
সংস্থাটি জানিয়েছে, বিভিন্ন গণমাধ্যম, হাসপাতাল, প্রত্যক্ষ্যদর্শী ও ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যদের কাছ থেকে তথ্য নিয়ে তারা প্রতিবেদনটি তৈরি করেছে।
গত জুলাইয়ের শুরুতে শুধু ঢাকায় কোটা সংস্কার আন্দোলন হলেও ১৬ তারিখ থেকে তা ছড়িয়ে পড়ে সারাদেশে। ওই দিন সহিংসতায় নিহত হন ৬ জন। দিন যত বাড়তে থাকে, তত বাড়তে থাকে সহিংসতা, বাড়তে থাকে নিহতের সংখ্যা। হিউম্যান রাইটস সাপোর্ট সোসাইটি জানায়, সবচেয়ে বেশি মানুষ মারা গেছে সরকার পতনের দিন। ওই দিন নিহত হয়েছেন ২০৫ জন।
এমনকি এই হত্যাকাণ্ডে নিহতদের প্রায় ৭০ শতাংশই গুলিবিদ্ধ হয়ে প্রাণ হারিয়েছে। এ সময় স্বাধীন তদন্ত কমিশন গঠনসহ বিচার প্রক্রিয়া সংস্কার ও জবাবদিহি নিশ্চিত করার আহ্বান জানায় এইচআরএসএস।
হিউম্যান রাইটস সাপোর্ট সোসাইটির গবেষণা কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘নিহতদের পূর্ণাঙ্গ তালিকা প্রকাশের পাশাপাশি জাতিসংঘের সাথে সমন্বয় করে এসব হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িতদের দ্রুত বিচার করতে হবে।’
মানবাধিকারকর্মী নূর খান লিটন বলেন, ‘সরাসরি হত্যার সঙ্গে জড়িত ও নির্দেশদাতাদের পাশাপাশি রাজনৈতিকভাবে যারা কোটা সংস্কার আন্দোলনের সময়ের হত্যাকাণ্ডকে সমর্থন করেছেন, তাদেরও বিচারের আওতায় আনা উচিত।’
এ ছাড়া সহিংসতায় যেসব নিষিদ্ধ অস্ত্র ব্যবহার করে হত্যা করা হয়েছে, তা কোথা থেকে দেশে এসেছে, সেটিও খুঁজে বের করার তাগিদ দিয়েছেন মানবাধিকারকর্মীরা।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন হিউম্যান রাইটস সাপোর্ট সোসাইটির উপদেষ্টা ও আইন সালিশ কেন্দ্রের নির্বাহী পরিচালক নূর খান লিটন, সংগঠনটির ভাইস চেয়ারম্যান ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক সাইফুদ্দিন আহমেদ, নির্বাহী পরিচালক ইজাজুল ইসলামসহ আরও অনেকে।