বোট ক্লাবের সভাপতির পদ ছাড়লেন বেনজীর
ছবি: সংগৃহীত
রাজধানীর আশুলিয়ায় অবস্থিত ঢাকা বোট ক্লাবের সভাপতির পদ ছেড়েছেন পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বেনজীর আহমেদ। ভারপ্রাপ্ত সভাপতি করা হয়েছে আম্বার গ্রুপের কর্ণধার রুবেল আজিজকে। জানা যায়, র্যাবের ডিজি থাকাকালীন সময়ে বেনজীর আহমেদ বোট ক্লাবের সঙ্গে সম্পৃক্ত হন।
এরপর বেনজীর আহমেদ পুলিশ বাহিনীর প্রধান হিসেবে দায়িত্ব নিলেও সরকারি চাকরির নীতিমালা অমান্য করে তিনি বোট ক্লাবের সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। বিষয়টি নিয়ে বিভিন্ন মহলে আলোচনা সমালোচনা থাকলেও বেনজীরের প্রভাবের কারণে কেউ কিছু বলার সাহস দেখায়নি।
বোট ক্লাবের সঙ্গে বেনজীরের সম্পৃক্ততার বিষয়টি প্রথম আলোচনায় আসে একজন সুপরিচিত চলচ্চিত্র অভিনেত্রীকে কেন্দ্র করে বোট ক্লাবে অপ্রীতিকর ঘটনার প্রেক্ষিতে। বিপুল অর্থ দিয়ে কীভাবে একজন পুলিশ কর্মকর্তা এই ধরনের ক্লাবের সদস্য হতে পারেন তা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে জাতীয় সংসদেও। বিশেষ করে একটি বাণিজ্যিক ক্লাবের সভাপতি সরকারি কর্মকর্তা হিসেবে আইজিপি থাকতে পারেন কি না, সে প্রশ্নও উঠেছিল তখন।
সাবেক এই পুলিশ প্রধানের ক্লাব নেশার বিষয়টি আলোচনায় রয়েছে কোন কোন মহলে। ঢাকা ক্লাব, গুলশান ক্লাব, বনানী ক্লাব, উত্তরা ক্লাবের মতো অভিজাত সব ক্লাবেরই সদস্য তিনি। এসব ক্লাবের সদস্য হতে গিয়ে তিনি কোটি কোটি টাকা ব্যয় করেছেন। অবসরে যাওয়ার কিছুদিন আগে মাস খানেকের ব্যবধানে তিনি চারটি অভিজাত ক্লাবের সদস্য হন বলে জানা গেছে। বোট ক্লাব দিয়েই তার এই ক্লাব নেশা শুরু হয়েছিল বলে জানা গেছে।
সভাপতির দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে নিজের ক্ষমতার অপব্যবহার করে বোট ক্লাবের দখল নেন। নিজের মতো করে গঠনতন্ত্র সংশোধন করে অনেক কাজ করেছেন। ক্লাবের সদস্যরা বেনজীরের কাছে জিম্মি হয়ে থাকতেন। ক্লাবের ফান্ডে থাকা অর্থও বেনজীর আত্মসাৎ করেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
উল্লেখ্য যে, সাম্প্রিতক সময়ে একটি দৈনিকে বেনজীর আহমেদের দুর্নীতি নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশিত হলেও হাইকোর্টের নির্দেশে দুদক অনুসন্ধান শুরু করে। এরপর থেকে একের পর এক দুর্নীতি আর বিপুল সম্পত্তির তথ্য বেরিয়ে আসে সাবেক এই পুলিশ প্রধানের বিরুদ্ধে। ইতোমধ্যে তিন দফায় আদালত তার সম্পত্তি ক্রোক করার আদেশ দিয়েছেন। এদিকে বেনজীর আহমেদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগের প্রাথমিক সততা পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছে দুদক। শিগগির তার বিরুদ্ধে মামলা করা হবে।