বেনজীরের আবেদনে বাড়ল সময়, দুদকে হাজির হতে হবে ২৩ জুন
পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বেনজীর আহমেদ। ছবি: সংগৃহীত
পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বেনজীর আহমেদকে ফের তলব করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। আগামী ২৩ জুন তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য দিন ধার্য করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৬ জুন) বিকেলে দুদকের প্রধান কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান সংস্থাটির সচিব খোরশেদা ইয়াসমীন।
খোরশেদা ইয়াসমীন বলেন, ‘সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদ জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগের বিষয়ে দুদক তলব করলেও শুনানিতে অনুপস্থিত থাকায় আগামী ২৩ জুন তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদের তারিখ নির্ধারণ করা হয়’।
এর আগের নোটিশ অনুযায়ী আজ বৃহস্পতিবার দুর্নীতির অভিযোগের জবাব দেওয়ার কথা ছিল বেনজীর আহমেদের। তিনি বুধবার ১৬ দিনের সময় চেয়ে আইনজীবীর মাধ্যমে কমিশনে আবেদন করেছেন। অনানুষ্ঠানিক একাধিক সূত্রে এই খবর জানা গেছে।
দুদক কমিশনার মো. জহুরুল হক বুধবার দুদকের প্রধান কার্যালয়ে এক প্রশ্নের জবাবে সাংবাদিকদের বলেন, বেনজীর আহমেদ ১৫ দিনের সময় চেয়ে আবেদন করেছেন– এই বিষয়টি তিনি জেনেছেন। এই আবেদনটি মূলত অনুসন্ধানকারী কর্মকর্তাদের কাছে থাকে। অনুসন্ধানকারী কর্মকর্তারা আবেদন দেখে সন্তুষ্ট হলে ১৫ দিনের সময় মঞ্জুর করতে পারেন। ১৫ দিন পর্যন্ত সময় চাওয়ার ব্যাপারে দুদক আইনে বলা আছে। অনুসন্ধানকারী কর্মকর্তারা এই কার্যক্রমটি পুরোপুরি স্বাধীনভাবে পরিচালনা করে থাকেন। এই বিষয়টি কমিশনের এখতিয়ারভুক্ত নয়।
নির্ভরযোগ্য একাধিক সূত্রে জানা গেছে, দুদকের অনুসন্ধানে বেনজীর আহমেদ ও তার পরিবারের সদস্যদের নামে বিপুল পরিমাণ সম্পদের তথ্য জনসমক্ষে আসার পর তিনি স্বপরিবারে সিঙ্গাপুর চলে গেছেন ৪ মে। তার ও তার পরিবারের সদস্যদের তলবী নোটিশ পাঠানো হয় ২৮ মে। নোটিশের পর আইনজীবীর মাধ্যমে সময় চেয়ে আবেদন করতে হলে সেই আইনজীবীকে আইনি প্রক্রিয়ায় ক্ষমতা প্রদান করতে হয়। তলবী নোটিশের আগে এই ক্ষমতা দেওয়ার সুযোগ নেই। বিদেশে চলে যাওয়ার পর দুদকের জারি করা তলবী নোটিশের বিপরীতে সময় চাওয়ার জন্য বেনজীর তার আইনজীবীকে আবেদন করার ক্ষমতা কীভাবে প্রদান করলেন– এ নিয়ে ধূম্রজাল সৃস্টি হয়েছে। এই সময়ে তার আইনজীবী বেনজীর যে দেশে অবস্থান করছেন সেই দেশে গিয়ে বেনজীরের স্বাক্ষরে পাওয়ার অব অ্যাটর্নি নিয়ে দেশে ফিরে আইনজীবী সময় চেয়ে আবেন করতে পারবেন। এই সময়ের মধ্যে বেনজীরের কোনো আইনজীবী সিঙ্গাপুরে বেনজীরের কাছে গিয়েছেন কিনা– এ ব্যাপারে সুনির্দিষ্ট কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।
জানা গেছে, আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ১৫ দিনের সময় মঞ্জুর করার পর জিজ্ঞাসাবাদের পরবর্তী তারিখে বেনজীর ও তার পরিবারের সদস্যদের অবশ্যই দুদকে হাজির হতে হবে। ওই সময় হাজির না হলে অভিযোগের বিষয়ে তাদের বক্তব্য নেই বলে ধরে নিয়ে তাদের বিরুদ্ধে অনুসন্ধানের পরবর্তী কার্যক্রম চলবে।
দুদক আইন অনুযায়ী, এরপর বেনজীর ও তার পরিবারের সদস্যদের সম্পদের হিসাব চেয়ে তাদের ঠিকানায় নোটিশ পাঠানো হবে। তাদের ঠিকানায় কাউকে না পাওয়া গেলে ভবনের ওয়ালে নোটিশ টানিয়ে জারি করা হবে। তারা সম্পদের হিসাব জমা দেওয়ার ক্ষেত্রে সময় চেয়ে আবেদন করতে পারবেন। এসব ক্ষেত্রে তারা কার্যকর ভূমিকা না রাখলে আইন অনুযায়ী অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে মামলা করা হবে। পরে মামলা তদন্ত করে আদালতে চার্জশিট দেওযা হবে।