রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪ | ৭ পৌষ ১৪৩১
Dhaka Prokash
Header Ad

এমপি আনারের হত্যাকান্ডের মূলহোতা কে এই শাহিন?

ছবি: সংগৃহীত

ভারতে চিকিৎসার জন্য গিয়ে নৃশংস হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছেন বাংলাদেশের ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজিম আনার (৫৭)।

তবে হত্যা করা হয়েছে এমন আলামত পাওয়া গেলেও এখন পর্যন্ত এমপি আনারের মরদেহ উদ্ধার করতে পারেনি পুলিশ। মরদেহের পাশাপাশি চাঞ্চল্যকর এই হত্যাকাণ্ডের পেছনে উঠে এসেছে বাংলাদেশি আমেরিকান আখতারুজ্জামান শাহিন নামে একজনের নাম। কে এই মাস্টারমাইন্ড? আরও কারা জড়িত? এসবের প্রশ্নের উত্তরও খুঁজছে কলকাতা পুলিশ।

তবে হত্যায় সংশ্লিষ্টতার ক্ষেত্রে এখনও পর্যন্ত একটি নাম এসেছে জোরালোভাবে। তিনি বাংলাদেশি আমেরিকান আখতারুজ্জামান শাহিন, কলকাতায় এসেছিলেন আমেরিকার পাসপোর্ট ব্যবহার করে। এই আখতারুজ্জামানই কলকাতায় এক লাখ রুপিতে একটি ফ্ল্যাট ভাড়া নিয়েছিলেন এক বছর আগে।

পরিকল্পিতভাবে খুন করে কলকাতা ছেড়ে বাংলাদেশ হয়ে ইতোমধ্যে তিনি আমেরিকায় পাড়ি জমিয়েছেন বলে ধারণা করছেন গোয়েন্দা কর্মকর্তাদের একাংশ।

এমপি আনারের হত্যায় সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে বাংলাদেশের তিনজন ও কলকাতায় একজনকে আটক করা হয়েছে। গ্রেপ্তারদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে কিছু তথ্য জানতে পেরেছেন বাংলাদেশ ও কলকাতা পুলিশের কর্মকর্তারা। তবে সেই মূল পরিকল্পনাকারী শাহিন আটক নাকি সত্যিই পালিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমিয়েছেন তা এখনও আনুষ্ঠানিকভাবে জানায়নি দুই দেশের পুলিশ।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, চিকিৎসার প্রয়োজনে পশ্চিমবঙ্গে যাওয়ার পর কলকাতার বরাহনগরে পারিবারিক বন্ধু গোপাল বিশ্বাসের বাড়িতে প্রথম উঠেছিলেন আনার। আনার নিখোঁজ হওয়ার পর গত ১৮ মে কলকাতার বরাহানগর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন গোপাল বিশ্বাস।

বরাহনগর থানার তদন্ত সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা সুবেন্দু গোস্বামীকে উদ্বৃতি করে সংবাদমাধ্যমকে গোপাল বিশ্বাস জানান, সংসদ সদস্য আনার হত্যাকাণ্ডের মাস্টারমাইন্ড একজন বাংলাদেশি আমেরিকান আখতারুজ্জামান। যিনি কলকাতায় এসেছিলেন আমেরিকার পাসপোর্ট ব্যবহার করে। এই আখতারুজ্জামান কলকাতায় একটি ফ্ল্যাট ভাড়া করেছিলেন এক বছর আগে। যার ভাড়া এক লাখ রুপি।

গোপাল বিশ্বাস আরও জানান, আখতারুজ্জামান বাংলাদেশের ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুরের বাসিন্দা। তার সঙ্গে সংসদ সদস্য আনারের ব্যবসায়িক সম্পর্ক ছিল। বাংলাদেশ থেকে সাতজনের সহযোগিতা নিয়ে এই আখতারুজ্জামান সংসদ সদস্য আনারকে হত্যা করে থাকতে পারেন। ওই সাতজনের মধ্যে রয়েছেন, ফয়জুল, মোস্তাফিজুর ও একজন মহিলা।

এদিকে ভারতের পশ্চিমবঙ্গে চিকিৎসার জন্য গিয়ে খুন হওয়া সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজীম আনারের মরদেহ উদ্ধার করা যায়নি বলে জানিয়েছে কলকাতা পুলিশ।

বুধবার পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) মহাপরিদর্শক (আইজি) অখিলেশ চতুর্বেদী বলেন, আনোয়ারুল আজীমকে খুন করা হয়েছে বলে আমরা গোয়েন্দা তথ্য পেয়েছি। কিন্তু তদন্তে এসে শনাক্ত করা ফ্লাটে তার মরদেহ পাইনি।

অখিলেশ চতুর্বেদী বলেন, ওই সংসদ সদস্য সন্দীপ রায় নামের এক ব্যক্তির ফ্ল্যাটে উঠেছিলেন। তিনি পশ্চিমবঙ্গ সরকারের আবগারি দপ্তরে চাকরি করেন।

তিনি ফ্ল্যাট ভাড়া কাকে দিয়েছিলেন, জানতে চাইলে সিআইডির এই কর্মকর্তা বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের বাসিন্দা আখতারুজ্জামান নামের এক ব্যক্তিকে। এই আখতারুজ্জামানের সাথে বাংলাদেশের কোনও সম্পর্ক আছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, এই বিষয়ে আর বিস্তারিত বলা যাবে না। তদন্তের বিষয় আছে।

ঘটনার দিন চারজন আখতারুজ্জামানের ফ্ল্যাটে যান। সিসিটিভিতে দেখা গেছে, তিনজন বেরিয়ে এসেছেন, শুধু আনার ছাড়া।

হুন্ডি-স্বর্ণের অবৈধ কারবারের দ্বন্দ্ব থেকে বিরোধ?

আনার হত্যাকান্ডের সর্বশেষ মোটিভ সম্পর্কে গোয়েন্দা সংস্থাসূত্রে জানা গেছে, আখতারুজ্জামান ও সংসদ সদস্য আনারের মধ্যে হুন্ডি ব্যবসা ও স্বর্ণ ব্যবসাকেন্দ্রীক বিরোধ ছিল। সেই বিরোধের জেরে তিনি খুন হয়ে থাকতে পারেন বলে সন্দেহ করছেন গোয়েন্দা কর্মকর্তারা।

মাস্টারমাইন্ড হিসেবে যাকে খুঁজছে কলকাতা পুলিশ সেই আখতারুজ্জামানের ভাই বাংলাদেশের ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুর পৌরসভার মেয়র শহীদুজ্জামান।

তিনি সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, ছোট ভাই আখতারুজ্জামান শাহিন আমেরিকায় থাকেন। গত রমজানে বাংলাদেশে এসেছিলেন আখতারুজ্জামান। তিনি ব্যবসায়ী। সংসদ সদস্য আনার ও তার পরিবারের সঙ্গে পারিবারিক ভাল সম্পর্ক। ছোটবেলা থেকে তারা খেলাধুলা করেছেন এক সঙ্গে। কোনো ধরণের বিরোধ ছিল এরকম কিছু জানেন না।

সিসিটিভিতে যা দেখা গেলো

১৩ মে বিকেল পাঁচটায় কলকাতার নিউটাউনের সঞ্জীভা গার্ডেন থেকে শেষবারের মতো বেরিয়ে যান সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজীম আনার। সুজুকি মডেলের একটি লাল রঙের গাড়িতে তার বেরিয়ে যাবার সিসিটিভি ফুটেজে আরও দুজনকে দেখা গেছে। এরইমধ্যে গাড়িটি জব্দ করলেও ওই দুই ব্যক্তির পরিচয় নিশ্চিত করতে পারেনি কলকাতা পুলিশ।

সিসিটিভির ফুটেজে দেখা যায়, ১৩ মে বিকেল ৫টা ২৩ মিনিট সঞ্জীভা গার্ডেনের সামনে সুজুকি মডেলের লাল রঙের একটি গাড়িতে ওঠেন আনোয়ারুল আজিম। গাড়িটির নম্বর ডব্লিউবি ১৮এএ৫৪৭৩। অ্যাপার্টমেন্ট ভবনের গেটের সামনে এক লোকসহ দাঁড়িয়ে ছিলেন তিনি। পরে গাড়িটি এসে থামলে আরও একজন নামেন। একটু পরই সেই গাড়িতে চলে যান এমপি আনার। এই গাড়িটিও আটক করেছে কলকাতা পুলিশ।

হত্যার ছক আমেরিকায়, বাংলাদেশ হয়েই পালিয়েছে আখতারুজ্জামান

আনোয়ারুলকে হত্যার পরিকল্পনা হয় আমেরিকায় বসে। এমপি আনার কবে কোথায়, কিভাবে যান তা মনিটরিং করা হয়েছে। আনার কবে কলকাতা ঢুকছেন, কোথায় থাকবেন, তার সব তথ্যই জেনে নেন হত্যাকারীরা। এ কাজে তাদের সহায়তা করতে ওই ফ্ল্যাটটি তাদের দেন মূল পরিকল্পনাকারী আখতারুজ্জামান শাহিন।

আনার হত্যাকাণ্ডের প্রধান সন্দেহভাজন আখতারুজ্জামান শাহিনকে খুঁজছে কলকাতা পুলিশ। তবে তিনি পালিয়ে গেছেন, নাকি আটক হয়েছেন তা আনুষ্ঠানিকভাবে নিশ্চিত করেনি কলকাতার আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।

কলকাতার সিআইডি বলছে, এই প্রবাসী (আখতারুজ্জামান শাহিন) বেশির ভাগ সময় নিজ এলাকা, ঢাকা ও কলকাতায় বাসা ভাড়া করে থাকেন। তার সাথে আন্ডারওয়ার্ল্ডের নেতা, ব্যবসায়ী, প্রশাসনের বড় কর্মকর্তাদের সখ্য রয়েছে।

তবে গোয়েন্দা পুলিশের একটি নির্ভরযোগ্য সূত্রের দাবি, আখতারুজ্জামান শাহিন কলকাতা থেকে বাংলাদেশ হয়ে যুক্তরাষ্ট্রে পালিয়ে গেছেন। তবে এ ব্যাপারে বাংলাদেশি পুলিশ কর্মকর্তাদের কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজীমকে হত্যার কারণ সম্পর্কে জানতে চাইলে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) প্রধান ও অতিরিক্ত কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ সাংবাদিকদের বলেন, বিভিন্ন ধরনের ভুল তথ্য ছড়ানো হচ্ছে। আসলে এটা কী কারণে ঘটেছে জানতে আমাদের তদন্ত চলছে। এটা পারিবারিক নাকি আর্থিক, অথবা এলাকায় কোনো দুর্বৃত্ত দমন করার কারণে এমন ঘটনা ঘটেছে কি না, সবকিছু আমরা তদন্তের আওতায় আনবো।

তিনি আরও বলেন, এটি একটি নিষ্ঠুর হত্যাকাণ্ড— এমনটা মনে করেই তদন্তকারী কর্মকর্তারা কাজ করছেন। নিবিড়ভাবে ভারতীয় পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ রাখা হচ্ছে। তাদের কাছ থেকে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাচ্ছি। তদন্তের স্বার্থে আমরা সব কিছু বলতে পারছি না।

ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজীম আনারের মেয়ে মুমতারিন ফেরদৌস ডরিন বলেছেন, তিনি বাবা হত্যার বিচার চান। খুনিদের প্রকাশ্যে মৃত্যু চান তিনি।

বুধবার (২২ মে) দুপুরে রাজধানীর মিন্টো রোডে অবস্থিত ডিবি কার্যালয়ের সামনে সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমি আমার বাবার হত্যাকারীদের বিচার চাই। আমার বাবাকে যারা হত্যা করেছে তাদের ফাঁসি কার্যকর করা হয়েছে এটা আমি দেখতে চাই। আমরা কাউকে সন্দেহ করছি না। তবে বাবাকে যারা হত্যা করেছে তাদের আমি দেখতে চাই।’

আনার হত্যায় দুই দেশে দুই মামলা

খুন করার উদ্দেশ্যে অপহরণের অভিযোগে রাজধানীর শেরেবাংলা নগর থানায় একটি মামলা করেছে সংসদ সদস্য আনারের মেয়ে মুমতারিন ফেরদৌস ডরিন। থানার ওসি আহাদ আলী বলেন, অজ্ঞাতদের আসামি করে মামলা দায়ের করা হয়েছে। এখন তদন্ত করে আসামিদের আইনের আওতায় নিয়ে আসা হবে।

অন্যদিকে একই ঘটনায় কলকাতার নিউ টাউন থানায় বাদি হয়ে হত্যা মামলা করেছে কলকাতা পুলিশ। হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত হয়েছে সন্দেহে একটি গাড়িও আটক করেছে কলকাতা নিউ টাউন পুলিশ। বুধবার নিউ টাউন থানার সামনে গাড়ির ভেতর থেকে নমুনা সংগ্রহ করেছে ফরেনসিক টিম। গাড়ির মালিক সেটি ভাড়ায় ব্যবহার করতে দিয়েছিল বলে জানা গেছে। সন্ধ্যায় নিউটাউন থানায় যান গাড়ির মালিক, যদিও সেখানে সাংবদিকদের সঙ্গে কথা বলেননি তিনি।

Header Ad
Header Ad

সুরের জাদুতে ঢাকার মঞ্চ মাতালেন রাহাত ফতেহ আলী খান

ঢাকার মঞ্চ মাতালেন রাহাত ফতেহ আলী খান। ছবি: সংগৃহীত

সুফি সংগীতের ইতিহাসে ফতেহ আলী খান পরিবার দীর্ঘ কয়েক দশক ধরে উপমহাদেশের সুরপ্রেমীদের মুগ্ধ করে আসছে তাদের অতুলনীয় সুরের মাধুর্যে। এই পরিবারের অন্যতম প্রতিভাবান শিল্পী রাহাত ফতেহ আলী খানের বাংলাদেশে আগমন এবং তাঁর মঞ্চে গাওয়া নিঃসন্দেহে দেশীয় সংগীতপ্রেমীদের জন্য একটি স্বপ্নপূরণের মুহূর্ত ছিল।

রাজধানীর আর্মি স্টেডিয়ামে ‘ইকোস অব রেভল্যুশন’ কনসার্টে মঞ্চ মাতিয়েছেন পাকিস্তানের জনপ্রিয় সংগীতশিল্পী রাহাত ফতেহ আলী খান। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে আহত ও নিহতদের সাহায্যার্থে আয়োজিত এ কনসার্টে শনিবার (২১ ডিসেম্বর) রাত ১০টার দিকে মঞ্চে ওঠেন তিনি।

শনিবার বিকেল চারটার দিকে ব্যান্ড সিলসিলার কাওয়ালি গানের মাধ্যমে কনসার্টটি শুরু হয়। এরপর ম‌ঞ্চে আসেন ‘আওয়াজ উডা’ গা‌নের জন্য প‌রি‌চিত র‍্যাপার হান্নান। শুরু‌তে র‍্যাপ গান‌টি প‌রি‌বেশন ক‌রেন তি‌নি, ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থা‌নে গান‌টি গাওয়ার জন্য জেল খে‌টে‌ছেন হান্নান। হান্না‌নের প‌রি‌বেশনার পর ম‌ঞ্চে আসেন আরেক আলো‌চিত র‍্যাপার সেজান। ‘কথা ক’ গান দি‌য়ে সাধারণ শ্রোতা‌দের মা‌ঝে প‌রি‌চিতি পে‌য়ে‌ছেন সেজান। ম‌ঞ্চে গানটি ধর‌লে শ্রোতা‌দের ম‌ধ্যে সাড়া ফে‌লে।

বির‌তির পর সা‌ড়ে পাঁচটার দি‌কে ম‌ঞ্চে আসে রক ব্যান্ড ‘আফটারম্যাথ’। মাইক্রোফোন হা‌তে ব্যা‌ন্ডের ভোকা‌লিস্ট না‌ভিদ ইফ‌তেখার চৌধুরী শ্রোতা‌দের বল‌লেন, ‘এর আগে কখ‌নোই আর্মি স্টেডিয়া‌মে আফটারম্যাথ কনসার্ট ক‌রে‌নি। প্রথমবা‌রের ম‌তো আর্মি স্টে‌ডিয়া‌মে গাইছি। এবার স্বপ্ন পূরণ হ‌লো।’

কনসার্টে শুরু‌তেই ব্যান্ড‌টি গে‌য়ে‌ছে তরুণ‌দের মধ্যে আলোচিত গান ‘অধিকার’। এরপর ‘উৎসর্গ’, ‘মা‌টির রোদ’সহ আরও ক‌য়েক‌টি গান প‌রি‌বেশন ক‌রে‌ছে আফটারম্যাথ।

সন্ধ্যায় মঞ্চে আসে ব্যান্ডদল চিরকুট। শুরুতে বাদ্যযন্ত্রীরা জাতীয় সংগীতের সুর তোলেন। স্টেডিয়ামে দর্শকের আসনে বসে থাকা শ্রোতারা জাতীয় সংগীতের প্রতি সম্মান জানিয়ে দাঁড়িয়ে পড়েন। এরপর দেশাত্মবোধক গান ‘ধনধান্য পুষ্পভরা’ দিয়ে পরিবেশনা শুরু করে ব্যান্ডের ভোকা‌লিস্ট সু‌মি। এরপর ‘ম‌রে যাব’, ‘জাদুর শহর’, ‘আহা‌রে জীবন’-এর ম‌তো গান দিয়ে ঘোরলাগা ছড়িয়ে দেয় ব্যান্ড‌টি। মোলায়েম সু‌রের এসব গানে যাতনা খুঁজে খুঁজে ফিরেছেন শ্রোতারা।

এরপর হাজারো দর্শকের অপেক্ষার অবসান ঘটিয়ে মঞ্চে আসেন উপমহাদেশের প্রখ্যাত সংগীতশিল্পী রাহাত ফতেহ আলী খান। পর পর তিনি তার জনপ্রিয় চারটি গান পরিবেশন করেন। এরপর সংগীত পরিবেশন করেন বরেণ্য এই শিল্পীর ছেলে শাজমান খান। সর্বশেষ এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত মঞ্চে তার পরিবেশনা চলছিল।

বিকেল পর্যন্ত বনানীর আর্মি স্টেডিয়ামে ততটা দর্শক দেখা যায়নি। যদিও স্টেডিয়ামের বাইরে লক্ষ্য করা গেছে অস্বাভাবিক যানজট। সন্ধ্যা নামতেই অবশ্য বদলে যায় দৃশ্য। আসতে শুরু করেন দর্শনার্থীরা। যেন তরুণদের দখলে চলে যায় বনানীর আর্মি স্টেডিয়াম।

শনিবার বেলা দুইটা থেকে দর্শকদের জন্য খুলে দেওয়া হয় আর্মি স্টেডিয়ামের গেট। তার আগে থে‌কেই আর্মি স্টে‌ডিয়া‌মের বাইরে দর্শনার্থীদের দীর্ঘ সা‌রি দেখা যায়। সময় বাড়ার স‌ঙ্গে স‌ঙ্গে শ্রোতা‌দের উপ‌স্থি‌তি বাড়তে থাকে। তবে স্টেডিয়ামের বাইরে রাস্তায় ভীষণ যানজটে নাকাল অবস্থায় পড়তে হয় মানুষকে। কর্তব্যরত ট্রাফিক পুলিশ ও স্কাউটরা জানান, বনানীগামী রাস্তা সাময়িকভাবে বন্ধ হয়ে যায়, এই তথ্য অনেকে জানতেন না। এ কারণে তাদের যানজটের মুখোমুখি হতে হয়। ওই রাস্তায় চলাচলরত গাড়িগুলো এক্সপ্রেসওয়ে ব্যবহারের পরামর্শ দিয়ে তারা জানিয়েছেন, এক্সপ্রেসওয়েতে আজ টোল নেওয়া হয়নি।

যৌথভাবে এ কনসার্টের আয়োজন করেছে ‘স্পিরিটস অব জুলাই’ প্ল্যাটফর্ম ও স্কাইট্র্যাকার লিমিটেড। কনসার্টে জুলাই-আগস্ট অভ্যুত্থানে শহীদ ও আহত পরিবারের শতাধিক সদস্য উপস্থিত রয়েছেন বলে আয়োজকেরা জানান।

জুলাই-আগস্ট গণ-অভ্যুত্থানে শহীদ ও আহত ব্যক্তিদের পরিবারকে সহায়তার জন্য এ কনসার্টের আয়োজন করা হয়। এই কনসার্ট থেকে আয় হওয়া সব অর্থ শহীদ ও আহত ব্যক্তিদের পরিবার নিয়ে কাজ করা কল্যাণমূলক সংস্থা ‘জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশন’-এ দেওয়া হবে।

কনসা‌র্টে ‘জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের’ সাধারণ সম্পাদক ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক সারজিস আলমসহ অনেকে উপ‌স্থিত ছিলেন। আ‌য়োজন‌টি উপস্থাপনা করেছেন জুলহাজ জুবা‌য়ের ও দীপ্তি চৌধুরী।

Header Ad
Header Ad

আনিসুল হকের তিন ব্যাংকে ২১ কোটি টাকার সন্ধান পেয়েছে দুদক

সাবেক আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সাবেক মন্ত্রী আনিসুল হক। ছবিঃ সংগৃহীত

সাবেক আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সাবেক মন্ত্রী আনিসুল হকের ৩ ব্যাংকে মোট ১৬টি ব্যাংক হিসাবের সন্ধান পেয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। এসব হিসাবগুলোতে প্রায় ২১ কোটি টাকা জমা থাকার তথ্য পাওয়া গেছে। যা ইতোমধ্যে ফ্রিজ করা হয়েছে।

রোববার (২২ ডিসেম্বর) দুদক সূত্রে জানা যায়।

আনিসুল হকের হিসাবগুলোর মধ্যে ব্র্যাক ব্যাংক বনানী শাখার ৬টি হিসাবের মধ্যে ফিক্সড ডিপোজিট হিসেবে ৫ কোটি টাকা এবং অন্য এক হিসাবে এসসি গোল্ডেন বেনিফিটস নামে ৫০ লাখ ৮১ হাজার টাকা জমা থাকার তথ্য পাওয়া গেছে। এছাড়া, সিটিজেন ব্যাংক ও স্ট্যান্ডার্ড চাটার্ড ব্যাংকের ৯টি হিসাব থেকে মোট ১৫ কোটি ১১ লাখ ৮৩ হাজার টাকা পাওয়া গেছে।

এ বিষয়ে দুদকের উপপরিচালক (জনসংযোগ) মো. আকতারুল ইসলাম গণমাধ্যমকে জানান, অনুসন্ধান কার্যক্রম চলমান রয়েছে। বর্তমানে নথিপত্র সংগ্রহ এবং যাচাই-বাছাইয়ের কাজ চলছে। অনুসন্ধান টিম প্রতিবেদন দাখিল করলে কমিশন আইন অনুযায়ী পরবর্তী সিদ্ধান্ত নিবে।

এ বিষয়ে দুদকের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, শত শত কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ ও পাচারের অভিযোগ থাকলেও দুদক দালিলিক প্রমাণ ছাড়া আইনি পদক্ষেপ নিতে পারে না। আমাদের তথ্য ও সংগ্রহ এবং যাচাই-বাছাইয়ের কাজ চলমান রয়েছে। যা অংশ হিসাবে তিন ব্যাংকে প্রায় ২১ কোটি টাকা জমা থাকার প্রমাণ পাওয়া গেছে এবং ফ্রিজ করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ওই টাকা তার আয়ের সঙ্গে অসঙ্গতিপূর্ণ বলেই আপাতত মনে হয়েছে। চূড়ান্ত প্রতিবেদন হাতে পেলে বিস্তারিত বলা যাবে।

আনিসুল হক ও তার ঘনিষ্ঠ সহযোগী অ্যাডভোকেট তৌফিকা করিমসহ সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে গত ৭ অক্টোবর থেকে অনুসন্ধান শুরু করে দুদক। যার মধ্যে সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক এবং তার ঘনিষ্ঠ সহযোগী অ্যাডভোকেট তৌফিকা করিমের বিরুদ্ধে শত কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ রয়েছে। এছাড়া অপর এক সহযোগী ফারহানা ফেরদৌস নামে অপর এক নারীর বিরুদ্ধে আসা পৃথক আর একটি অভিযোগও আমলে নিয়ে অনুসন্ধান করছে দুদকের অনুসন্ধান টিম।

Header Ad
Header Ad

নরসিংদীতে ছাত্রদল কর্মীকে গুলি করে হত্যা

হুমায়ুনের মেহেরপাড়া ইউনিয়ন ছাত্রদলের যুগ্ম সম্পাদক। ছবি: সংগৃহীত

রাজনৈতিক প্রতিহিংসা, আধিপত্য বিস্তার ও জমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে নরসিংদীর মেহেরপাড়ায় এক ছাত্রদল কর্মীকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে।

শনিবার (২১ ডিসেম্বর) দিনগত রাত ১২টার দিকে নরসিংদীর পাঁচদোনা মেহেরপাড়া বাড়ি আগিণার খেলার মাঠ থেকে তাকে ডেকে নিয়ে গুলি করে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা।

নিহত হুমায়ুন কবির (২৬) মেহেরপাড়া ইউনিয়নের নাগরারহাট এলাকার একরামুল হকের ছেলে। তিনি মেহেরপাড়া ইউনিয়ন ছাত্রদলের সদস্য।

নিহতের স্বজনরা অভিযোগ করে বলেন, আধিপত্য বিস্তার ও জমি সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে একই এলাকার বাদল মিয়া, শাহআলম ও আতাউর মেম্বারের সঙ্গে দ্বন্দ্ব চলছিল হুমায়ুন কবিরের। দ্বন্দ্বের জেরে ইতোমধ্যে দুই পক্ষ একাধিক মামলা করেছে। গতকাল শনিবার দিনগত রাতে নিহত হুমায়ুন বাড়ির পাশের আঙ্গিনায় ব্যাডমিন্টন খেলছিল। রাত ১২টার দিকে দুটি মোটরসাইকেল যোগে শাহ আলম ও টিপুসহ চারজন হুমায়ুনের বাড়ির সামনে আসে। ওই সময় তারা হুমায়ুনকে ব্যাডমিন্টন খেলা থেকে ডেকে পাঁচদোনা বাজার মাছের আড়ৎ মসজিদের দিকে ডেকে নিয়ে যায়। সেখানে সন্ত্রাসীরা তার বুকে, পিঠে ও ঘারে পরপর তিনটি গুলি করে। এ সময় সে মাটিতে লুটিয়ে পরে। গুলির শব্দ শুনে খেলার মাঠ থেকে লোকজন এগিয়ে এলে সন্ত্রাসীরা তাদের লক্ষ্য করে গুলিবর্ষণ করে আতঙ্ক সৃষ্টি করে। পরে তারা মটোরসাইকেল যোগে পালিয়ে যায়। মুমূর্ষু অবস্থায় হুমায়ুনকে হাসপাতালে আনার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

এদিকে, হুমায়ুন হত্যার বিচার দাবিতে হাসপাতাল চত্বরে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন এলাকাবাসী।

নিহত হুমায়ুনের বন্ধু ও মেহেরপাড়া ইউনিয়ন ছাত্রদলের যুগ্ম সম্পাদক সুজন ভূইয়া বলেন, ‘স্বৈরাচার পতনের আন্দোলনে সক্রিয় ভূমিকা ছিল নিহত হুমায়ুনের। তার নেতৃত্বেই পাঁচদোনা মেহেরপাড়া ও মাধবদী আন্দোলন হয়েছিল। এসব ঘটনা নিয়ে সে এলাকার অনেকের রোষানলে পড়ে। এসবের জেরে তার বাড়ি ঘরে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। প্রাণ বাঁচাতে সে পালিয়ে থাকে। ৫ তারিখের পর এলাকায় আসে। এর মধ্যেই গতকাল তাকে বাড়ির আঙ্গিনা থেকে ডেকে নিয়ে গুলি করে হত্যা করা হলো।’

নিহতের বড় ভাই আল মামুন বলেন, ‘আমাদের ১৭ শতাংশ একটি জমি দখল করে নেয় বাদল মিয়ারা। পরে মামলার রায় পাওয়ার পর আমরা জমিটি দখলে নিই। এ নিয়ে তাদের সঙ্গে দ্বন্দ্ব তীব্র হয়। এরই জের ধরে তারা আমার ভাইকে গুলি করে হত্যা করেছে। এ ছাড়া স্বৈরাচার পতন আন্দোলনে তার সক্রিয় ভূমিকা ছিল। এসব নিয়ে অনেকে তাকে দমানোর চেষ্টা করছিল।’

মাধবদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নজরুল ইসলাম বলেন, ‘ব্যাডমিন্টন খেলা শেষে অজ্ঞাত দুর্বৃত্তরা তাকে গুলি করে পালিয়ে যায়। ধারণা করা হচ্ছে, পূর্ব শত্রুতার জেরেই তাকে হত্যা করা হয়েছে। হত্যার প্রকৃত কারণ উদঘাটনসহ হত্যাকারীদের গ্রেপ্তারে কাজ করছে পুলিশ।’

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

সুরের জাদুতে ঢাকার মঞ্চ মাতালেন রাহাত ফতেহ আলী খান
আনিসুল হকের তিন ব্যাংকে ২১ কোটি টাকার সন্ধান পেয়েছে দুদক
নরসিংদীতে ছাত্রদল কর্মীকে গুলি করে হত্যা
শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ইন্টারপোলের রেড নোটিশের বিষয়ে নিশ্চিত নয় ট্রাইব্যুনাল
ভারতের কাছে হেরে বাংলাদেশের স্বপ্নভঙ্গ
এক দশক পর ফিরলো ‘আমার দেশ’ পত্রিকা
৩০০ মিলিয়ন ডলার পাচার: হাসিনা ও জয়ের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান শুরু দুদকের
ইয়েমেনে হুথিদের লক্ষ্যবস্তুতে মার্কিন বিমান হামলা
লোকসানের মিথ্যা গল্প শোনাচ্ছে ব্রিডার ফার্মগুলো
একজন ঢাকা অন্যজন কলকাতায় সংসার ভাঙছে মিথিলার
আইনজীবী আলিফ হত্যা: তদন্ত কমিটির সব সদস্যের পদত্যাগ
যে কোন সময় বাংলাদেশের পাশে নতুন দেশ
গাজীপুরে গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণ হয়ে আওয়ামী লীগ নেতার স্ত্রীর মৃত্যু
বাংলাদেশে ইসলামি চরমপন্থা আসবে না: ড. ইউনূস
  সংকট কাটছে, মেট্রোর যাত্রীদের সুখবর দিল ডিএমটিসিএল
ভারতের বিপক্ষে ১১৮ রান করলেই এশিয়া কাপ ঘরে ‍তুলবে বাংলাদেশ
বিরামপুরে শীতার্তদের মাঝে কম্বল বিতরণ
টাঙ্গাইলে আ.লীগ নেতা ও ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল আলীম আটক
শেখ হাসিনা নিজ হাতে তার বাবাকে দ্বিতীয়বার হত্যা করেছে: গয়েশ্বর
চুয়াডাঙ্গায় অবৈধ যানবাহন বন্ধ না হলে গণপরিবহন বন্ধের ঘোষণা