রবিবার, ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ | ১০ ফাল্গুন ১৪৩১
Dhaka Prokash

শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস আজ

ছবি: সংগৃহীত

প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনার ৪৪তম স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস আজ। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যার পর ১৯৮১ সালের ১৭ মে দীর্ঘ নির্বাসন জীবন শেষে তিনি বাংলার মাটিতে ফিরে আসেন।

১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট কালরাতে বিপথগামী একদল সেনা কর্মকর্তা নির্মম বুলেটের আঘাতে ইতিহাসের নৃশংসতম হত্যাকাণ্ডের মাধ্যমে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যা করে। এসময় বিদেশে থাকায় বেঁচে যান বঙ্গবন্ধুর দুই কন্যা শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা। বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের পর স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ভূলুণ্ঠিত করে বাঙালি জাতির অস্তিত্বকে বিপন্ন করতে নানামুখী ষড়যন্ত্র শুরু করে ঘাতকগোষ্ঠী।

বাঙালি জাতির জীবনে জগদ্দল পাথরের মতো চেপে বসে ঘোর অন্ধকার। ঠিক তেমনি এক ক্রান্তিলগ্নে ১৯৮১ সালের ১৪, ১৫ ও ১৬ ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠিত আওয়ামী লীগের জাতীয় সম্মেলনে বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার অনুপস্থিতিতে তাকে সংগঠনের সভাপতি নির্বাচিত করা হয়। দেশমাতৃকার মুক্তির সংগ্রামে নেতৃত্ব দেওয়ার দায়িত্ব অর্পণ করা হয় জাতির পিতার জ্যেষ্ঠ কন্যার হাতে। বঙ্গবন্ধু কন্যার হাতে যেন নেতৃত্ব না যায়, সেজন্য নানা প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে সামরিক শাসকগোষ্ঠী।

পরে ১৯৮১ সালের ১৭ মে বিকেল সাড়ে ৪টায় ইন্ডিয়ান এয়ারলাইন্সের একটি বিমানে শেখ হাসিনা ভারতের রাজধানী দিল্লী থেকে কোলকাতা হয়ে তৎকালীন ঢাকা কুর্মিটোলা বিমানবন্দরে এসে পৌঁছান। সেদিন রাজধানী ঢাকা মিছিলের নগরীতে পরিণত হয়। সকাল থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত ঢাকা শহর মিছিল আর স্লোগানে প্রকম্পিত হয়ে ওঠে। দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া আর প্রচণ্ড ঝড়-বৃষ্টিও সেদিন লাখ লাখ মানুষের মিছিলকে গতিরোধ করতে পারেনি। কুর্মিটোলা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ও শেরেবাংলা নগর পরিণত হয় জনসমুদ্রে।

বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনাকে এক নজর দেখতে সেদিন সারা দেশের মানুষের গন্তব্য ছিল রাজধানী ঢাকা। স্বাধীনতার অমর স্লোগান, ‘জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু’ ধ্বনিতে প্রকম্পিত হয় বাংলার আকাশ-বাতাস। জনতার কণ্ঠে বজ্রনিনাদে ঘোষিত হয়েছিল ‘হাসিনা তোমায় কথা দিলাম পিতৃ হত্যার বদলা নেব’, ‘ঝড়-বৃষ্টি আঁধার রাতে আমরা আছি তোমার সাথে’, ‘শেখ হাসিনার আগমন, শুভেচ্ছায় স্বাগতম’ ইত্যাদি স্লোগান।

দেশে ফিরে বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও স্বপ্ন বাস্তবায়নের অঙ্গীকার, বঙ্গবন্ধু ও জাতীয় চার নেতা হত্যার বিচার, স্বৈরতন্ত্রের চির অবসান ঘটিয়ে জনগণের হারানো গণতান্ত্রিক অধিকার পুনঃপ্রতিষ্ঠা, সার্বভৌম সংসদীয় পদ্ধতির শাসন ও সরকার প্রতিষ্ঠার শপথ নিয়ে আওয়ামী লীগের সভাপতি হিসেবে দায়িত্বভার গ্রহণ করেন শেখ হাসিনা।

সেদিন বিকেল সাড়ে ৪টায় আকাশে যখন শেখ হাসিনাকে বহনকারী বিমানটি দেখা যায় তখন সব নিয়ন্ত্রণ আর অনুরোধ আবেদন অগ্রাহ্য করে হাজার হাজার মানুষ বিমান বন্দরের ভেতরে ঢুকে পড়ে। অনেকটা ঝুঁকি নিয়েই বিমানটি অবতরণ করে। জনতা একেবারেই বিমানের কাছে চলে যায়। বহু চেষ্টার পর জনতার স্রোতকে কিছুটা সরিয়ে ট্রাকটি ককপিটের দরজার একেবারে সামনে নেওয়া হয়। এসময় শেখ হাসিনা ভেতর থেকে জনতার উদ্দেশ্যে হাত নাড়েন।

বেলা ৪টা ৩২ মিনিটে শেখ হাসিনা বিমান থেকে সিঁড়ি দিয়ে ট্রাকে নেমে আসেন। কুর্মিটোলা থেকে শেখ হাসিনার শেরেবাংলা নগরে এসে পৌঁছতে সময় লাগে ৩ ঘণ্টা। এসময় ঝড় বৃষ্টিতে নগরজীবন প্রায় বিপন্ন। রাস্তাঘাট, স্বাভাবিক জীবন যখন ব্যাহত তখন সেখানে অপেক্ষায় কয়েক লাখ মানুষ। সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় তিনি গণসংবর্ধনা মঞ্চে উপস্থিত হন।

১৯৮১ সালের ১৭ মে ঝড়-বাদল আর জনতার আনন্দ অশ্রুতে অবগাহন করে শেরেবাংলা নগরে লাখ লাখ জনতার সংবর্ধনার জবাবে বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা বলেছিলেন, ‘সব হারিয়ে আমি আপনাদের মাঝে এসেছি, বঙ্গবন্ধুর নির্দেশিত পথে তার আদর্শ বাস্তবায়নের মধ্য দিয়ে জাতির পিতার হত্যার প্রতিশোধ গ্রহণে আমি জীবন উৎসর্গ করতে চাই।’

তিনি আরও বলেছিলেন, ‘আমার আর হারাবার কিছুই নেই। পিতা-মাতা, ভাই রাসেলসহ সকলকে হারিয়ে আমি আপনাদের কাছে এসেছি, আমি আপনাদের মাঝেই তাদেরকে ফিরে পেতে চাই। আপনাদের নিয়েই আমি বঙ্গবন্ধুর নির্দেশিত পথে তা বাস্তবায়ন করে বাংলার দুঃখী মানুষের মুখে হাসি ফোটাতে চাই। বাঙালি জাতির আর্থ-সামাজিক তথা সার্বিক মুক্তি ছিনিয়ে আনতে চাই।’

মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা পুনরুদ্ধার এবং সমৃদ্ধ বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার অভিযাত্রায় বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার ঐতিহাসিক স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস একটি তাৎপর্যপূর্ণ ঘটনা। ১৯৭৫’র ১৫ আগস্টের পর যখন ঘাতক গোষ্ঠী প্রিয় মাতৃভূমিকে ক্ষত-বিক্ষত করে তুলেছিল জাতীয় জীবন, তখন শেখ হাসিনার ঐতিহাসিক স্বদেশ প্রত্যাবর্তন ছিল শ্রাবণের বারিধারার মতো পাহাড় সমান বাঁধা জয়ের অনন্ত অনুপ্রেরণা। সেদিন বঙ্গবন্ধুকন্যার স্বদেশ প্রত্যাবর্তনে অশ্রু-বারিসিক্ত জন্মভূমিতে সঙ্কটজয়ের বীজ রোপিত হয়েছিল। মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশ বিনির্মাণের দৃঢ় প্রত্যয়ে প্রদীপ্ত অগ্নিশপথের রৌদ্রালোকে উদ্ভাসিত হয়েছিল বাঙালি জাতি।

স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে আজ ১৭ মে সকাল ৯টায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বাসভবন গণভবনে আওয়ামী লীগের নেতাদের শুভেচ্ছা বিনিময়, বিকেল সাড়ে ৩টায় তেজগাঁওয়ে ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগ ভবনে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে। সভায় জাতীয় নেতা ও বরেণ্য বুদ্ধিজীবীরা বক্তব্য রাখবেন। এতে সভাপতিত্ব করবেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন।

এছাড়া মসজিদ, মন্দির, প্যাগোডা, গির্জাসহ সব ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে দেশব্যাপী বিশেষ প্রার্থনা কর্মসূচির অংশ হিসেবে বাদ জুমা বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদসহ দেশের সব মসজিদে দোয়া ও মিলাদ মাহফিল অনুষ্ঠিত হবে। সকাল ৯টায় মিরপুর ব্যাপ্টিস্ট চার্চে খ্রিষ্টান সম্প্রদায়, সকাল ১০টায় রাজধানীর মেরুল বাড্ডার আন্তর্জাতিক বৌদ্ধ বিহারে বৌদ্ধ সম্প্রদায় এবং বেলা সাড়ে ১১টায় ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দিরে হিন্দু সম্প্রদায় প্রার্থনা সভার আয়োজন করেছে।

Header Ad
Header Ad

দুই ফুসফুসেই নিউমোনিয়া, পোপ ফ্রান্সিসের অবস্থা ‘আশঙ্কাজনক’

পোপ ফ্রান্সিসের দুটি ফুসফুসে নিউমোনিয়া ধরা পড়েছে। ছবি: সংগৃহীত

ক্যাথলিক খ্রিস্টানদের সর্বোচ্চ ধর্মগুরু পোপ ফ্রান্সিসের দুটি ফুসফুসে নিউমোনিয়া ধরা পড়েছে। তার শারীরিক অবস্থা এখন আরও জটিল। ৮৮ বছর বয়সী পোপ ফ্রান্সিস এক সপ্তাহের বেশি সময় ধরে শ্বাসযন্ত্রের সংক্রমণে ভুগছেন। গত ১৫ ফেব্রুয়ারি তাকে রোম জেমেলি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

ভ্যাটিকান জানিয়েছে, গতকাল মঙ্গলবার বিকালে বুকের সিটি স্ক্যানে দুই পাশেই নিউমোনিয়ার সূত্রপাত দেখা গেছে। ল্যাব টেস্ট, বুকের এক্স-রে এবং ক্লিনিক্যাল অবস্থা ইঙ্গিত দেয়, পোপের অবস্থা 'এখনো সঙ্কটজনক'। তাকে অতিরিক্ত থেরাপি নিতে হবে।

ভ্যাটিকানের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, তবে পোপ এখনো 'ভালো মেজাজে' আছেন। তিনি বই পড়ে, বিশ্রাম নিয়ে এবং প্রার্থনা করে দিন কাটান।

পোপ ফ্রান্সিস শুভানুধ্যায়ীদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন এবং তার জন্য প্রার্থনা করতে বলেছেন।

রোমান ক্যাথলিক চার্চের প্রধান হিসেবে ১২ বছর দায়িত্ব পালনকালে ২০২৩ সালের মার্চসহ আর্জেন্টিনায় বহুবার হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন পোপ ফ্রান্সিস।টানা কয়েক দিন শ্বাসকষ্টে ভোগার পর গত ১৪ ফেব্রুয়ারি পোপকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

গত ১৪ ফেব্রুয়ারি পোপকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ছবি: সংগৃহীত

বিবিসি লিখেছে, ২১ বছর বয়সে পোপ ফ্রান্সিসের ফুসফুসের একটি অংশ অপসারণ করতে হয়েছিল। পরে বেশি বয়সে তার ফুসফুসের চারপাশে এক ধরনের প্রদাহ তৈরি হয়। সে কারণে তিনি ফুসফুস সংক্রমণের ঝুঁকিতে ছিলেন।

গত ১২ বছরে এই আর্জেন্টাইনকে বেশ কয়েকবার হাসপাতালে ভর্তি হতে হয়েছে। এর মধ্যে ২০২৩ সালের মার্চ ব্রঙ্কাইটিসে আক্রান্ত হয়ে তিনি ৩ রাত হাসপাতালে ছিলেন।

পোপের সর্বশেষ যে অবস্থা ভ্যাটিকান জানাল, তা বিশ্বজুড়ে ক্যাথলিকদের উদ্বিগ্ন করবে, যারা সর্বক্ষণ পোপের শারীরিক অবস্থার খোঁজখবর রাখছেন।

ক্যাথলিক চার্চের জয়ন্তী বছর হওয়ায় এবছর রোমে বিপুল সংখ্যক দর্শনার্থীর সমাগম ঘটবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। বিভিন্ন আয়োজনে পোপের অংশ নেওয়ার কথা রয়েছে। আর সাধারণত তিনি নিষ্ক্রিয় থাকতে ভালোবাসেন না।

এমনকি এ সপ্তাহে হাসপাতালে থেকেও তিনি চ্যাপেলে গিয়েছিলেন প্রার্থনা করতে। সেখানে চেয়ারে বসে বাইবেল পড়েছেন বলে তার চিকিৎসকরা জানিয়েছেন।

ভ্যাটিকান আগেই জানিয়েছিল, পোপের যে শারীরিক অবস্থা, তাতে এই রোববারের প্রার্থনায় তাকে নেতৃত্ব দিতে দেখা যাবে না । তার মানে টানা দ্বিতীয় সপ্তাহ তিনি এই প্রার্থনা অনুষ্ঠানে অনুপস্থিত থাকছেন।

Header Ad
Header Ad

সংস্কার কমিশনের সুপারিশ: জুনেই স্থানীয় সরকার নির্বাচন

স্থানীয় সরকার সংস্কার কমিশনের সুপারিশ শনিবার প্রকাশ করা হয়েছে। ছবি: সংগৃহীত

আগামী জুনের মধ্যে স্থানীয় সরকারের সব স্তরে নির্বাচন করা যেতে পারে বলে সুপারিশ করেছে সংস্কার কমিশন। মার্চ-এপ্রিলের মধ্যে ইউনিয়ন, উপজেলা এবং জেলা পরিষদের জন্য একটি এবং পৌরসভা ও সিটি করপোরেশনের জন্য আরেকটি অধ্যাদেশ জারি করা যেতে পারে। প্রস্তাবিত ‘স্থানীয় সরকার কমিশন’ এপ্রিলে বিস্তারিত কাজ করলে জুনে ভোট সম্ভব।

গত বুধবার প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে জমা দেওয়া স্থানীয় সরকার সংস্কার কমিশনের সুপারিশ গতকাল শনিবার প্রকাশ করা হয়েছে। ড. তোফায়েল আহমেদের নেতৃত্বাধীন কমিশনের প্রতিবেদনের সারসংক্ষেপে বলা হয়েছে, জুলাই গণঅভ্যুত্থান-পরবর্তী অকার্যকর হয়ে পড়া স্থানীয় সরকার ব্যবস্থাকে কার্যকরে ইউনিয়ন, উপজেলা, জেলা, পৌরসভা এবং সিটি করপোরেশন নির্বাচন একসঙ্গে আয়োজনের সুপারিশ করেছে কমিশন। এতে নির্বাচন ব্যবস্থা সহজ এবং ব্যয়সাশ্রয়ী হবে।

কমিশন স্থানীয় সরকারে সংসদীয় ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার সুপারিশ করেছে। মত দিয়েছে, নির্বাচন নির্দলীয় পদ্ধতিতে আয়োজনের। ইউনিয়ন পরিষদে জনসংখ্যার অনুপাতে ওয়ার্ড সংখ্যা ৯ থেকে ৩০ করার সুপারিশ করা হয়েছে। উপজেলা পরিষদে ওয়ার্ডের প্রস্তাব এসেছে। বিদ্যমান প্রতি ইউনিয়নকে তিনটি ওয়ার্ডে বিভক্ত করার কথা বলা হয়েছে। উপজেলায় ওয়ার্ড সংখ্যা হবে সর্বোচ্চ ৩৩। প্রতি উপজেলায় জেলা পরিষদের তিন থেকে পাঁচটি ওয়ার্ড থাকবে। পৌরসভা এবং সিটি করপোরেশনে ওয়ার্ড সংখ্যা হবে জনসংখ্যার অনুপাতে।

স্থানীয় সরকারের নির্বাচনের দায়িত্ব সরকারের হাত থেকে নির্বাচন কমিশনে নিতে সংবিধান সংশোধনের প্রস্তাব করা হয়েছে প্রতিবেদনে। বলা হয়েছে, নির্বাচন কমিশনই নির্বাচনের দায়িত্ব পালন করবে।

সুপারিশে বলা হয়েছে, স্থানীয় নির্বাচনের জন্য জাতীয় নির্বাচনের চেয়েও বেশি টাকা খরচ হয়। প্রতি পাঁচ বছরে অন্তত ২২৫ দিন থাকে নির্বাচনী সময়। এতে সারা বছরই রাজনৈতিক উত্তেজনা, অস্থিরতা থাকে। এতে সরকারের কাজ বিঘ্নিত হয়। তাই স্থানীয় নির্বাচন একই তপশিলে একই দিনে আয়োজনের সুপারিশ করা হয়েছে। ইউনিয়ন, উপজেলা, জেলা পরিষদের ভোট একই সঙ্গে হবে। একজন ভোটার তিনটি পরিষদের সদস্যপদে তিনটি আলাদা ভোট দেবে। বর্তমানেও ভোটাররা স্থানীয় নির্বাচনে তিনটি ভোট দেন। একসঙ্গে নির্বাচন প্রতি পাঁচ বছরে মাত্র ৪৫ দিন থাকবে নির্বাচনী সময়। এতে সময় এবং ব্যয়সাশ্রয়ী হবে।

স্থানীয় পরিষদ বা কাউন্সিলে জাতীয় সংসদের আদলে স্পিকার থাকবেন। যিনি পরিচিত হবেন সভাধ্যক্ষ হিসেবে। প্রতি ওয়ার্ড থেকে নির্বাচিত সদস্য বা কাউন্সিলরা গোপন ভোটে চেয়ারম্যান বা মেয়র নির্বাচিত করবেন। চেয়ারম্যান বা মেয়ররা নির্বাচিত সদস্যদের মধ্য থেকে তিন থেকে পাঁচজন নিয়ে নির্বাহী পরিষদ গঠন করবেন। এ পরিষদ মন্ত্রিসভার মতো কাজ করবে। বাকিরা একজন ছায়া নেতা নির্বাচিত করবেন। যিনি বিরোধীদলীয় নেতা হবেন।

সদস্যপদে প্রার্থী হতে মাধ্যমিক পাস হতে হবে। চেয়ারম্যান-মেয়রদের শিক্ষাগত যোগ্যতা হবে ন্যূনতম স্নাতক। সরকারি-বেসরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীরাও সদস্য পদে নির্বাচন করতে পারবেন। তবে তারা চেয়ারম্যান-মেয়র হতে পারবেন না।

স্থানীয় সরকারের সংস্কারে গত ১৮ নভেম্বর আট সদস্যের স্থানীয় সরকার সংস্কার কমিশন গঠন করা হয়। কমিশনের প্রতিবেদনে স্থানীয় সরকার ব্যবস্থা শক্তিশালী করার ক্ষেত্রে গ্রাম ও পৌর পুলিশ গঠনের সুপারিশ করা হয়েছে। এ ক্ষেত্রে নতুন দুটি পুলিশ বাহিনী গঠিত হওয়ার পর কমিউনিটি পুলিশকে সম্পূর্ণভাবে বিলুপ্ত করা হবে।
স্থানীয় সরকার ব্যবস্থাকে সময়ের সঙ্গে আধুনিকায়নের জন্য পাঁচ সদস্যের স্থায়ী স্থানীয় সরকার সংস্কার কমিশন রাখার সুপারিশ করা হয়েছে। স্থায়ী সংস্কার কমিশন সব সংস্কার কর্মের একটি ধারাবাহিকতা রক্ষায় সক্ষম হবে। এটি স্থানীয় পর্যায়ে আইনের শাসন ও প্রশাসনিক শৃঙ্খলা রক্ষার একটি নির্ভরযোগ্য প্রতিষ্ঠান হয়ে উঠতে পারে।

প্রতিটি স্থানীয় সরকারের সংগঠন কাঠামো দুটি প্রধান অংশে বিভক্ত থাকবে। একটি হলো বিধানিক অংশ (লেজিসলেটিভ পার্ট), আরেকটি নির্বাহী অংশ (এক্সিকিউটিভ পার্ট)। বিধানিক অংশের প্রধান হবেন জনপ্রতিনিধিদের মধ্য থেকে নির্বাচিত সভাধ্যক্ষ ও নির্বাহী অংশের প্রধান হবেন পরিষদের চেয়ারম্যান বা মেয়র।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বর্তমানে উপজেলা চেয়ারম্যান ও সাধারণ আসনের ভাইস চেয়ারম্যান ও সংরক্ষিত নারী আসনের ভিন্ন পদধারী তিনজন একই আকারের নির্বাচনী এলাকা থেকে নির্বাচিত হন। আবার জাতীয় সংসদ সদস্যের নির্বাচনী এলাকা প্রায় ক্ষেত্রে অভিন্ন। এই চার প্রতিনিধির মধ্যে রাজনৈতিক সংঘাত তাই অনিবার্য।

নির্বাচিত জেলা পরিষদ গঠনের সুপারিশ করেছে কমিশন। ঘূর্ণায়মান পদ্ধতিতে ইউনিয়ন, উপজেলা ও জেলায় মোট ওয়ার্ডের এক-তৃতীয়াংশ আসন নারীদের জন্য সংরক্ষিত রাখার প্রস্তাব করা হয়েছে। তবে তিন নির্বাচনের পর থাকবে না এই সংরক্ষণ। একইভাবে নির্বাহী পরিষদ এবং স্থায়ী কমিটিতে এক-তৃতীয়াংশ চেয়ারম্যান পদ নারীদের জন্য সংরক্ষিত রাখার সুপারিশ করা হয়েছে।

মেয়র বা চেয়ারম্যান পরিষদের সার্বক্ষণিক কর্মী হিসেবে বিবেচিত হবেন। তারা বেতন সম্মানী পাবেন। প্রতিটি পরিষদ বছরের এপ্রিলে বার্ষিক বা পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা নিতে অধিবেশন করবে। পরিষদের সার্বিক কার্যক্রম ও উন্নয়ন কার্যক্রম পরিচালনার জন্য প্রয়োজনীয় টাকার ৫০ শতাংশ সরকার অর্থায়ন করবে। বাকিটা নিজস্ব উৎস থেকে পরিষদকে সংগ্রহ করতে হবে। জেলা ও উপজেলা পরিষদের প্রধান দায়িত্ব হবে উন্নয়ন পরিকল্পনা প্রণয়ন। পৌরসভা ও ইউনিয়ন পরিষদের দায়িত্ব হবে পরিকল্পনা বাস্তবায়ন।

স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের নাম বদল করে ‘স্থানীয় সরকার, জনসংগঠন ও জনপ্রকৌশল সেবা মন্ত্রণালয়’ করার প্রস্তাব করা হয়েছে। স্থানীয় সরকার জনসংগঠন অংশটি স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সব এনজিওর কার্যক্রম তদারকি করবে। আর জনপ্রকৌশল ও সেবা বিভাগের অধীনে থাকে ওয়াসা, জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল ও স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরসহ অন্যান্য সংস্থা। এই মন্ত্রণালয়ে একজন মন্ত্রী, একজন প্রতিমন্ত্রী ও একজন উপমন্ত্রী থাকতে পারবে।

দুই ভাগে একজন করে সিনিয়র সচিব, একজন করে অতিরিক্ত সচিব, ৪ জন করে যুগ্ম সচিব, ৮ জন করে উপসচিব, ৮ জন করে সিনিয়র সহকারী সচিব ও ৮ জন করে সহকারী সচিব থাকবেন। এলজিইডি ও জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরকে একীভূত করে এলজিইডির অধীনে থাকবে। সব উপজেলা পর্যায়ে দেওয়ানি ও ফৌজদারি আদালত স্থাপন করতে হবে। এ জন্য বিচারক নিয়োগের সুপারিশ করেছে কমিশন। গ্রাম আদালত বিলুপ্ত করে বিকল্প হিসেবে বিরোধ নিষ্পত্তির জন্য ওয়ার্ড ও কমিউনিটি পর্যায়ে একটি সালিশি ব্যবস্থা যুক্ত করার প্রস্তাব করা হয়েছে। এই ব্যবস্থা পর্যবেক্ষণে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের বিচারকরা সম্পৃক্ত থাকবেন।

Header Ad
Header Ad

নওগাঁয় রাতে সড়কে গাছ ফেলে ডাকাতি

নওগাঁর পত্নীতলায় সড়কে গাছ ফেলে একটি বিআরটিসি বাস ও মাইক্রোবাসে ডাকাতি। ছবি: সংগৃহীত

নওগাঁর পত্নীতলায় সড়কে গাছ ফেলে একটি বিআরটিসি বাস ও মাইক্রোবাসে ডাকাতির ঘটনার অভিযোগ পাওয়া গেছে। শনিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) দিবাগত রাত পৌনে ১২টার দিকে পত্নীতলা উপজেলার নজিপুর-সাপাহার সড়কের মানাষী ও করমজাইয়ের মাঝামাঝি এলাকায় এই ঘটনা ঘটে।

ডাকাতের কবলে পড়া বিআরটিসি বাসের সুপার ভাইজার রতন কুমার সাহা জানান, রাজশাহী থেকে তাদের বাসটি পোরশার নিতপুরের উদ্দেশ্যে রাত পৌনে ৯টার দিকে ছেড়ে আসে। রাত পৌনে ১২টার দিকে ঘটনাস্থলে পৌঁছালে সড়কে গাছ ফেলা দেখে বাসের গতি কমিয়ে ফেলা হয়। এতে বাসটির পাশাপাশি একটি মাইক্রোবাসও আটকা পড়ে। এরপর একদল মুখোশধারী দরজা-জানালার গ্লাস ভেঙে বাসে ঢুকে অস্ত্রের মুখে যাত্রীদের কাছ থেকে নগদ টাকা, মোবাইল ফোন, নারী যাত্রীদের স্বর্ণালংকার ও অন্যান্য মালামালসহ প্রায় ৩ লাখ টাকার মালামাল নিয়ে যায়।

রতন কুমার সাহা আরও জানান, বাসের পেছনে থাকা মাইক্রোবাসটিতেও ডাকাতরা হানা দেয়। তারা মাইক্রোবাসটির চালককে মারধর করে মালামাল লুটপাট করে পালিয়ে যায়।

এ বিষয়ে পত্নীতলা থানার অফিসার ইনচার্জ এনায়েতুর রহমান বলেন,‘আসলে সড়কে গাছ ফেলে বাসে ডাকাতির চেষ্টা করেছে দুর্বৃত্তরা। ডাকাতের কবলে পড়া বাসটিতে ২০-২৫ জন যাত্রী ছিল। এছাড়া ওই সময় সেখানে একটি মাইক্রোবাস ডাকাতের কবলে পড়ে। ডাকাতরা মাইক্রোবাস্টির কাচ ভাঙ্চুর করে। তবে যাত্রী ও চালকদের ক্ষতি করতে পারেনি। পুলিশের একটি দল ওই এলাকায় টহলে ছিল। যাত্রীদের ফোন পাওয়ার আগেই পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে যায়। ঘটনাস্থলে পুলিশ পৌঁছে যাওয়ার কারণে ডাকাতরা বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতি করতে পারেনি। ছয়-সাতজন যাত্রীর মোবাইল ফোন ও কিছু নগদ টাকা ছিনিয়ে নিয়েছে ডাকাতরা।

তিনি আরও বলেন, যাত্রীদের কী পরিমাণ মালামাল লুট হয়েছে তা তদন্ত করার পর জানা যাবে। পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছানোর আগেই তারা পালিয়েছে। পুরো ঘটনাটি আমরা তদন্ত করছি। আশা করছি, দ্রুত সময়ের মধ্যে ডাকাত চক্রের সদস্যদের আইনের আওতায় আনা সম্ভব হবে।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

দুই ফুসফুসেই নিউমোনিয়া, পোপ ফ্রান্সিসের অবস্থা ‘আশঙ্কাজনক’
সংস্কার কমিশনের সুপারিশ: জুনেই স্থানীয় সরকার নির্বাচন
নওগাঁয় রাতে সড়কে গাছ ফেলে ডাকাতি
প্রযোজনায় নাম লেখালেন বুবলি  
চোখে লাল কাপড় বেধে ঢাকার উদ্দেশ্যে কুয়েটের ৮০ শিক্ষার্থী  
বিয়ে বাড়িতে গান বাজানোর জেরে বাসর ঘরে হামলা  
আজ দুবাইয়ে ভারত-পাকিস্তান মহারণ  
মেয়েকে ধর্ষণের অভিযোগে বাবা গ্রেপ্তার  
দুপুরের মধ্যে ১৪ জেলায় বজ্রবৃষ্টির আভাস  
সারা দেশে নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে যা জানালো র‍্যাব  
এ বছরই মধ্যে তারেক রহমান প্রধানমন্ত্রী হবেন : দুদু  
জিম্মিদের ফেরত পেয়েও ফিলিস্তিনিদের মুক্তি দিল না ইসরাইল  
জশ ইংলিসের সেঞ্চুরিতে রেকর্ড গড়ে ইংল্যান্ডকে হারাল অস্ট্রেলিয়া
১৫ বছর দলীয় বিবেচনায় অনেক ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা বানানো হয়েছে: উপদেষ্টা ফারুক
দিনাজপুরের বিরামপুরে ৮ জুয়াড়ি গ্রেফতার
চীনে নতুন করোনা ভাইরাসের আবির্ভাব, আবারও মহামারির শঙ্কা
নওগাঁ জেলা প্রেস ক্লাবের সভাপতি রায়হান, সম্পাদক বেলায়েত
শহীদদের শ্রদ্ধা জানাতে ফুল আনতে গিয়ে ধর্ষণের শিকার চতুর্থ শ্রেণির ছাত্রী
বিএনপি ক্ষমতায় গেলে প্রত্যেক শ্রমিকের অধিকার প্রতিষ্ঠা করবে: মঈন খান
জামায়াত দাবি করে ২১ শে ফেব্রুয়ারির সমস্ত কৃতিত্ব তাদের: রনি